• হোম
  • একাডেমি
  • সাধারণ
  • অষ্টম শ্রেণি
  • বাংলাদেশের সামাজিক সমস্যা
বাংলাদেশের সামাজিক সমস্যা

পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।

Back

বাংলাদেশের সামাজিক সমস্যা

কিশোর অপরাধের প্রভাব ও প্রতিরোধ

বাংলাদেশে কিশোররা সাধারণত যেসব অপরাধ করে তার মধ্যে রয়েছে চুরি, পকেটমার, বিনা টিকিটে রেলভ্রমণ; মানুষ, দোকানপাট, বাড়িঘর ও যানবাহনের উপর হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও অন্যান্য নাশকতামূলক কাজ এবং মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা প্রভৃতি। এছাড়াও কিশোর অপরাধীরা অনেক সময় দলবেঁধে ডাকাতি এবং ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করে থাকে। কখনো কখনো তারা খুন পর্যন্ত করে। যে পরিবারে এ রকম কিশোর অপরাধী আছে তাদের পারিবারিক শান্তি বিনষ্ট হয়।

কখনো কখনো বাংলাদেশের শহর ও গ্রামাঞ্চল সর্বত্রই কিশোর অপরাধীদের দ্বারা মেয়েদের যৌন নিপীড়নের ঘটনা শোনা যায়। তারা মেয়েদের প্রতি অশ্লীল ও অশোভন উক্তি করে। এদের কারণে মেয়েরা নিরাপদে স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় যাতায়াত করতে পারে না। বখাটে কিশোরদের অন্যায় প্রস্তাবে সাড়া না দিলে তারা মেয়েদের অপহরণ, শারীরিক নির্যাতন বা তাদের উপর এসিড নিক্ষেপ করে। প্রতিবাদ করতে গিয়ে অনেক সময় অভিভাবকরাও তাদের অপরাধীদের আক্রমণের শিকার হয়। এসব অপরাধীদের উৎপাতে কখনো কখনো ছাত্রীদের পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়। কিশোর অপরাধীরা অনেক সময় মাদকাসক্তি ও অন্যান্য খারাপ অভ্যাসের সঙ্গে জড়িত থাকে।

প্রতিরোধের উপায়

বাংলাদেশে কিশোর অপরাধপ্রবণতা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। এ সমস্যার প্রতিরোধে নিম্নোক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন:

অভিভাবক সচেতনতা ও দায়িত্ব

কিশোরদের অপরাধ প্রবণতার ধরন, তার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে মাতাপিতা ও পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠরা যদি সচেতন থাকেন তবে তাঁরা সহজেই কিশোরদের অপরাধ থেকে দূরে রাখতে বা সে পথ থেকে সরিয়ে আনতে পারবেন। এজন্য পরিবারে সন্তানদের সুস্থ মানসিক বিকাশের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। তাদের চলাফেরার উপর নজর রাখতে হবে। তাদের বন্ধু ও সাথিদের সম্পর্কে খোঁজখবর রাখতে হবে। সন্তানদের সঙ্গে সহজ ও স্বাভাবিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।

আর্থ-সামাজিক কর্মসূচি

কিশোরদের অপরাধপ্রবণতার একটি প্রধান কারণ পরিবারের দারিদ্র্য। সেজন্য অভিভাবকদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি ও পরিবারের আর্থিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে হবে। এ ব্যাপারে সরকার এবং বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাকে এগিয়ে আসতে হবে।

শিক্ষার সুযোগ

সকল শিশু-কিশোরকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার আওতায় আনতে হবে। এতে তারা একদিকে শিক্ষার প্রভাবে সুস্থ ও সুন্দর জীবন-যাপনে আগ্রহী হবে। অন্যদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ তাদেরকে অপরাধ থেকে দূরে রাখবে।

চিত্তবিনোদন

শিশু-কিশোরদের মানসিক বিকাশের জন্য পাড়া ও মহল্লায় পাঠাগার, ব্যায়ামাগার, নাচ, গান, নাটক, আবৃত্তি প্রভৃতির আয়োজন করা প্রয়োজন। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও আবাসিক এলাকায় খেলার মাঠ থাকতে হবে।

উল্লিখিত কার্যক্রম ছাড়াও শিশু-কিশোরদের টেলিভিশনে ও অন্যান্য মাধ্যমে তাদেরকে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও তথ্যমূলক এবং সুস্থ আনন্দদায়ক দেশি ও বিদেশি ছায়াছবি দেখানোর ব্যবস্থা করতে হবে। শিশুশ্রম নিষিদ্ধ করতে হবে। শিশু-কিশোররা যেন খারাপ সংস্পর্শে না পড়ে সে ব্যাপারে তাদের নিজেদের যেমন সতর্ক থাকতে হবে, তেমনি অভিভাবকদেরও এ ব্যাপারে সব সময় সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ