• হোম
  • একাডেমি
  • মাদরাসা
  • নবম-দশম শ্রেণি
  • হযরত মুহাম্মদ (স.) এর মদিনা জীবন
হযরত মুহাম্মদ (স.) এর মদিনা জীবন

পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।

Back

হযরত মুহাম্মদ (স.) এর মদিনা জীবন

হুদায়বিয়ার সন্ধি (৬২৮ খ্রিষ্টাব্দ)

সন্ধির পটভূমি: ৬২৮ খ্রিস্টাব্দে (ষষ্ঠ হিজরীতে) মহানবি (স.) মাতৃভূমি দর্শন ও হজ্জ পালনের জন্যে ১৪০০ সাহাবা নিয়ে হজ্জের পোশাক পরিধান করে ও কুরবানী পশু নিয়ে ভারী যুদ্ধাস্ত্রের পরিবর্তে কেবল খাপেবদ্ধ তরবারিসহ মক্কার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন। ছয় বৎসর পূর্বে মুহাজিরগণ ঘরবাড়ি, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু বান্ধবের মায়া কাটিয়ে ইসলামের জন্য মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেছিলেন। তাদের মন দেশে প্রত্যাবর্তনের জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছিল। ইতোমধ্যে মক্কা (বায়তুল্লাহ শরীফ) কিবলা বলে নির্ধারিত হয়েছে।

এসব কারণেও স্বপ্নে মক্কায় প্রবেশের ইঙ্গিত পেয়ে তিনি সাহাবিদের নিয়ে মক্কায় রওয়া হন। পবিত্র জিলকদ মাসে প্রাচীন আরব প্রথানুযায়ী যুদ্ধ বিগ্রহ নিষিদ্ধ থাকা সত্বেও কুরাইশগণ কর্তৃক খালিদ ও ইকরামার নেতৃত্বে একদল সৈন্য হযরত মুহাম্মদ (স.) এর গতিরোধের জন্য প্রেরিত হল। কেননা, কুরাইশদের ধারণা হল এটি আরব গোত্রসমূহের সামনে তাদের পদমর্যাদাকে অবনমিত করার একটি চাতুর্যপূর্ণ চালমাত্র। মক্কার সন্নিকটে খুজাহ গোত্রের বুদাইল বিন ওয়াকার নিকট কুরাইশদের যুদ্ধাভিযানের সংবাদ পেয়ে মহানবি (স.) পথ পরিবর্তন করে মক্কার নয় মাইল অদূরে হ্রদায়বিয়া নামক স্থানে শিবির স্থাপন করেন। "হ্রদায়বিয়া নামক একটি কূপের নামানুসারে অঞ্চলটি হ্রদায়বিয়া নামে পরিচিত।

কুরাইশদের দূরভিসন্ধি জানতে পেরে হযরত বুদাইলকে দূতরূপে পাঠিয়ে হযরত মুহাম্মদ (স.) কুরাইশদের জানালেন যে, তারা সম্পূর্ণ নিরস্ত্র, যুদ্ধ করতে মক্কায় আসেনি। শুধু হজ্জ বা পবিত্র কা'বাগৃহ পরিদর্শন করতে এসেছেন। হযরতের সততায় বিশ্বাস করে কুরাইশগণ ওরওয়া বিন মাসুদকে সন্ধির প্রস্তাব দিয়ে মহানবি (স.) এর নিকট পাঠান। সাহাবিদের বিশ্বস্ততা ও সদিচ্ছার প্রতি কটাক্ষ করে ওরওয়া কটূক্তি করলে সন্ধি চুক্তির প্রাথমিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। মহানবি (স.) প্রথমে হযরত খারাশ বিন উমাইয়া অল খোযাঈকে এবং পরে হযরত উসমান (রা.) কে সন্ধির প্রস্তাব নিয়ে কুরাইশদের নিকট প্রেরণ করেন।

হযরত ওসমান (রা) এর প্রত্যাবর্তনে বিলম্ব হলে মুসলিম শিবিরে রব উঠল যে, মুশরিকরা হযরত উসমানকে হত্যা করেছে। ফলে যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে এবং বীর মুসলিম যোদ্ধাগণ নিরস্ত্র হলেও দীপ্তকণ্ঠে শপথ গ্রহণ করলেন যে তাঁরা হযরত উসমান (রা.)-এর হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণ করবেন। এ শপথকে বাইয়াতুর রিদওয়ান অথবা বৃক্ষের নিচে শপথ গ্রহণ করা হয় বলে বাইয়াতুশ শাজারা বলে অভিহিত করা হয়। মুসলমানদের দূঢ় শপথে শঙ্কিত হয়ে কুরাইশগণ হযরত উসমান (রা) কে মুক্তি দিয়ে সুহাইল বিন আমরকে সন্ধির প্রস্তাব নিয়ে পাঠান। অনেক বাকবিতন্ডার পর মুসলিম ও কুরাইশদের মধ্যে চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হল। ইসলামে এটাই হুদায়বিয়ার সন্ধি নামে পরিচিত।

পরবর্তী

সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ