• হোম
  • একাডেমি
  • সাধারণ
  • অষ্টম শ্রেণি
  • বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ

পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।

Back

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ

৭ই মার্চের ভাষণ ও স্বাধীনতার প্রস্তুতি

বঙ্গবন্ধু তার ৭ই মার্চের ভাষণে বিজয়ী দল হিসেবে আওয়ামী লীগের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশ পরিচালনার ঘোষণা দেন। জনগণের প্রতি পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে সর্বাত্মক অসহযোগিতার নির্দেশ দিয়ে তিনি তাঁর ভাষণে কোর্ট-কাচারি, অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন। আমরা জানি একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র পরিচালিত হয় জনগণের ট্যাক্স বা খাজনায়। তিনি তাঁর ভাষণে আরও বলেন, "যে পর্যন্ত আমার এই দেশের মুক্তি না হচ্ছে, ততদিন খাজনা-ট্যাক্স বন্ধ করে দেওয়া হলো।"

বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ১লা মার্চ থেকে ইয়াহিয়া খান ও তার সহযোগী জুলফিকার আলী ভুট্টোর কর্মকাণ্ড দেখে বুঝেছিলেন এরা নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে না। তাই তিনি বলেন "প্রত্যেক গ্রামে, প্রত্যেক মহল্লায়, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলো এবং তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো।" বক্তৃতার আর এক জায়গায় তিনি বলেন, "প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে।" বঙ্গবন্ধুর ভাষণের গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে বাঙালিকে স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত রাখা। বক্তৃতায় শেষ অংশে "এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম" ঘোষণা দিয়ে তিনি স্পষ্টভাবেই স্বাধীনতার ডাক দেন। বক্তৃতায় বঙ্গবন্ধু নিয়মতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের পথ উন্মুক্ত করতে ইয়াহিয়া ঘোষিত ২৫শে মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে যোগদান করার ব্যাপারে ৪টি পূর্বশর্ত ঘোষণা করেন।

১. সামরিক আইন প্রত্যাহার

২. নির্বাচিত গণপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর

৩. সেনাবাহিনীর গণহত্যার তদন্ত

৪. সৈন্যদের ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়া

এ দাবিগুলো মেনে না নেওয়া পর্যন্ত তিনি অসহযোগ আন্দোলন অব্যাহত রাখার নির্দেশ দেন। ইয়াহিয়ার নেতৃত্বে পাকিস্তানের সামরিক শাসকরা এই গণতান্ত্রিক এ দাবিগুলো কখনো মেনে নেয়নি। ফলে বাঙালির আন্দোলন বেগবান হয়ে ওঠে।

সংকট উপলব্ধি করে ইয়াহিয়া ১৫ই মার্চ ঢাকা সফরে আসেন এবং বঙ্গবন্ধুর সাথে আলোচনার প্রস্তাব দেন। ১৬ই মার্চ থেকে আলোচনা শুরু হয়। ২২শে মার্চ জুলফিকার আলী ভুট্টো আলোচনায় অংশ নেন। আলোচনা ব্যর্থ হলে বাঙালি নিধনের নির্দেশনা দিয়ে ২৫শে মার্চ রাতে ইয়াহিয়া খান ঢাকা ত্যাগ করেন আর ওই দিনই মধ্যরাতে তারা বাঙালির উপর চরম আঘাত হানে। ওই কালরাতে পাকিস্তানি সেনারা অসংখ্য বাঙালিকে নির্বিচারে হত্যা করে।

সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ