• হোম
  • একাডেমি
  • সাধারণ
  • অষ্টম শ্রেণি
  • বাংলাদেশ: রাষ্ট্র ও সরকার ব্যবস্থা
বাংলাদেশ: রাষ্ট্র ও সরকার ব্যবস্থা

পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।

Back

বাংলাদেশ: রাষ্ট্র ও সরকার ব্যবস্থা

স্থানীয় সরকার কাঠামো ও কার্যাবলি

সাধারণভাবে স্থানীয় সরকার হলো স্থানীয় পর্যায়ে শাসন ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার ব্যবস্থা। স্থানীয় সমস্যা স্থানীয়ভাবে সমাধানের লক্ষ্যেই মূলত স্থানীয় সরকার কাজ করে।

বর্তমানে রাষ্ট্রের আয়তন বড়ো ও লোকসংখ্যা বেশি হওয়ায় কেন্দ্রে বসে সরকারের পক্ষে দেশের সকল অঞ্চলের সকল সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই স্থানীয় পর্যায়ের সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানের জন্য স্থানীয় পর্যায়ে এ ধরনের শাসনব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। এতে কেন্দ্রীয় সরকারের উপর চাপ কমে স্থানীয় সমস্যার সমাধানও সহজ হয়। এটি বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

বাংলাদেশে গ্রাম ও শহরাঞ্চল উভয় ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার কাঠামো বিকশিত হয়েছে। পাশের ছকে উভয় অঞ্চলের স্থানীয় সরকারের কাঠামো দেখানো হলো।

বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে তিন স্তরবিশিষ্ট স্থানীয় সরকার কাঠামো চালু আছে। এর মধ্যে সর্বনিম্ন স্তর হলো ইউনিয়ন পরিষদ। এছাড়া উপজেলা পর্যায়ে আছে উপজেলা পরিষদ এবং জেলা পর্যায়ে আছে জেলা পরিষদ।

শহরাঞ্চলের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা দুই ধরনের-পৌরসভা এবং সিটি কর্পোরেশন। আটটি (০৮টি) বিভাগীয় শহর ছাড়াও কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে সিটি কর্পোরেশন রয়েছে এবং পৌরসভাগুলো অন্যান্য শহর এলাকায় স্থানীয় সরকারের দায়িত্ব পালন করে।

স্থানীয় সরকারের গঠন

একমাত্র জেলা পরিষদ ছাড়া স্থানীয় সরকারের অন্য সকল কাঠামোর নেতৃত্বই নির্বাচিত হন জনগণের সরাসরি ভোটে। এগুলোর প্রতিটিরই কার্যকাল পাঁচ বছর।

ইউনিয়ন পরিষদ স্থানীয় সরকারের প্রাথমিক স্তর হলো ইউনিয়ন পরিষদ। দেশে বর্তমানে ৪,৫৭৮টি ইউনিয়ন পরিষদ আছে। কয়েকটি গ্রাম নিয়ে একেকটি ইউনিয়ন গঠিত। ইউনিয়ন পরিষদ হলো গ্রামীণ এলাকার স্থানীয় সরকার। গ্রামীণ সমস্যা দূরীকরণ ও স্থানীয় পর্যায়ে নেতৃত্বের বিকাশ ও গণসচেতনতা বৃদ্ধি এর মূল লক্ষ্য। নির্বাচিত ১জন চেয়ারম্যান, ৯টি ওয়ার্ড থেকে ৯ জন সদস্য ও সংরক্ষিত আসনে তিন জন মহিলা সদস্যসহ সর্বমোট ১৩জন নিয়ে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ গঠিত। (উৎস: স্থানীয় সরকার বিভাগ)

উপজেলা পরিষদ: কয়েকটি ইউনিয়ন নিয়ে একটি উপজেলা গঠিত হয়। একজন চেয়ারম্যান, একজন ভাইস চেয়ারম্যান, একজন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এবং উপজেলার অন্তর্ভুক্ত সব ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভার চেয়ারম্যান এবং সকল মহিলা সদস্যের এক তৃতীয়াংশকে নিয়ে উপজেলা পরিষদ গঠিত হয়। দেশে বর্তমানে মোট উপজেলা পরিষদের সংখ্যা ৪৯৫টি।

জেলা পরিষদ কয়েকটি উপজেলা নিয়ে একটি জেলা গঠিত। দেশে ৬৪টি জেলা পরিষদের মধ্যে ৬১টি স্থানীয় সরকার বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে আছে। খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙামাটি এই তিনটি জেলা পরিষদ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে। একজন চেয়ারম্যান এবং ২০জন সদস্য নিয়ে জেলা পরিষদ গঠিত। ২০জন সদস্যের মধ্যে পাঁচজন হবেন মহিলা।

চেয়ারম্যানসহ সকলে পরোক্ষভাবে নির্বাচিত হন। জেলার অন্তর্গত সব মেয়র ও কাউন্সিলর, সব উপজেলার চেয়ারম্যান, সব পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর এবং সব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ তাঁদের নির্বাচিত করেন। জেলার অন্তর্ভুক্ত সংসদ সদস্যগণ হবেন জেলা পরিষদের উপদেষ্টা।

পৌরসভা: শহর এলাকার স্থানীয় সরকার হিসেবে পৌরসভা গঠিত। বর্তমানে দেশে ৩৩১ টি পৌরসভা আছে। একজন মেয়র, প্রতি ওয়ার্ড থেকে একজন করে কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলরদের নিয়ে পৌরসভা গঠিত হয়। আয়তন ও জনসংখ্যার তারতম্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন পৌরসভার সদস্য সংখ্যা কম বা বেশি হতে পারে।

সিটি কর্পোরেশন: বাংলাদেশে ১২টি সিটি কর্পোরেশন আছে। ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশাল, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, রংপুর, গাজীপুর এবং ময়মনসিংহ। প্রতিটিতে আছে একটি করে সিটি কর্পোরেশন। সিটি কর্পোরেশনের প্রধানকে বলা হয় মেয়র। মেয়রের কাজে সাহায্যের জন্য আছে কাউন্সিলর। সিটি কর্পোরেশনের আয়তনের ভিত্তিতে কাউন্সিলরদের সংখ্যা কম-বেশি হতে পারে।

সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ