- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- নবম-দশম শ্রেণি
- বর্ণের উচ্চারণ
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
বর্ণের উচ্চারণ
বর্ণের উচ্চারণ
বাংলা ভাষায় ৩৭টি মূল ধ্বনিকে প্রকাশ করার জন্য রয়েছে ৫০টি মূল বর্ণ। এর মধ্যে অধিকাংশ বর্ণের উচ্চারণ মূল ধ্বনির অনুরূপ। কয়েকটি বর্ণের একাধিক উচ্চারণ রয়েছে। আবার কয়েকটি ক্ষেত্রে একাধিক বর্ণের উচ্চারণ অভিন্ন। ধ্বনিগুলো দিয়ে শব্দ তৈরি হওয়ার সময়ে পাশের ধ্বনির প্রভাবে বর্ণের উচ্চারণ অনেক সময়ে বদলে যায়। এখানে বাংলা বর্ণের উচ্চারণ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
স্বরবর্ণ
অ
- অ বর্ণের উচ্চারণ দুই রকম: [অ] এবং [ও]। সাধারণ উচ্চারণ [অ], কিন্তু পাশের ধ্বনির প্রভাবে [অ] কখনো কখনো [ও]-এর মতো উচ্চারিত হয়।
- অ বর্ণের স্বাভাবিক উচ্চারণ: অনেক [অনেক্], কথা [কথা], অনাথ [অনাথ] ।
- অ বর্ণের [ও] উচ্চারণ: অতি [ওতি], অণু [ওনু], পক্ষ [পোখো], অদ্য [ওদো], মন [মোন্]।
আ
- আ বর্ণের স্বাভাবিক উচ্চারণ [আ]: আকাশ [আকাশ], রাত [রা], আলো [আলো]।
- [আ] জ্ঞ-এর সঙ্গে থাকলে [অ্যা]- ]-এর মতো উচ্চারিত হয়। যেমন জ্ঞান [গ্যান্], জ্ঞাত [গ্যাতো, জ্ঞাপন [গ্যাপোন্]।
ই, ঈ
- [ই] ধ্বনির হ্রস্বতা ও দীর্ঘতা বোঝাতে দুটি বর্ণ রয়েছে: ই এবং ঈ। কিন্তু বাংলা ভাষায় উভয় বর্ণের উচ্চারণ একই রকম: দিন [দিন], দীন [দিনো], বিনা [বিনা], বীণা [বিনা], হীন [হিনো]।
উ, ঊ
- [উ] ধ্বনির হ্রস্বতা ও দীর্ঘতা বোঝাতে দুটি বর্ণ রয়েছে; উ এবং উ। কিন্তু বাংলা ভাষায় উভয় বর্ণের উচ্চারণ একই রকম: উচিত [উচিত্], ঊষা [উশা], উনিশ [ উনিশ], ঊনবিংশ [উনোবিঙশো]।
ঋ
- ঋ বর্ণের উচ্চারণ [রি]-এর মতো: ঋতু [রিতু], ঋণ [রি], কৃষক [ক্রিশক], দৃশ্য [দ্রিশশো]।
এ
- এ বর্ণের উচ্চারণ দুই রকম: [এ] এবং [অ্যা]। সাধারণ উচ্চারণ [এ], কিন্তু পাশের ধ্বনির প্রভাবে এ কখনো কখনো [অ্যা] উচ্চারিত হয়।
- এ বর্ণের স্বাভাবিক উচ্চারণ: একটি [একটি], দেশ [দেশ], এলো [এলো]।
- এ বর্ণের [অ্যা] উচ্চারণ: একটা [অ্যাটা], বেলা [ব্যালা], খেলা [খ্যালা]।
ঐ
- ঐ বর্ণের উচ্চারণ [ওই]: ঐকিক [ওইকিক্], তৈল [তোইলো]।
ও
- ও বর্ণের উচ্চারণ [ও]: ওল [ওল্], বোধ [বোধ]।
ঔ
- ঔ বর্ণের উচ্চারণ [ও]: ঔষধ [ওউশধ], মৌমাছি [মোড়মাছি]।
ব্যঞ্জনবর্ণ
ব্যঞ্জনবর্ণগুলো সাধারণত নিজ নিজ ধ্বনি অনুযায়ী উচ্চারিত হয়। যেমন কলা, খর, বল, নাচ শব্দের ক, খ, ব, ন ইত্যাদি বর্ণের উচ্চারণ যথাক্রমে [ক], [খ], [ব], [ন] ইত্যাদি। তবে কয়েকটি ব্যঞ্জনবর্ণের উচ্চারণ নিজ নিজ ধ্বনি থেকে আলাদা। এ ধরনের কয়েকটি বর্ণের উচ্চারণ নিয়ে আলোচনা করা হলো।
ঞ
- ঞ বর্ণের নিজস্ব কোনো ধ্বনি নেই। স্বতন্ত্র ব্যবহারে [অঁ)-এর মতো আর সংযুক্ত ব্যঞ্জনে [ন]-এর মতো উচ্চারিত হয়: মিঞা [মিয়া], চঞ্চল [চন্চল], গঞ্জ [ গনজো]।
ণ
- ণ বর্ণের উচ্চারণ [ন]: কণা [কনা], বাণী [বানি], হরিণ [হোরিন্]।
ব
- ব বর্ণের সাধারণ উচ্চারণ [ব]। তবে ফলা হিসেবে এই বর্ণের উচ্চারণে স্বাতন্ত্র্য আছে।
- শব্দের আদিতে ব-ফলার উচ্চারণ হয় না। যেমন - ত্বক [ত], শ্বশুর [শোত্তর), স্বাধীন [শাধিন্]।
- শব্দের মধ্যে বা শেষে ব-ফলা যুক্ত হলে সেই ব্যঞ্জনের দ্বিত্ব উচ্চারণ হয়: অশ্ব [অশো], বিশ্বাস [বিশশাশ], পক্ক [পক্কো]।
ম
- ম বর্ণের সাধারণ উচ্চারণ [ম]। শব্দের প্রথম বর্ণে ম-ফলা থাকলে সেই বর্ণ উচ্চারণের সময়ে ম-এর উচ্চারণ [অঁ]-এর মতো হয়, যেমন – শ্মশান [শঁশান্], স্মরণ [শরোন্]। শব্দের মধ্যে ম-ফলা থাকলে সেই বর্ণ উচ্চারণে দ্বিত্ব হয় এবং সামান্য অনুনাসিক হয়, যেমন- আত্মীয় [আত্তিয়ো], পদ্ম [পদদোঁ]। কিছু ক্ষেত্রে ম-ফলায় ম্- এর উচ্চারণ বজায় থাকে, যেমন - যুগ্ম [জুগ্মো], জন্ম [জমা], গুল্ম [গুলমো]।
য
- য বর্ণের উচ্চারণ [জ]: যদি [জোদি], যিনি [জিনি], সূর্য [শুরুজো]। তবে য-ফলা থাকলে স্বরের উচ্চারণে পরিবর্তন হয়, যেমন যেমন – ব্যতীত [বেতিতো], ব্যথা [ব্যাথা]। শব্দের মাঝখানে বা শেষে য-ফলা বর্ণের সঙ্গে যুক্ত থাকলে ঐ বর্ণের উচ্চারণ দ্বিত্ব হয়, যেমন উদ্যম [উদ্দম্], গদ্য [গোদ্দো]। কিন্তু শব্দের মধ্যে বা শেষে যুক্তব্যঞ্জনের সঙ্গে থাকা "-এর কোনো উচ্চারণ হয় না, যেমন সন্ধ্যা [শোধা], স্বাস্থ্য [শাথো], অর্ঘ্য [অরঘো]।
র
- র বর্ণের উচ্চারণ [র]। তবে র-ফলা হিসেবে এর উচ্চারণে বৈচিত্র্য আছে। শব্দের মধ্যে বা শেষে কোনো ব্যঞ্জনবর্ণের সঙ্গে র-ফলা থাকলে দ্বিত্বসহ র-ফলা উচ্চারিত হয়, যেমন - মাত্র [মাত্রো], বিদ্রোহ [বিদ্রোহো], যাত্রী [জাত্রি]। কিন্তু শব্দের মধ্যে বা শেষে যুক্তব্যঞ্জনের সঙ্গে র-ফলা যুক্ত হলে দ্বিত্ব উচ্চারণ হয় না, যেমন কেন্দ্র [কেন্দ্রো], শাস্ত্র [শাত্রো], বস্ত্র [বসূত্রো]।
শ, ষ, স
শ কখনো [শ]-এর মতো উচ্চারিত হয়, কখনো [স]-এর মতো উচ্চারিত হয়। স কখনো [শ]-এর মতো উচ্চারিত হয়, আবার কখনো [স]-এর মতো উচ্চারিত হয়। ষ বর্ণের উচ্চারণ সব সময়ে [শ]।
- শ বর্ণের [শ] উচ্চারণ: শত [শতো], শসা [শশা]।
- শ বর্ণের [স] উচ্চারণ: শ্রমিক [সোমিক্], শৃগাল [সিগাল্]।
- ষ বর্ণের [শ] উচ্চারণ: ভাষা [ভাশা], ষোলো [শোলো]।
- স বর্ণের [শ] উচ্চারণ: সাধারণ [শাধারোন্], সামান্য [শামাননো]।
- স বর্ণের [স] উচ্চারণ: আস্তে [আসতে], সালাম [সালাম্]।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ