শিক্ষা

বিশেষণ ও বিশেষণের শ্রেণিবিভাগ সম্পর্কিত আলোচনা

বিশেষণ ও বিশেষণের শ্রেণিবিভাগ: যে শব্দ দিয়ে বিশেষ্য ও সর্বনামের গুণ, দোষ, সংখ্যা, পরিমাণ, অবস্থা ইত্যাদি বােঝায়, তাকে বিশেষণ বলে। যেমন – সুন্দর ফুল, বাজে কথা, পঞ্চাশ টাকা, হাজার সমস্যা, তাজা মাছ।

বিশেষণের শ্রেণিবিভাগ

কোন কোন শ্রেণির শব্দকে বিশেষিত করে, সেই অনুযায়ী বিশেষণকে আলাদা করা যায়। বিশেষণ শব্দটি কীভাবে গঠিত হয়েছে, সেই বিবেচনায়ও বিশেষণকে ভাগ করা সম্ভব। এছাড়া বাক্যের মধ্যে বিশেষণটির অবস্থান কোথায় তা দিয়েও বিশেষণকে চিহ্নিত করা যায়। এসব বিবেচনায় বিশেষণকে নানা নামে উপস্থাপন করা যেতে পারে।

১. বর্ণবাচক:

যে বিশেষণ দিয়ে রং নির্দেশ কবা হয়, তাকে বর্ণবাচক বিশেষণ বলে। যেমন – নীল আকাশ, সবুজ মাঠ, লাল ফিতা – এখানে নীল, সবুজ বা ললি’ হলাে বর্ণবাচক বিশেষণ।

এই বিভাগ থেকে আরো পড়ুন

২. গুণবাচক:

যে বিশেষণ দিয়ে গুণ বা বৈশিষ্ট্য বােঝায়, তাকে গুণবাচক বিশেষণ বলে। যেমন – চালাক ছেলে, ঠান্ডা পানি – এখানে ‘চালাক’ ও ঠান্ডা হলাে গুণবাচক বিশেষণ।

৩. অবস্থাবাচক:

যে বিশেষণ দিয়ে অবস্থা বােঝায়, তাকে অবস্থাবাচক বিশেষণ বলে। যেমন – চলন্ত ট্রেন, তরল পদার্থ – এখানে চলন্ত ও তরল অবস্থাবাচক বিশেষণ।

৪. ক্রমবাচক:

যে বিশেষণ দিয়ে ক্রমসংখ্যা বােঝায়, তাকে ক্রমবাচক বিশেষণ বলে। যেমন – এক টাকা, আট দিন – এখানে ‘এক’ ও ‘আট’ ক্রমবাচক বিশেষণ।

৫. পূরণবাচক:

যে বিশেষণ দিয়ে পূরণসংখ্যা বােঝায়, তাকে পূরণবাচক বিশেষণ বলে। যেমন – তৃতীয় প্রজন্ম, ৩৪তম অনুষ্ঠান – এখানে তৃতীয় ও ৩৪তম পূরণবাচক বিশেষণ।

৬. পরিমাণবাচক:

যে বিশেষণ দিয়ে পরিমাণ বা আয়তন বােঝায়, তাকে পরিমাণবাচক বিশেষণ বলে। যেমন- আধা কেজি চাল, অনেক লােক – এখানে আধা কেজি’ ও ‘অনেক পরিমাণবাচক বিশেষণ।

৭. উপাদানবচিক:

যে বিশেষণ দিয়ে উপাদান নির্দেশ করে, তাকে উপাদানবাচক বিশেষণ বলে। যেমন- বেলে মাটি, পাথুরে মূর্তি – এখানে ‘বেলে’ ও ‘পাথুরে’ উপাদানবাচক বিশেষণ।

৮. প্রশ্নবাচক:

যে বিশেষণ দিয়ে প্রশ্নবাচকতা নির্দেশিত হয়, তাকে প্রশ্নবাচক বিশেষণ বলে। যেমন – কেমন গানঃ কতক্ষণ সময়? – এখানে কেমন ও কতক্ষণ’ প্রশ্নবাচক বিশেষণ।

৯. নির্দিষ্টতাবাচক:

যে বিশেষণ দিয়ে বিশেষিত শব্দকে নির্দিষ্ট করা হয়, তাকে নির্দিষ্টতাবাচক বিশেষণ বলে। যেমন – এই দিনে, সেই সময় – এখানে এই’ ও ‘সেই নির্দিষ্টতাবাচক বিশেষণ।

১০. ভাববাচক বিশেষণ:

যেসব বিশেষণ বাক্যের অন্তর্গত অন্য বিশেষণকে বিশেষিত করে, সেসব বিশেষণকে ভাববাচক বিশেষণ বলে। যেমন – “খুব ভালাে খবর’ ও ‘গাড়িটা বেশ জোরে চলছে’ – এসব বাক্যে খুব এবং বেশ ভাববাচক বিশেষণ।

১১. বিধেয় বিশেষণ:

বাক্যের বিধেয় অংশে যেসব বিশেষণ বসে, সেসব বিশেষণকে বিধেয় বিশেষণ বলে। যেমন – ‘লােকটা পাগল’ বা ‘এই পুকুরের পানি ঘােলা’ – বাক্য দুটির ‘পাগল’ ও ‘ঘােলা’ বিধেয় বিশেষণ।

অনুশীলনী

সঠিক উত্তরে টিক চিহ্ন দাও।

১. বিশেষণ কার দোষ, গুণ, সংখ্যা, পরিমাণ, অবস্থা ইত্যাদি প্রকাশ করে?
ক. বিশেষ্য ও বিশেষণ
খ. বিশেষ্য ও সর্বনাম
গ. বিশেষণ ও ক্রিয়াবিশেষণ
ঘ. বিশেষণ ও অনুসর্গ

২. ‘সবুজ মাঠের পরে আমাদের গ্রাম’- বাক্যটিতে বিশেষণ পদ কোনটি?
ক. মাঠের
খ. আমাদের
গ. সবুজ
ঘ. পরে

৩. বর্ণবাচক বিশেষণের উদাহরণ কোনটি?
ক. লাল
খ. আধা
গ. পাথুরে
ঘ. এক

৪. ‘চলন্ত ট্রেন থেকে লাফ দিয়াে না’- বাক্যটিতে ‘চলন্ত কোন জাতীয় বিশেষণ?
ক. অবস্থাবাচক
খ. উপাদান বাচক
গ, গুণবাচক
ঘ. ভাববাচক

৫. নিচের কোন উদাহরণে ভাববাচক বিশেষণ রয়েছে?
ক. খুব ভালাে খবর
খ. লােকটা পাগল
গ. আধা কেজি চাল
ঘ. কতক্ষণ সময়

৬. তৃতীয় কোন জাতীয় বিশেষণ?
ক. পূরণবাচক
খ. পরিমাণবাচক
গ, ক্রমবাচক
ঘ. গুণবাচক

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button