- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- অষ্টম শ্রেণি
- বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ
বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে শিল্পের অবদান
আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে শিল্প: বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থায় অত্যন্ত দ্রুত শিল্পায়ন ঘটছে। নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার ঘটিয়ে মানুষ বিভিন্ন ধরনের পণ্য-সামগ্রী তৈরি করছে। সেইসব পণ্য নিয়ে তারা ব্যবসা-বাণিজ্য করছে, জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছে। শিল্পের বিকাশে মানুষের উদ্যোগ, পুঁজি এবং গবেষণা ও অভিজ্ঞতাই প্রধান ভূমিকা পালন করে। এখন সকল রাষ্ট্রই দ্রুত শিল্পায়ন ঘটানোর জন্যে উদার নীতিমালা প্রণয়ন করছে। দেশি বিদেশি শিল্পোদ্যোক্তাদের নিজ দেশে পুঁজি বিনিয়োগ ও শিল্প প্রতিষ্ঠার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। এর ফলে অর্থনীতিতে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটছে। অর্থনৈতিক উন্নতিই দেশের জনগণের অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে সহায়তা করে।
সে কারণে দ্রুত দেশের আর্থ-সামাজিক পরিবর্তন বা উন্নতি ঘটাতে হলে শিল্প বিকাশের কোনো বিকল্প নেই। এমন কি কৃষি বা সেবা খাতেও উন্নতি করতে হলে শিল্পের বিকাশ ঘটাতে হবে। সেইসব খাতও এখন যন্ত্রপ্রযুক্তির ব্যবহারে ব্যাপক উন্নতি লাভ করছে। ফলে কৃষকের আর্থ-সামাজিক অবস্থাও এখন শিল্পায়নের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত হয়ে পড়েছে। শিল্প ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে এখন কৃষক অধিক ফসল ফলাচ্ছে, নিজের চাহিদাপূরণ করেও বাজারে ফসল বিক্রি করে নিজের অন্যান্য চাহিদা পূরণ করতে পারছে। ফলে সামাজিকভাবে কৃষকের জীবনযাত্রা এখন আগের চেয়ে অনেক নিরাপদ হয়ে উঠছে।
বাংলাদেশে শিল্প বিকাশের প্রভাব বাংলাদেশে জনসংখ্যার চাপ অত্যন্ত বেশি। সব মানুষকে একমাত্র কৃষি স্বচ্ছলতা দিতে সক্ষম নয়। এ অবস্থায় কল-কারখানায় কাজ করে শ্রমজীবীদের পরিবারের দারিদ্র্য ঘুচানো সম্ভব হচ্ছে। অনেকে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করে ভালো বেতনে চাকরি করছে। এভাবে কৃষির বাইরেও অসংখ্য মানুষের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করার সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। বাংলাদেশে একমাত্র গার্মেন্টস শিল্পের সঙ্গেই এখন প্রায় ৪০ লক্ষ মানুেষ জড়িত আছে। এদের মধ্যে বিপুল সংখ্যক হলো নারী-যারা নিজেদের দারিদ্র্য ঘোচাতে গার্মেন্টসে যুক্ত হয়েছে। তারা স্বাবলম্বী মানুষ হিসেবে গড়ে উঠেছে।
অনেকেই কাজের পাশাপাশি লেখাপড়া ও প্রশিক্ষণ নিয়ে অধিকতর দক্ষতা অর্জন করছে। নিজেদের সন্তানদের তারা লেখাপড়ার মাধ্যমে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। তবে তাদের অত্যন্ত কম বেতন, অনিরাপদ কর্মপরিবেশ ও অন্যান্য সুবিধার অভাব তাদেরকে প্রান্তিক করে রাখে।
শুধু গার্মেন্টের নয়, অন্যান্য খাতেও গ্রাম থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ তাদের জীবিকার সংস্থান করেছে। এভাবে শিল্প ও প্রযুক্তির সংস্পর্শে এসে তারা যেমন একদিকে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন করার চেষ্টা করছে, অন্যদিকে সামাজিকভাবেও তারা নতুন আবাসন, শিক্ষা, চিকিৎসা, জ্ঞান- বিজ্ঞানের সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে। এতে দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে। শহরে অতি দরিদ্রের চেয়ে নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। চাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষকতা, আইন-ব্যবসাসহ নতুন নতুন পেশায় মানুষ যুক্ত হচ্ছে। মানুষ এভাবে শিল্প ও প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত হয়ে যে আর্থ-সামাজিক জীবনব্যবস্থা গড়ে তুলছে তাকে আমরা সংক্ষেপে আধুনিক জীবন ব্যবস্থা বলছি।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ

