মধ্যপ্রাচ্য

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্মমতা: ৮০ বছর বয়সী ফিলিস্তিনিকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার

গাজায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ৮০ বছর বয়সী এক ফিলিস্তিনিকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে বলে একটি অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। ‘দ্য হটেস্ট প্লেস ইন হেল’ নামের ইসরায়েলি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা যায়, বৃদ্ধ ফিলিস্তিনির গলায় বিস্ফোরক বেঁধে তাঁকে সেনাদের অগ্রভাগে রেখে বিভিন্ন বাড়িতে প্রবেশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। যদি তিনি আদেশ না মানতেন, তাহলে বিস্ফোরক বিস্ফোরণের মাধ্যমে তাঁকে হত্যা করার হুমকি দেওয়া হয়।

অনুসন্ধান অনুযায়ী, ২০২৩ সালের মে মাসে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নাহাল ব্রিগেডের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এই ভয়ংকর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন। বৃদ্ধ ফিলিস্তিনিকে আট ঘণ্টা ধরে মানবঢাল হিসেবে কাজ করতে বাধ্য করা হয়। পরে তাঁকে ও তাঁর স্ত্রীকে গাজা সিটির জেইতুন এলাকা থেকে পালিয়ে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

তবে, পথিমধ্যে আরেকটি ইসরায়েলি সেনা ব্যাটালিয়ন তাঁদের দেখতে পেয়ে গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান এই দম্পতি।

প্রথমে ইসরায়েলি সেনারা তাঁদের নিজ বাড়িতে খুঁজে পায়। তাঁরা আরবিভাষী সেনাদের জানান যে, বয়সজনিত কারণে চলাফেরায় সমস্যা থাকায় তাঁরা দক্ষিণ গাজার দিকে পালাতে পারছেন না। এর পরই সেনারা বৃদ্ধকে সামনে রেখে অগ্রসর হওয়ার নির্দেশ দেয়, আর তাঁর স্ত্রীকে ঘরে আটকে রাখা হয়।

আরো পড়ুন  : দক্ষিণ কোরিয়ার অভিনেত্রী কিম সায়ে-রন এর মৃত দেহ নিজ বাড়িতে পাওয়া গেছে

এক ইসরায়েলি সেনার ভাষ্যমতে, ওই সময় সেনা কমান্ডার এই ফিলিস্তিনি দম্পতিকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেন। মূল উদ্দেশ্য ছিল, বাড়িগুলোর ভেতরে কোনো বিস্ফোরক বা যোদ্ধা থাকলে ইসরায়েলি সেনাদের ক্ষতি এড়ানো এবং পরিবর্তে ফিলিস্তিনিরাই যাতে আক্রান্ত হয়।

বৃদ্ধ ফিলিস্তিনিকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়, যদি তিনি সেনাদের আদেশ না মানেন, তাহলে তাঁর গলায় বাঁধা বিস্ফোরকের রশি টেনে তাঁকে হত্যা করা হবে। আট ঘণ্টার পর তাঁকে ও তাঁর স্ত্রীকে কথিত মানবিক অঞ্চলের দিকে যেতে বলা হয়। তবে সংশ্লিষ্ট ইসরায়েলি সেনা ব্যাটালিয়নকে এ সম্পর্কে কোনো তথ্য জানানো হয়নি।

ফলস্বরূপ, যখন এই দম্পতি প্রায় ১০০ মিটার পথ অতিক্রম করেন, তখন আরেকটি ইসরায়েলি ব্যাটালিয়ন তাঁদের গুলি করে হত্যা করে। এই নির্মম ঘটনার মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হলো, ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে।

Back to top button