- হোম
- একাডেমি
- মাদরাসা
- নবম-দশম শ্রেণি
- বাংলাদেশে ইসলাম
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
বাংলাদেশে ইসলাম
বাংলায় ইসলাম প্রচারের দ্বিতীয় পর্যায়
ত্রয়োদশ শতকের দ্বিতীয় ভাগ হতে চতুর্দশ শতকের শেষ ভাগ অবধি সময়সীমা ছিল বাংলায় ইসলাম প্রচারের দ্বিতীয় পর্যায়। প্রথম পর্যায়ের পর দ্বিতীয় পর্যয়েও সুফি ও দরবেশগণের দ্বারা বাংলায় ইসলাম প্রচার অব্যাহত থাকে। তবে দ্বিতীয় পর্যায় ইসলাম প্রচারে মুসলিম রাজশক্তি সহায়তা প্রদান করে।
দ্বিতীয় পর্যায় ইসলাম প্রচারের আলোচনায় সর্বপ্রথম হযরত শাহ তুর্কান শেখের কথা বলা হয়। উত্তর বঙ্গের বগুড়া জেলায় তিনি নিজের কেন্দ্র স্থাপন করে ইসলাম প্রচার অব্যাহত রাখেন।
ত্রয়োদশ শতকের প্রথমার্ধে হযরত মাওলানা তকীউদ্দীন (রা) বাংলার বিভিন্ন স্থানে ইসলাম প্রচার করেন। হযরত শায়খ শরফুদ্দীন আবু তাওয়ামাহ (রা.) সোনারগাঁও আগমন করে অমুসলিমদের মধ্যে ইসলাম প্রচার ও সাধারণভাবে শিক্ষা সম্প্রসারনের কাজে আত্মনিয়োগ করেন। ইসলামের বিভিন্ন শাস্ত্র শিক্ষাদানের জন্য তিনি সোনারগাঁওয়ে একটি মাদরাসা স্থাপন করেন।
উত্তর ও পশ্চিম-দক্ষিন বঙ্গে ইসলাম প্রচারের সাথে যে মুজাহিদের নাম অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত তিনি হচ্ছেন হযরত উলুগ-ই-আজম খাজাজী (রা)। তিনি লাখনৌতির সুলতান রুকুনুদ্দীনের অধীনে একজন সেনাপতি ছিলেন। সুলতানের নিদের্শে তিনি বহুস্থানে অভিযান চালিয়ে ইসলামের বিজয় পতাকা উড্ডীয়ন করেন।
বাংলার দক্ষিণাংশে বিশেষ করে চব্বিশ পরগনা ও খুলনা অঞ্চলে ইসলাম প্রচারের সাথে যে দুজন মহান সাধক মুজাহিদের নাম বিশেষ ভাবে জড়িত তারা হচ্ছেন সাইয়্যেদ আব্বাস আলী মক্কী (রা) ও তাঁর ভগ্নী রওশন আরা (রা)। বর্তমান চব্বিশ পরগনা জেলার বশিরহাট মহকুমায় মুসলমানদের একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা তাঁদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও সাধনার ফল বলা যেতে পারে।
নদী প্রধান এ বাংলাদেশে হযরত শাহ বদর (রা) বা বদর পীরের প্রভাব যে কতো বেশি তা বিশেষ করে দক্ষিণ ও পূর্ব বাংলার নদীপথে ভ্রমণ করলে সহজেই উপলব্ধি করা যায়। মুসলমান-হিন্দু নির্বিশেষে আজো বাংলার মাঝি মাল্লারা নৌকা ছাড়ার পূর্বে বদর পীরের নাম উচ্চারণ করে থাকে।
পূর্ববঙ্গে ও আসামের পশ্চিমাংশে ইসলাম প্রচারে হযরত শাহ জালাল মুজাররাদীর (রা) এর অবদান অতুলনীয়। সমকালীন পর্যটক ইবনে বতুতা লিখেছেন; তাঁর হাতে এদেশের অধিকাংশ লোক ইসলাম গ্রহণ করেছে।
বরেন্দ্র অঞ্চলে যে সব ইসলাম প্রচারক এসেছিলেন তাদের অধিকাংশই দিনাজপুর জেলায় তাদের কর্মশক্তি নিয়োগ করেন। তাই দিনাজপুর জেলায় বহু আলেম ও দরবেশের আস্তানা ও মাজার দেখা যায়। এ আলেম ও দরবেশদের মধ্যে হযরত সাইয়েদ নাসিরুদ্দীন শাহ নেকমর্দান (রা) অন্যতম ছিলেন।
চতুর্দশ শতকে বাংলার আর এক অনন্য সাধারণ ব্যক্তিত্বের আবির্ভাব ঘটে। তিনি হচ্ছেন হযরত শায়খ আলী সিরাজুদ্দীন (রা)। তৎকালীন বাংলার কেন্দ্রভূমি গৌড় ও পান্ডুয়ায় বসে তিনি ইসলাম প্রচার অভিযান চালিয়ে যান।
নোয়াখালী জেলায় ইসলাম প্রচারকদের মধ্যে সাইয়্যেদ হাফেজ মাওলানা আহমদ তানুরী (রা) সর্বাধিক প্রসিদ্ধি অর্জন করেছেন। তিনি এ অঞ্চলের প্রথম যুগের ইসলাম প্রচারকদের অন্যতম।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ
