টীকা লিখন

সুগন্ধি চাল

সুগন্ধি চাল অন্যতম প্রধান চালের একটি। এটি তৈরি হয় বিশেষ জাতের ধান থেকে যা স্বাদে ও গন্ধে ভরপুর । এটি বাদাম জাতীয় সুগন্ধ এবং স্বাদের জন্য পরিচিত, যা রাসায়নিক যৌগ ২-এসিটিল-১-পাইরোলিনের মাধ্যমে সৃষ্ট হয়। বাংলাদেশে এলাকাভিত্তিক প্রচুর সুগন্ধি ধান চাষ হয়।

দেশি জাতের চাল আকারে ছোট ও অনেকটা গোলাকার হয় । সুগন্ধি ধানের জাত বেশির ভাগই আলোক সংবেদনশীল, দিনের দৈর্ঘ্য কমে গেলে হেমন্ত কালে ফুল ও দানা গঠন হয়। প্রধানত আমন মৌসুমে সুগন্ধি ধানের চাষ করা হয়। এ মৌসুমে প্রায় ১০% জমিতে সুগন্ধি ধানের আবাদ করা হয়।

তবে বাংলাদেশের আবহাওয়া ও পরিবেশে আমন এবং বোরো দুই মৌসুমে এ সুগন্ধি ধান চাষ করা সম্ভব। সুগন্ধি চালের মধ্যে কালিজিরা, কালিজিরা টিপিএল-৬২, চিনিগুঁড়া, চিনি আতপ, চিনি কানাই, বাদশাভোগ, কাটারিভোগ, মদনভোগ, রাঁধুনিপাগল, বাঁশফুল, জটাবাশফুল, বিন্নাফুল, তুলসীমালা, তুলসী আতপ, তুলসী মণি, মধুমালা, খোরমা, সাককুর খোরমা, নুনিয়া, পশুশাইল, দুলাভোগ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে সুগন্ধি ধানের চাষ সবচেয়ে বেশি হয় । এর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে দিনাজপুর জেলা । এছাড়া ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, রংপুর, নওগাঁ এবং রাজশাহী জেলায় সুগন্ধি ধান চাষ হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, দেশে বছরে গড়ে সুগন্ধি চাল উৎপাদন হয় ১৮-২০ লাখ টন।

আর প্রতিবছর গড়ে রপ্তানি হয় ১০,০০০ টন। বর্তমানে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ব্রুনাই, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিশ্বের ১৩০টির বেশি দেশে সুগন্ধি চাল রপ্তানি হয়।

২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে বাংলাদেশ সুগন্ধি চাল রপ্তানি শুরু করে। প্রথম বছর ৬৬৩ টন সুগন্ধি চাল রপ্তানি হয়। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (EPB) সূত্রমতে, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫১ লাখ মার্কিন ডলারের সুগন্ধি চাল রপ্তানি হয় ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button