• হোম
  • একাডেমি
  • সাধারণ
  • অষ্টম শ্রেণি
  • বাংলাদেশের বিভিন্ন নৃগোষ্ঠী
বাংলাদেশের বিভিন্ন নৃগোষ্ঠী

পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।

Back

বাংলাদেশের বিভিন্ন নৃগোষ্ঠী

মারমা

বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলের ভিন্ন নৃগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে জনসংখ্যার দিক থেকে মারমাদের অবস্থান দ্বিতীয়। মারমা নৃগোষ্ঠীর অধিকাংশই রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলায় বাস করে। 'মারমা' শব্দটি 'ড্রাইমা' শব্দ থেকে উদ্ভূত।

সামাজিক জীবন: পাবর্ত্য অঞ্চলে বোমাং সার্কেলের অন্তর্ভূক্ত মারমা সমাজের প্রধান হলেন বোমাং চিফ বা বোমাং রাজা।

প্রত্যেক মৌজায় কতগুলো গ্রাম রয়েছে। গ্রামবাসী গ্রামের প্রধান মনোনীত করে। মারমারা গ্রামকে তাঁদের ভাষায় 'রোয়া' এবং গ্রামের প্রধানকে 'রোয়াজা' বলে।
মারমা পরিবারে পিতার স্থান সর্বোচ্চ হলেও পারিবারিক কাজকর্মে মাতা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। মারমা সমাজে পারিবারিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে মেয়েদের মতামতকে বেশ গুরুত্ব দেওয়া হয়।

অর্থনৈতিক জীবন: মারমাদের জীবিকার প্রধান উপায় হচ্ছে কৃষি। তাঁদের চাষাবাদের প্রধান পদ্ধতিকে জুম বলা হয়।

ধর্মীয় জীবন: মারমারা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। তাঁরা এ ধর্মেরই অনুষ্ঠানাদি উদযাপন করে। প্রায় প্রত্যেকটি মারমা গ্রামে বৌদ্ধবিহার 'কিয়াং' এবং বৌদ্ধ ভিক্ষু ভান্তে'দের দেখা যায়। মারমারা বৈশাখী পূর্ণিমা, আশ্বিনী পূর্ণিমা, কার্তিকী পূর্ণিমা, মাঘী পূর্ণিমা ইত্যাদি দিনগুলোতে বৌদ্ধমন্দিরে গিয়ে ফুল দিয়ে এবং প্রদীপ জ্বালিয়ে বুদ্ধের পূজা করে। কাপ্তাইয়ের অনতিদূরে চন্দ্রঘোনার কাছে কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ তীরে অবস্থিত 'চিত্তরম বৌদ্ধবিহার' মারমাদের নির্মিত একটি খুবই সুন্দর বৌদ্ধমন্দির। প্রতি বছর বহু বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী সেখানে বুদ্ধ প্রণাম ও পূজা করতে যায়।
সাংস্কৃতিক জীবন: মারমাদের ঘরবাড়ি বাঁশ, কাঠ ও ছনের তৈরি যা কয়েকটি খুঁটির উপর মাটি থেকে ৬-৭ ফুট উপরে নির্মিত হয়।

মারমা পুরুষেরা মাথায় 'গবং' (পাগড়ি বিশেষ), গায়ে জামা ও লুঙ্গি পরে। নারীরা গায়ে যে ব্লাউজ পরে তার নাম 'আজি', এছাড়াও তাঁরা 'থামি' পরে। কাপড় বোনার কাজে মারমা নারীরা দক্ষ। তাঁদের মধ্যে হস্তচালিত ও কোমর উভয় ধরনের তাঁতের ব্যবহার রয়েছে।

মারমারা পার্বত্য অঞ্চলের অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মতো ভাতের সাথে মাছ-মাংস ও নানা ধরনের শাকসবজি খায়।

মারমারা পুরাতন বর্ষকে বিদায় ও নববর্ষকে বরণ উপলক্ষে সাংগ্রাই উৎসব উদযাপন করে। এ সময় তাঁরা 'পানিখেলা' বা 'জলোৎসব'-এ মেতে উঠে। এই উৎসবে পানিখেলার নির্দিষ্ট স্থানে নৌকা বা বড়ো পাত্রে পানি রাখা হয়। এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে এই উৎসব বেশ আনন্দ-উদ্দীপনার সাথে উদযাপিত হয়ে থাকে।

সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ