বিশ্বগ্রাম কী? প্লেজারিজম একটি অনৈতিক কাজ-ব্যাখ্যা কর।

রহিম গ্রাম থেকে ঢাকায় এসেছে। বন্ধু করিম তাকে নিয়ে একটি অফিসে যায়। সেখানে প্রবেশের জন্য আঙ্গুলের ছাপ ব্যবহৃত হয়। এরপর তারা একটি হাসপাতালে যায় এবং সেখানে তারা দেখে স্প্রে করে শৈল্য চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এরপর তারা একটি পার্কে গিয়ে বিশেষ ধরনের চশমা এবং ফ্লেমেট পরে একটি রুমের মধ্যে মজা করে ড্রাইভিং করে।
ক. বিশ্বগ্রাম কী?
খ. প্লেজারিজম একটি অনৈতিক কাজ-ব্যাখ্যা কর।
গ. পার্কে ব্যবহৃত প্রযুক্তির ব্যাখ্যা কর।
ঘ. অফিস ও হাসপাতালে ব্যবহৃত প্রযুক্তি দুটির মধ্যে বহুল ব্যবহৃত প্রযুক্তি কোনটি? ব্যাখ্যা কর ।
ক. বিশ্বগ্রাম হচ্ছে এমন একটি সামাজিক বা সাংস্কৃতিক ব্যবস্থা, যেখানে পৃথিবীর সকল প্রান্তের মানুষই একটি একক সমাজে বসবাস করে এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে তারা সহজেই তাদের চিন্তা-চেতনা, অভিজ্ঞতা, সংস্কৃতি-কৃষ্টি ইত্যাদি বিনিময় করতে পারে ও একে অপরকে সেবা প্রদান করে থাকে ।
খ. প্লেজারিজম হলো অন্যের লেখা বা গবেষণালব্ধ তথ্য নিজের নামে চালিয়ে দেওয়া। আর নৈতিকতা হলো মানুষের কাজকর্ম, আচার- ব্যবহারের সেই মূলনীতি যার ওপর ভিত্তি করে মানুষ একটি কাজের ভালো বা মন্দ দিক বিচার বিশ্লেষণ করতে পারে। অন্যের তথ্য নিজের নামে চালিয়ে দেওয়া একটি ভালো কাজ নয় যা নৈতিকভাবে স্বীকৃত নয়।
বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির অবাধ স্বাধীনতার ফলে প্লেজারিজম একটি বড় ধরনের অনৈতিক কাজে পরিণত হয়েছে। ইন্টারনেটে পৃথিবীর প্রায় সব বিষয়েই কোনো না কোনো তথ্য আছে। এসব তথ্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রকৃত তথ্যদাতার অবদান স্বীকার করা না হলে তা প্লেজারিজমের মধ্যে পড়বে।
গ. পার্কে ব্যবহৃত প্রযুক্তিটি হলো ভার্চুয়াল রিয়েলিটি। প্রকৃত অর্থে বাস্তব নয় কিন্তু বাস্তবের চেতনা উদ্রেককারী বিজ্ঞান নির্ভর কল্পনাকে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বা অনুভবে বাস্তবতা কিংবা কল্পবাস্তবতা বলে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি মূলত কম্পিউটার প্রযুক্তি ও সিমুলেশন তত্ত্বের ওপর প্রতিষ্ঠিত । ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে ত্রি-মাত্রিক ইমেজ তৈরির মাধ্যমে অতি অসম্ভৰ কাজও করা সম্ভব।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি একটি কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ যেখানে ব্যবহারকারী ঐ পরিবেশে মগ্ন হয়, বাস্তবের অনুকরণে সৃষ্ট দৃশ্য উপভোগ করে, সেই সাথে বাস্তবের ন্যায় শ্রবণানুভূতি এবং দৈহিক ও মানসিক ভাবাবেগ, উত্তেজনা অনুভূতি প্রভৃতির অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে মাল্টিসেন্সর হিউম্যান- কম্পিউটার ইন্টার সেন্সসমূহের ব্যবহার অন্তর্ভুক্ত থাকে যা মানব ব্যবহারকারীদেরকে কম্পিউটার সিমুলেটেড অবজেক্ট, স্পেস, কার্যক্রম এবং বিশ্বকে একবারে বাস্তবের মতো অভিজ্ঞতা প্রদানে সক্ষম করে তোলে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হলো সেই প্রযুক্তি যা সৃষ্টি করে ত্রি-মাত্রিক বিশ্ব এবং জীবন্ত দৃশ্য ! এই প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে বাস্তব দৃষ্টিগ্রাহ্য জগৎ তৈরি করা হয় যা উচ্চমাত্রায় তথ্য বিনিময় মাধ্যমের কাজ করে।
ঘ. অফিসে ব্যবহৃত প্রযুক্তিটি হলো বায়োমেট্রিক্স। বায়োমেটিক্স হলো বায়োলজিক্যাল ডেটা মাপা এবং বিশ্লেষণ করার বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি। গ্রিক শব্দ “Bio” (যার অর্থ জীবন) ও “metric” (যার অর্থ পরিমাপ) থেকে উৎপত্তি হয়েছে বায়োমেট্রিক্স (Biometrics)। বায়োমেট্রিক্স হচ্ছে এক ধরনের কৌশল বা প্রযুক্তি যার মাধ্যমে মানুষের শারীরিক কাঠামো, আচার-আচরণ, বৈশিষ্ট্য, গুণাগুণ, ব্যক্তিত্ব প্রভৃতি দ্বারা নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে চিহ্নিত বা শনাক্ত করা যায়।
বায়োমেট্রিক্স এর মূল কাজই হচ্ছে প্রতিটি মানুষের যে অনন্য বৈশিষ্ট্য আছে তাকে খুঁজে বের করা এবং প্রতিটি মানুষকে সেই বৈশিষ্ট্যের আলোকে পৃথক পৃথকভাবে চিহ্নিত করতে সাহায্য করা।
অপরপক্ষে হাসপাতালে ব্যবহৃত প্রযুক্তিটি হলো ক্রায়োসার্জারি। গ্রিক শব্দ cryo এর অর্থ খুব শীতল এবং surgery অর্থ হাতে করা কাজ। ক্রায়োসার্জারি হচ্ছে এমন একটি চিকিৎসা পদ্ধতি যার মাধ্যমে অতি ঠাণ্ডায় অস্বাভাবিক ও অসুস্থ টিস্যু ধ্বংস করা হয়। এক্ষেত্রে তরল নাইট্রোজেন (Liquid nitrogen), কার্বন ডাই-অক্সাইড (Carbon di oxide), আর্গন (Argon) ও ডাই মিথাইল ইথার-প্রোপেন (Dimothy l ether propane) ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়।
অফিস এবং হাসপাতালে ব্যবহৃত প্রযুক্তি দুটির মধ্যে অফিসে ব্যবহৃত প্রযুক্তিটি বহুল ব্যবহৃত হয়। হাসপাতালের ব্যবহৃত প্রযুক্তিটির প্রচলন এখন তেমন ভাবে লক্ষ্য করা যায় না। তবে অধিকাংশ কর্পোরেট অফিসে তাদের চাকুরিজীবিদের হাজিরা, পাসপোর্ট অফিসে বায়োমেট্রিক্স পাসপোর্ট, সিম রেজিস্ট্রেশনের জন্য বায়োমেট্রিক পদ্ধতি বহুলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।