সাহিত্যিক ও অনুবাদক শেখ আবদুল হাকিম

সাহিত্যিক ও অনুবাদক শেখ আবদুল হাকিম: রহস্য রোমাঞ্চ সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র
বাংলাদেশের জনপ্রিয় রহস্য ও রোমাঞ্চ সাহিত্যের জগতে এক বিশিষ্ট নাম শেখ আবদুল হাকিম। ২৮ আগস্ট ২০২১ সালে তিনি ৭৫ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর সাহিত্যকর্ম বাংলা সাহিত্যের পাঠকদের জন্য এক অমূল্য সম্পদ।
জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন
শেখ আবদুল হাকিম ১৯৪৬ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। দেশভাগের পর তিনি সপরিবারে বাংলাদেশে চলে আসেন এবং পরবর্তীতে সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করেন।
সাহিত্যিক জীবন ও সেবা প্রকাশনীর সঙ্গে যুক্ততা
ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে তিনি দেশের জনপ্রিয় প্রকাশনা সংস্থা সেবা প্রকাশনীর সঙ্গে যুক্ত হন এবং পেশাদার লেখক হিসেবে কাজ শুরু করেন। তিনি ছিলেন ‘কুয়াশা’ ও ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের অন্যতম প্রধান লেখক।
- কুয়াশা সিরিজ: ৫০টি বই
- মাসুদ রানা সিরিজ: ২৬০টি বই
তাঁর লেখা রহস্য ও রোমাঞ্চ গ্রন্থগুলো পাঠকদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।
প্রকাশিত জনপ্রিয় গ্রন্থসমূহ
শেখ আবদুল হাকিমের লেখা কিছু উল্লেখযোগ্য রহস্য ও রোমাঞ্চ গ্রন্থ হলো—
- সোনালী পোকা
- জিপসি জাদু
- অধরা কুমারী
- টেকনাফ ফর্মুলা
- সোনালী বুলেট
- স্মৃতিচোর
- জুতোর ভেতর কার পা?
- জল দাও জল
- তিতলির অজানা
- তাহলে কে?
উল্লেখযোগ্য অনুবাদ সাহিত্য
তিনি শুধু মৌলিক গল্প-উপন্যাস লেখেননি, বরং বিশ্বসাহিত্যের কিছু অসাধারণ গ্রন্থ বাংলায় অনুবাদ করেছেন। তাঁর অনুবাদকর্মের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু বই—
- গডফাদার (মারিও পুজো)
- দস্যু রবিন হুড (হাওয়ার্ড পাইল)
- নুরেমবার্গ: ইভিল অন ট্রায়াল (জেমস ওয়েন)
- গালিভার্স ট্রাভেলস (জোনাথন সুইফট)
- আততায়ী (ভিক্টর হুগোর The Man Who Laughs)
উপসংহার
শেখ আবদুল হাকিম ছিলেন রহস্য, রোমাঞ্চ ও গোয়েন্দা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাঁর মৌলিক ও অনুবাদ সাহিত্য বাংলা ভাষার পাঠকদের জন্য অমূল্য সম্পদ। তিনি চলে গেলেও তাঁর সাহিত্যকর্ম চিরকাল পাঠকদের মনে বেঁচে থাকবে।