- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- নবম-দশম শ্রেণি
- প্রাত্যহিক জীবনে তড়িৎ
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
প্রাত্যহিক জীবনে তড়িৎ
তড়িৎ বিশ্লেষণ (Electrolysis)
কোনো দ্রবণের মধ্যে বিদ্যুৎ বা তড়িৎ প্রবাহিত করে এর অণুগুলোকে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক অংশে বিভক্ত করার পদ্ধতিকে তড়িৎ বিশ্লেষণ বলে। তড়িৎ প্রবাহ করে দ্রবণের যে দ্রবটিকে দুই ভাগে বিভক্ত বা বিশ্লেষণ করা হয়, তাকে তড়িৎ দ্রব বা তড়িৎ বিশ্লেষ্য পদার্থ বলে। আমরা আগে দেখেছি যে পরিবাহকের দুই পাশে ব্যাটারি সেল দিয়ে বিভব পার্থক্য তৈরি করলে পরিবাহকের মুক্ত ইলেকট্রনগুলো প্রবাহিত হয়, যেটাকে আমরা বিদ্যুৎ বা তড়িৎ প্রবাহ বলি। তড়িৎ বিশ্লেষণের সময় দ্রবণের ভেতর দিয়ে কীভাবে বিদ্যুৎ প্রবাহিত করা হবে? তড়িৎ বিশ্লেষণের বা ইলেকট্রোলাইসিসের সময় তড়িৎ দ্রবটি ধনাত্মক এবং ঋণাত্মক আয়নে বিভক্ত হয় এবং ঋণাত্মক আয়নের প্রবাহ দিয়ে দ্রবণে বিদ্যুৎ প্রবাহ করা হয়। সকল এসিড, ক্ষার, কয়েকটি নিরপেক্ষ লবণ, এসিড মেশানো পানি ইত্যাদি তড়িৎ দ্রব বা তড়িৎ বিশ্লেষ্য পদার্থ। যেমন- H₂SO₄, HNO3, CuSO4, AgNO3, NaOH ইত্যাদি।
আমরা জানি, স্বাভাবিক অবস্থায় পরমাণু বা অণুতে ইলেকট্রনের সংখ্যা নিউক্লিয়াসে অবস্থিত প্রোটনের সংখ্যার সমান হয়ে থাকে। কোনো অণু, পরমাণু বা যৌগমূলকে যদি স্বাভাবিক সংখ্যার ইলেকট্রনের চেয়ে কম বা বেশি ইলেকট্রন থাকে তাহলে তাকে আয়ন বলে। ইলেকট্রনের সংখ্যা স্বাভাবিকের চেয়ে কম হলে তাকে বলে ধনাত্মক আয়ন। আর যদি ইলেকট্রনের সংখ্যা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয় তাহলে তাকে বলে ঋণাত্মক আয়ন।
তড়িৎ বিশ্লেষণের সময় তড়িৎ দ্রব ধনাত্মক এবং ঋণাত্মক আয়নে ভাগ হয়ে যায়। একটু আগে উল্লেখ করা তড়িৎ দ্রবগুলো নিচে দেখানো উপায়ে আয়নে বিভক্ত হয়ে যাবে:
বিখ্যাত বিজ্ঞানী আরিনিয়াস (Arrhenius) ১৮৮১ সালে তড়িৎ বিশ্লেষণের ব্যাখ্যা দেন। তিনি দেখিয়েছিলেন এসিড, ক্ষার বা লবণজাতীয় যৌগিক পদার্থকে তরলে দ্রবীভূত করলে সেগুলো আয়নায়িত হয়ে সমপরিমাণ ধনাত্মক ও ঋণাত্মক আধান বা চার্জযুক্ত আয়নে ভাগ হয়ে যায়। আধানযুক্ত অবস্থায় আয়নগুলোর রাসায়নিক ধর্ম প্রকাশ পায় না। তবে চার্জহীন বা নিষ্ক্রিয় হলে এরা আবার রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশ নিতে পারে। আয়নগুলো তরলের মধ্যে বিক্ষিপ্তভাবে ঘুরে বেড়ায়। পরিবাহকে যেরকম ইলেকট্রন বিদ্যুৎ প্রবাহ করতে পারে, দ্রবণে এই আয়নগুলো সেরকম বিদ্যুৎ প্রবাহ করতে পারে। এখন এই তরলের মাঝে দুটি পরিবাহী দণ্ড বা তড়িৎদ্বার রেখে তরলের ভেতর যদি বিদ্যুৎ প্রবাহ করা হয় তাহলে ঋণাত্মক আয়নগুলো অ্যানোড ও ধনাত্মক আয়নগুলো ক্যাথোডের দিকে প্রবাহিত হতে থাকে। দুটি পরিবাহী দণ্ড বা ইলেকট্রোডের মধ্যে আয়নগুলোর এই বিপরীতমুখী প্রবাহের জন্য তড়িৎ প্রবাহ সৃষ্টি হয়।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ