• হোম
  • একাডেমি
  • সাধারণ
  • একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি
  • কমিউনিকেশন সিস্টেমস ও নেটওয়ার্কিং
কমিউনিকেশন সিস্টেমস ও নেটওয়ার্কিং

পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।

Back

কমিউনিকেশন সিস্টেমস ও নেটওয়ার্কিং

তারবিহীন মাধ্যম (Wireless Media)

তার মাধ্যম ছাড়া যখন প্রেরক ও গ্রাহকযন্ত্রের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করা হয় তখন তাকে তারবিহীন বা ওয়্যারলেস মিডিয়া বলে। এটি সম্ভব হয় কারণ বিদ্যুৎ-চুম্বকীয় বা ইলেকট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গের জন্য কোনো মাধ্যমের প্রয়োজন হয় না।

2.11 চিত্রে Electromagnetic spectrum বা বিদ্যুৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গের স্পেকট্রাম দেখানো হয়েছে। এই তরঙ্গের কম্পন যত বেশি হবে তার তরঙ্গ দৈর্ঘ্য তত কম হবে। এই স্পেকট্রামের অত্যন্ত ক্ষুদ্র একটা অংশ আমরা দৃশ্যমান আলো হিসেবে দেখতে পাই। এই ইলেকট্রোম্যাগনেটিক (বিদ্যুৎ-চুম্বকীয়) স্পেকট্রামের দুইটি ক্ষেত্র কমিউনিকেশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, সে দুইটি হলো- রেডিওওয়েভ (Radiowave), এবং মাইক্রোওয়েভ (Microwave)|

রেডিও ওয়েভ (Radio wave)

3 কিলোহার্টজ থেকে 300 গিগাহার্টজের মধ্যে সীমিত ইলেকট্রোম্যাগনেটিক স্পেকট্রামকে রেডিও ওয়েভবলা হলেও কমিউনিকেশনের প্রেক্ষিতে সাধারণত 10 কিলোহার্টজ থেকে 1 গিগাহার্টজকে তেরঙ্গ দৈর্ঘ্য 30km থেকে 30 cm) রেডিও ওয়েভভিত্তিক কমিউনিকেশন বলে বিবেচনা করা হয়। তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বেশি হলে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক সিগন্যাল চারিদিকে ছড়িয়ে যায়, তাই ব্রডকাস্টের বেলায় রেডিও ওয়েভ বেশি ব্যবহার হয়। রেডিও ওয়েভ পাঠানোর জন্য যে অ্যান্টেনার প্রয়োজন হয় তার দৈর্ঘ্য তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আনুমানিক চার ভাগের এক ভাগ হতে হয়। সে কারণে কম ফ্রিকোয়েন্সির (বেশি তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের) রেডিও ওয়েভ খুব বাস্তবসম্মত নয়। রেডিও ওয়েন্ড বায়ুমন্ডলে খুব বেশি শোষিত হয় না, ছড়িয়ে পড়ার কারণে বিল্ডিংসহ পাহাড়-পর্বত কিংবা অন্যান্য বাধা অতিক্রম করতে পারে। রেডিও ওয়েভ বায়ুমণ্ডলের আয়োনোস্ফিয়ার থেকে প্রতিফলিত হয় বলে এটি পৃথিবীর একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে পাঠানো সম্ভব। এজন্য যোগাযোগের ক্ষেত্রে ঘরে ও বাইরে ব্যাপকভাবে রেডিও ওয়েভ ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

মাইক্রোওয়েভ (Microwave): 300 MHz হতে 300 GHz ফ্রিকোয়েন্সির ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক স্পেকট্রামকে মাইক্রোওয়েভ (তরঙ্গ দৈর্ঘ্য 1 mm থেকে 1m পর্যন্ত) বলা হলেও কমিউনিকেশনের প্রেক্ষিতে সাধারণত 1 গিগাহার্টজ হতে 100 গিগাহার্টজ ফ্রিকোয়েন্সি পর্যন্ত বিবেচনা করা হয়। এটি রেডিও ওয়েভের মতো চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে না, সোজাসুজি যায়। তাই এই কমিউনিকেশনের জন্য ট্রান্সমিটার অ্যান্টেনা ও রিসিভার অ্যান্টেনাকে মুখোমুখি থাকতে হয় বা সংযোগ লাইন অব সাইট (LOS: Line of sight অবলম্বন করতে হয়। মাইক্রোওয়েভ সিস্টেম মূলত দুটি ট্রান্সসিভার (Transceiver) নিয়ে গঠিত হয়, যার একটি সিগন্যাল পাঠায় অন্যটি গ্রহণ করে।

মাইক্রোওয়েভে যোগাযোগ দুধরনের হয়ে থাকে:
১. টেরিস্ট্রিয়াল (Terrestrial) বা ভুপৃষ্ঠে মাইক্রোওয়েভ সংযোগ এবং
২. স্যাটেলাইট (Satellite) বা ভূ-উপগ্রহের মাধ্যমে মাইক্রোওয়েভ সংযোগ।

টেরিস্ট্রিয়াল (Terrestrial): সাধারণত যে সব জায়গায় ক্যাবল ব্যবহার করার অনুপযোগী সে সব স্থানে টেরিস্ট্রিয়াল ট্রান্সমিটার বসানো হয়। মাইক্রোয়েড সংকেতের মধ্যে বাধা থাকলে ডেটা স্থানান্তর হয় না, তাই যোগাযোগ ব্যবস্থা নিরবচ্ছিন্ন এবং সুষ্ঠু করার জন্য সাধারণত বড় টাওয়ার, উঁচু ভবন বা পাহাড়ে এ টেরিস্ট্রিয়াল ট্রান্সমিটার এবং রিসিভার বসানো হয়ে থাকে। ভূপৃষ্ঠের অসমতল এলাকা কিংবা গাছপালা, ভবন ও অন্যান্য প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধকতার কারণে এ ধরনের ট্রান্সমিশনে প্রতি ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার পর পর রিপিটার বা রিলে স্টেশন বসাতে হয়।

স্যাটেলাইট (Satellite)

মাইক্রোওয়েভ বায়ুমণ্ডলের আয়নোস্ফিয়ার ভেদ করে যেতে আসতে পারে বলে কৃত্রিম উপগ্রহের (Artificial Satellite) মাধ্যমে মাইক্রোওয়েভে সিগন্যাল আদান-প্রদান করা শুরু হয়। একটি স্যাটেলাইট ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩৬০০০ কিমি উর্ধ্বাকাশে স্থাপিত করা হলে সেটি জিওস্টেশনারি হয়, অর্থাৎ পৃথিবীর অক্ষে ঘূর্ণনের সমান গতিতে এই স্যাটেলাইট পৃথিবীকে পরিক্রমণ করে। পৃথিবী থেকে তখন এই স্যাটেলাইটকে আকাশের নির্দিষ্ট বিন্দুতে স্থির মনে হয়। সেজন্য ভূমিতে স্থাপিত VSAT (Very Small Aperture Terminal) কে একটি নির্দিষ্ট দিকে আকাশমুখী করে স্থাপন করা হয়। বঙ্গবন্ধু-১ একটি জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট এবং গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে অ্যান্টেনাগুলো আকাশের সেই বিন্দুর দিকে মুখ করে স্থাপন করা হয়। বিশ্বব্যাপী টিভি চ্যানেলগুলোর সরাসরি সম্প্রচার, প্রতিরক্ষা বিভাগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদান-প্রদান এবং আবহাওয়ার সর্বশেষ অবস্থা পর্যবেক্ষণে স্যাটেলাইট মাইক্রোওয়েভ প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়।

সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ