• হোম
  • স্কুল ১-১২
  • সাধারণ
  • নবম-দশম শ্রেণি

আকাইদ ও নৈতিক জীবন

পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।

Back

আকাইদ ও নৈতিক জীবন

নৈতিক জীবন গঠনে আসমানি কিতাবের ভূমিকা

পথহারা ও পথভ্রষ্ট মানুষের হিদায়াতের জন্য আল্লাহ তায়ালা নবি-রাসুলগণের মাধ্যমে যে কিতাব অবতীর্ণ করেছেন তাই আসমানি কিতাব। আসমানি কিতাব হলো আল্লাহ্ তায়ালার বাণী ও বিধি-নিষেধের সমন্বিত গ্রন্থ । মানব জীবনকে নৈতিক ও আদর্শিক পথে পরিচালনা করতে আসমানি কিতাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আসমানি কিতাবগুলো মানুষকে আল্লাহ তায়ালার সত্তা, গুণাবলি, ক্ষমতা ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা প্রদান করে। তাছাড়া মানুষ আসমানি কিতাবের বর্ণনা দ্বারা পরকাল, জান্নাত-জাহান্নাম ইত্যাদি বিষয়ের জ্ঞান ও পরিচয় জানতে পারে। এসব বিষয়ের জ্ঞান মানুষকে সত্য ও সুন্দর জীবন গঠনে অনুপ্রাণিত করে।

আল্লাহ তায়ালা আসমানি কিতাবসমূহে বহু নবি-রাসুলের ঘটনাও বর্ণনা করেছেন। পাশাপাশি তাঁদের অনুসারী পুণ্যবান ও মুমিনদের সফলতার কাহিনীও তুলে ধরেছেন। আসমানি কিতাবের মাধ্যমে মানুষ এসব কাহিনী ও ঘটনা জানতে পারে । তাঁদের সফলতা ও সম্মানের মূল চাবিকাঠি হিসেবে নৈতিকতার গুরুত্ব বুঝতে পারে। ফলে মানুষ নৈতিক জীবন গঠনে উৎসাহিত হয়। নবি-রাসুলগণের ঘটনার পাশাপাশি আসমানি কিতাবসমূহে কাফির, মুশরিক ও পাপাচারীদের ঘটনাও বর্ণনা করা হয়েছে। এরূপ করা হয়েছে এজন্য যে, মানুষ যেন এসব ঘটনা থেকে শিক্ষা লাভ করে। আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ আসমানি কিতাব আল-কুরআনে ফিরআউন, নমরূদ, কারুন প্রমুখ নাফরমানের ঘটনা বর্ণনা করেছেন। আদ, ছামুদ ইত্যাদি পাপাচারী জাতিসমূহের কথাও বর্ণনা করা হয়েছে। এছাড়াও আল্লাহ তায়ালার প্রতি অকৃতজ্ঞতা, অবাধ্যতা, গর্ব-অহংকার, পাপাচার, মিথ্যাচার, অনৈতিক ও অশ্লীল কার্যকলাপের দরুন তাদের শোচনীয় পরিণতির কথা আমরা আসমানি কিতাবের মাধ্যমেই জানতে পারি। এসব ঘটনা আমাদের অনৈতিক ও অন্যায় কার্যাবলি থেকে বিরত থাকতে এবং সৎ ও মানবিক জীবনযাপনে অনুপ্রাণিত করে।

জ্ঞান বা শিক্ষা হলো এক প্রকার আলো। এটি মানুষের অন্তর চক্ষুকে খুলে দেয়। শিক্ষিত মানুষ ব্যর্থতার কারণ ও সফলতার সোপান সম্পর্কে অবগত থাকে। সুশিক্ষিত মানুষ নৈতিক ও উন্নত চরিত্রের অধিকারী হয় এবং ইহকালীন ও পরকালীন জীবনে শান্তি ও সফলতা লাভ করে থাকে। আসমানি কিতাব মূলত জ্ঞানের সর্বোত্তম উৎস। আসমানি কিতাব মানুষকে সবধরনের কল্যাণের পথনির্দেশ করে । আল-কুরআন প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন-

ذلِكَ الْكِتَبُ لا رَيْبَ فِيهِ هُدًى لِلْمُتَّقِينَ 

অর্থ : “এটি সেই কিতাব যাতে কোনো সন্দেহ নেই। এটি মুত্তাকিদের জন্য পথনির্দেশক।” (সূরা আল-বাকারা, আয়াত ০২)

আল-কুরআন হলো সকল জ্ঞানের আধার। মানবজীবনের প্রয়োজনীয় সকল জ্ঞান-বিজ্ঞানের মূলনীতি ও সারকথা এ গ্রন্থে নির্ভুলভাবে বর্ণিত হয়েছে। এভাবে আল-কুরআনের শিক্ষা মানুষকে সুশিক্ষিত করে তোলে ও নৈতিকতা বিকাশে সহায়তা করে।

আসমানি কিতাবসমূহে মানুষকে নীতি-নৈতিকতার আদর্শ অনুসরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । এসব গ্রন্থে উন্নত আদর্শ ও সগুণাবলির নানা বিষয় অত্যন্ত সুন্দরভাবে বর্ণিত হয়েছে। পাশাপাশি যেসব কাজ ও অভ্যাসের দ্বারা নৈতিক জীবনাচরণ লঙ্ঘিত হয় সে সম্পর্কে সতর্ক ও নিষেধ করে দেওয়া হয়েছে । তাওরাত, যাবুর, ইঞ্জিল ইত্যাদি কিতাব পাঠ করলেও মানবিকতার বহু দৃষ্টান্ত দেখতে পাওয়া যায় । পবিত্র কুরআন নাজিল হওয়ার পর থেকে অন্য কিতাবগুলোর কার্যকারিতা রহিত করা হয়েছে। সর্বোপরি আল-কুরআনে নীতি-নৈতিকতার পরিপূর্ণ দিকনির্দেশনা রয়েছে। এ কিতাব অনুসরণে জীবন পরিচালনা করলে মানব জীবন নীতি-নৈতিকতামণ্ডিত সুন্দর ও শান্তিময় হয় ।

কাজ : শিক্ষার্থীরা নৈতিক জীবন গঠনে আসমানি কিতাবের ভূমিকা সম্পর্কে ১০টি বাক্য খাতায় লিখে শিক্ষককে দেখাবে।