শিক্ষা

ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ের ৪র্থ অধ্যায় : পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক গঠন

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ের ৪র্থ অধ্যায় “পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক গঠন” অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই অধ্যায়টি পরীক্ষা থেকে বারবার আসা প্রশ্নের মধ্যে অন্যতম। পৃথিবীর ভূ-গঠন, আগ্নেয়গিরি, ভূমিকম্প, নদী এবং শিলার বিভিন্ন প্রকার সম্পর্কে ভালো ধারণা পাওয়া যায় এখানে। এই অধ্যায়টি অধ্যয়ন করার মাধ্যমে পরীক্ষার প্রস্তুতি আরও দৃঢ় হতে পারে। এই নিবন্ধে আমরা ৪র্থ অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনী প্রশ্ন (MCQ) এবং তাদের সঠিক উত্তর প্রদান করেছি, যা বিগত বছরের পরীক্ষাগুলোর ভিত্তিতে প্রস্তুত করা হয়েছে।

গুরুত্বপূর্ণ MCQ প্রশ্ন ও উত্তর:

১. দুই বা ততোধিক নদীর মিলনস্থলকে কী বলে?
ক. দোয়ার
খ. নদীগর্ভ
গ. নদী সঙ্গম ✅
ঘ. উপনদী

২. জাপানের ফুজিয়ামা কোন ধরনের আগ্নেয়গিরি?
ক. মৃত
খ. সক্রিয় ✅
গ. শিল্ড
ঘ. সুপ্ত

৩. ১৯৩৫ সালে বিহারে ভয়াবহ ভূমিকম্পের কারণ কী ছিল?
ক. ভূগর্ভস্থ বাষ্প
খ. শিলাচ্যুতি ✅
গ. তাপ বিকিরণ
ঘ. হিমবাহ

৪. অশ্মমণ্ডলের বাইরের আবরণ কোনটি?
ক. ভূপৃষ্ঠ
খ. ভূত্বক ✅
গ. নমনীয় মন্ডল
ঘ. সিমান্তর

আরো পড়ুন : নিরক্ষরতার কারণে কি ঘটে

৫. গুরুমণ্ডল মূলত কী শিলা দ্বারা গঠিত?
ক. চুনাপাথর
খ. ক্যালসাইট
গ. ব্যাসল্ট ✅
ঘ. কেওলিন

৬. এক বা একাধিক মৌলিক পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত হয় কোনটি?
ক. খনিজ ✅
খ. শিলা
গ. হীরা
ঘ. জিপসাম

৭. বেলেপাথর রূপান্তরিত হয়ে কী শিলায় পরিণত হয়?
ক. মার্বেল
খ. কোয়ার্টজাইট ✅
গ. স্লেট
ঘ. শেল

৮. কোনটি থেকে গ্রাফাইট উৎপন্ন হয়?
ক. চুনাপাথর
খ. কয়লা ✅
গ. বেলেপাথর
ঘ. গ্রানাইট

৯. ১৯৫০ সালে আসামে ভূমিকম্প সংঘটনে কোনটি দায়ী ছিল?
ক. শিলাতে ভাঁজের সৃষ্টি
খ. তাপ বিকিরণ
গ. হিমবাহের প্রভাব
ঘ. পাহাড় কাটা ✅

১০. হিমালয় পর্বত কী কারণে সৃষ্টি হয়েছে?
ক. ভূমিকম্প
খ. সুনামি
গ. আগ্নেয়গিরি
ঘ. প্লেট টেকটনিক ✅

১১. ১৯৫০ সালে আসামের ভূমিকম্পে কোন নদীর গতি পরিবর্তিত হয়ে যায়?
ক. যমুনা
খ. দিবং ✅
গ. হুগলি
ঘ. আত্রাই

১২. জাপানি ভাষায় ‘সুনামি’ শব্দের অর্থ কী?
ক. সমুদ্রের গর্জন
খ. নীল পানি
গ. চোখের জল
ঘ. পোতাশ্রয়ের ঢেউ ✅

১৩. সুনামি সৃষ্টি হয় কেন?
ক. আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের জন্য
খ. হিমবাহের কারণে
গ. শিলাচ্যুতির কারণে ✅
ঘ. বাষ্পপ্রবাহের কারণে

১৪. কোন শক্তির প্রভাবে নদী প্রবাহিত হয়?
ক. মাধ্যাকর্ষণ শক্তি ✅
খ. অভিকর্ষ
গ. আগ্নেয়গিরি
ঘ. ভূমিকম্প

১৫. নদীর অধিক বিস্তৃত মোহনাকে কী বলে?
ক. খাড়ি
খ. দোয়াব
গ. নদী সঙ্গম
ঘ. মোহনা ✅

১৬. প্রবহমান দুটি নদীর মধ্যবর্তী ভূমিকে কী বলে?

ক. নদীগর্ভ
খ. খাড়ি
গ. উপত্যকা
ঘ. দোয়াব
ব্যাখ্যা: দুটি প্রবহমান নদীর মাঝের ভূমিকে দোয়াব বলা হয়, যা চাষাবাদ ও বসবাসের জন্য উপযোগী উর্বর অঞ্চল হয়ে থাকে।


১৭. দুই বা ততোধিক নদীর মিলনস্থলকে কী বলে?
ক. নদী সঙ্গম
খ. শাখা
গ. নদীগর্ভ
ঘ. দোয়াব
ব্যাখ্যা: যখন দুটি বা তার বেশি নদী একত্রিত হয়, তখন সেই স্থানকে নদী সঙ্গম বলা হয়, যা জলপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে।


১৮. ঊর্ধ্বগতিতে নদীর প্রধান কাজ কী?
ক. পরিবহন
খ. সঞ্চয়
গ. ক্ষয়সাধন
ঘ. অপসারণ
ব্যাখ্যা: নদীর ঊর্ধ্বগতিতে মূলত ক্ষয়সাধন হয়, যেখানে পানি দ্রুত প্রবাহিত হয়ে পাথর ও মাটি কাটতে সাহায্য করে।


১৯. ভূত্বক কী দ্বারা গঠিত?
ক. শিলা
খ. খনিজ
গ. মাটি
ঘ. বালি
ব্যাখ্যা: পৃথিবীর ভূত্বক বিভিন্ন ধরনের শিলা দ্বারা গঠিত, যা অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়।


২০. শিলা কী দ্বারা গঠিত?
ক. মাটি
খ. খনিজ
গ. আকরিক
ঘ. খনিজমল
ব্যাখ্যা: শিলা হলো এক বা একাধিক খনিজের সংমিশ্রণে গঠিত কঠিন পদার্থ, যা ভূতাত্ত্বিক গঠন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সৃষ্টি হয়।


২১. আগ্নেয় শিলাকে অস্তরীভূত শিলা বলা হয় কেন?

ক. শিলায় স্তর আছে বলে
খ. শিলায় স্তর নেই বলে
গ. শিলা অপেক্ষাকৃত ভারী বলে
ঘ. শিলা স্ফটিকার বলে
ব্যাখ্যা: আগ্নেয় শিলার কোনো স্তর থাকে না, কারণ এটি ম্যাগমা থেকে সরাসরি সৃষ্টি হয় এবং একটানা কঠিন হয়।


২২. আগ্নেয়গিরি বা ভূমিকম্পের ফলে ভূত্বকের দুর্বল ফাটল দিয়ে গলিত লাভা নির্গত হয়ে কী ধরনের শিলার সৃষ্টি করে?
ক. পাললিক
খ. রূপান্তরিত
গ. আগ্নেয়
ঘ. স্তরীভূত
ব্যাখ্যা: আগ্নেয় শিলা হলো সেই শিলা, যা গলিত লাভা বা ম্যাগমা ঠান্ডা হয়ে জমাট বাঁধলে তৈরি হয়।


২৩. জীবাশ্মের উপস্থিতি নিচের কোনটিতে দেখা যায়?
ক. কয়লা
খ. ব্যাসন্ট
গ. কোয়ার্টজ
ঘ. ডোলোমাইট
ব্যাখ্যা: জীবাশ্ম মূলত পাললিক শিলায় পাওয়া যায়, বিশেষ করে কয়লায়, কারণ এটি জীবাশ্মযুক্ত উদ্ভিদ ও প্রাণী উপাদান থেকে গঠিত।


২৪. স্লেট কোন ধরনের শিলা?
ক. আগ্নেয়
খ. পাললিক
গ. রূপান্তরিত
ঘ. কাদা
ব্যাখ্যা: পাললিক শিলা দীর্ঘ সময়ের তাপে ও চাপে পরিবর্তিত হয়ে রূপান্তরিত শিলা তৈরি করে, যার একটি উদাহরণ হলো স্লেট।


২৫. ভূমিকম্পের ফলে বাংলাদেশের কোন নদীর গতিপথ পাল্টে যায়?
ক. কর্ণফুলি
খ. মেঘনা
গ. ব্রহ্মপুত্র
ঘ. পদ্মা
ব্যাখ্যা: ১৭৮৭ সালের ভূমিকম্পের ফলে ব্রহ্মপুত্র নদীর প্রবাহ পরিবর্তিত হয়ে বর্তমান পথ সৃষ্টি হয়।


২৬. কত সালে ভারতের কচ্ছ উপসাগরের উপকূলে প্রায় ৫,০০০ বর্গকিলোমিটার স্থান সমুদ্রগর্ভে নিমজ্জিত হয়?
ক. ১৮৯৯
খ. ১৯১১
গ. ১৯৫০
ঘ. ১৯৬৯
ব্যাখ্যা: ১৯৫০ সালের ভূমিকম্পের ফলে ভারতের কচ্ছ উপসাগরের বিশাল এলাকা সমুদ্রগর্ভে তলিয়ে যায়।


২৭. আগ্নেয় শিলাকে কয় ভাগে ভাগ করা যায়?
ক. দুই
খ. তিন
গ. চার
ঘ. পাঁচ
ব্যাখ্যা: আগ্নেয় শিলা তিন প্রকার— অন্তঃজ, বহিঃজ ও অন্তর্বর্তী শিলা। এগুলো তৈরি হয় ম্যাগমার ঠান্ডা হওয়ার ধরন অনুযায়ী।


২৮. ম্যাগমা ঠান্ডা হয়ে কোন শিলায় পরিণত হয়?
ক. পাললিক
খ. অপত্রায়ন
গ. রূপান্তরিত
ঘ. আগ্নেয়
ব্যাখ্যা: আগ্নেয় শিলা তৈরি হয় যখন ভূগর্ভস্থ ম্যাগমা বা লাভা ঠান্ডা হয়ে শক্ত শিলায় পরিণত হয়।


২৯. বহিঃজ আগ্নেয় শিলার উদাহরণ কোনটি?
ক. গ্রানাইট ও গ্যাব্রো
খ. ডলোরাইট ও ল্যাকোলিথ
গ. ব্যাথোলিথ ও অ্যান্ডসাইট
ঘ. ব্যাসল্ট ও রায়োলাইট
ব্যাখ্যা: ব্যাসল্ট ও রায়োলাইট হলো বহিঃজ আগ্নেয় শিলা, যা লাভার দ্রুত ঠান্ডার ফলে গঠিত হয়।


৩০. কোন দুটি আগ্নেয় শিলা?
ক. গ্রানাইট ও স্টে
খ. ব্যাসল্ট ও গ্রানাইট
গ. কাঁকর ও কাদা
ঘ. কেওলিন ও কয়লা
ব্যাখ্যা: ব্যাসল্ট ও গ্রানাইট হলো আগ্নেয় শিলা, যা গলিত লাভা থেকে সৃষ্টি হয়।


৩১. কোনটি অন্তঃজ আগ্নেয় শিলা?
ক. ব্যাসল্ট
খ. রায়োলাইট
গ. গ্যাব্রো
ঘ. অ্যান্ডিসাইট
ব্যাখ্যা: অন্তঃজ আগ্নেয় শিলা ভূগর্ভে ম্যাগমা ধীরে ঠান্ডা হওয়ার ফলে সৃষ্টি হয়, যেমন গ্যাব্রো।


৩২. ডাইক ও সিল কোন ধরনের শিলার উদাহরণ?
ক. বহিঃজ আগ্নেয়
খ. অন্তঃজ আগ্নেয়
গ. পাললিক
ঘ. রূপান্তরিত
ব্যাখ্যা: অন্তঃজ আগ্নেয় শিলা ভূগর্ভে ম্যাগমা প্রবাহিত হয়ে বিভিন্ন স্তরের মধ্যে প্রবেশ করলে তৈরি হয়।


৩৩. পাললিক শিলা ভূপৃষ্ঠের মোট আয়তনের শতকরা কত ভাগ দখল করে আছে?
ক. ৫
খ. ১৫
গ. ৫০
ঘ. ৭৫
ব্যাখ্যা: পাললিক শিলা ভূ-পৃষ্ঠের প্রায় ৭৫% অঞ্চল দখল করে আছে, যা নদী, হ্রদ ও সমুদ্রের তলদেশে পাওয়া যায়।


৩৪. মহাদেশীয় ভূত্বকের আবরণের শতকরা কত ভাগ পাললিক শিলা?
ক. ৩০
খ. ৫০
গ. ৭৫
ঘ. ৯০
ব্যাখ্যা: মহাদেশীয় ভূত্বকের প্রায় ৭৫% অংশ পাললিক শিলা দ্বারা গঠিত, যা স্তরযুক্তভাবে জমা হয়।


৩৫. পাললিক শিলার আর এক নাম কী?
ক. স্তরীভূত শিলা
খ. প্রাথমিক শিলা
গ. রূপান্তরিত শিলা
ঘ. অন্তঃজ শিলা
ব্যাখ্যা: পাললিক শিলা স্তরযুক্তভাবে গঠিত হয় বলে একে স্তরীভূত শিলা বলা হয়।


৩৬. চুনাপাথর কীভাবে সৃষ্টি হয়েছে?
ক. অত্যধিক চাপে
খ. অত্যধিক তাপে
গ. জৈবিক উপায়ে
ঘ. স্তরে স্তরে জমা হয়ে
ব্যাখ্যা: চুনাপাথর মূলত সামুদ্রিক জীবের খোলস থেকে জমে জমে গঠিত হয়।


৩৭. জীবদেহ থেকে উৎপন্ন পাললিক শিলা কোনটি?
ক. কয়লা ও খনিজ তেল
খ. কর্দম ও বেলে পাথর
গ. কাদাপাথর ও কেওলিন
ঘ. চুনাপাথর ও নিকেল
ব্যাখ্যা: কয়লা ও খনিজ তেল হলো জৈবিক পাললিক শিলা, যা উদ্ভিদ ও প্রাণীর অবশিষ্টাংশ থেকে তৈরি হয়।


৩৮. উদ্ভিদজাত পদার্থ থেকে গঠিত শিলা কোনটি?
ক. খনিজ তেল
খ. চুনাপাথর
গ. বেলেপাথর
ঘ. কয়লা
ব্যাখ্যা: কয়লা হলো উদ্ভিদজাত শিলা, যা লক্ষ লক্ষ বছর ধরে ভূগর্ভে চাপ ও তাপের কারণে গঠিত হয়েছে।

এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো এসএসসি ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত অনুশীলন করলে ভালো ফলাফল নিশ্চিত করা সম্ভব। আরও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও তথ্য পেতে আমাদের সাথেই থাকো! ✅

উপসংহার:

এসএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ের ৪র্থ অধ্যায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রশ্নগুলোর মাধ্যমে পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো পরিষ্কারভাবে বোঝা যায়। নিয়মিত অধ্যায়ন ও অনুশীলন করা হলে, পরীক্ষার সময় সঠিক ও দ্রুত উত্তর দেওয়া সম্ভব হবে। যারা এই অধ্যায়টির বিষয়গুলো সুস্পষ্টভাবে আয়ত্তে রাখবে, তারা নিশ্চিতভাবে ভালো ফলাফল অর্জন করতে পারবে। অতএব, প্রস্তুতিতে আরও মনোযোগী হোন এবং এই গুরুত্বপূর্ণ MCQ গুলোর মাধ্যমে আপনার প্রস্তুতিকে সঠিক পথে নিয়ে যান।

এই বিভাগ থেকে আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button