- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- নবম-দশম শ্রেণি
- অম্ল, ক্ষারক ও লবণের ব্যবহার
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
অম্ল, ক্ষারক ও লবণের ব্যবহার
প্রাত্যহিক জীবনে ক্ষারের ব্যবহার ও সাবধানতা
তোমরা কি জানো, মৌমাছি হুল ফুটালে বা পিঁপড়া কামড় দিলে জ্বলে কেন, ফুলে যায় কেন? কারণ হলো, পিঁপড়ার কামড়ের মাধ্যমে মূলত ফরমিক এসিড নিঃসৃত হয়, যা আমাদের শরীরে জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করে। আর মৌমাছি হুল ফুটালে ফরমিক এসিড, মেলিটিন (Melittin) এবং অ্যাপামিন (Apamin) নামক এসিডিক পদার্থ নিঃসৃত হয়, যার কারণে জ্বালাপোড়াও হয় আবার আক্রান্ত স্থান ফুলেও যায়।
এখন প্রশ্ন হলো পিপড়া কামড়ালে বা মৌমাছি হুল ফুটালে করণীয় কী?
যেহেতু এসব ক্ষেত্রে জ্বালাপোড়ার কারণ হচ্ছে এসিড, তাই আমরা এসিডকে নিষ্ক্রিয় করতে পারে এরকম মলম, লোশন (যেমন- চুন) ব্যবহার করতে পারি। এরকম আরও একটি লোশন হলো ক্যালামিন (Calamine), যা মূলত জিংক কার্বোনেট (ZnCO3)। বেকিং সোডা ব্যবহার করেও ভালো ফল পাওয়া যায়।
মাটির এসিডিটি দূর করতে ক্ষার: তোমরা আগেই জেনেছ, মাটিতে এসিডিটি বাড়লে মাটির উর্বরতা নষ্ট হয়। তখন ক্ষারক ব্যবহার করে এসিডিটিকে প্রশমিত করা যায় এবং উর্বরতা ফিরিয়ে আনা যায়। এক্ষেত্রে বহুল ব্যবহৃত ক্ষারক হলো চুন (CaO) এবং মিল্ক অব লাইম (Ca(OH)2)। অবশ্য এ কাজে চুনাপাথরও (CaCO3) ব্যবহার করা হয়।
বাসাবাড়িতে পরিষ্কারক হিসেবে প্রচুর পরিমাণে অ্যামোনিয়াম হাইড্রোক্সাইড ব্যবহৃত হয়। টুথপেস্ট বা টুথ পাউডার আমাদের নিত্যদিনের একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বস্তু, যা ক্ষারীয়। খাওয়ার পরে সাধারণত আমাদের মুখে এসিডীয় অবস্থা তৈরি হয়। আর টুথপেস্ট বা পাউডার দিয়ে ব্রাশ করলে একদিকে যেমন দাঁত পরিষ্কার হয়, অন্যদিকে তেমনি পেস্ট বা পাউডারের ক্ষার সৃষ্ট এসিডকে নিষ্ক্রিয় করে। ফলে দাঁতের ক্ষয় রোধ হয়।
আবার থালা-বাসন পরিষ্কার করার জন্য যে শক্ত সাবান বা তরল সাবান ব্যবহার করা হয়, সেগুলোতেও ক্ষারক থাকে (চিত্র ৭.১১)। এমনকি আমরা যে কাপড় কাচার সাবান ব্যবহার করি, তা-ও তৈরি করা হয় সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড ও চর্বি বা তেল থেকে। একইভাবে শেভিং ফোম বা নরম সাবান তৈরি করা হয় পটাশিয়াম হাইড্রোক্সাইড ও চর্বি বা তেল থেকে।
তোমরা জানো যে গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা বা এসিডিটির কারণে আমরা যে এন্টাসিড খাই তা হলো ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রোক্সাইড (Mg(OH)₂) ও অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রোক্সাইড (Al(OH)3) নামের ক্ষার।
তাহলে দেখা যাচ্ছে যে ক্ষারক বা ক্ষারসমূহ আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অনেক কাজে লাগে। ক্ষার ও ক্ষারক ব্যবহারে সাবধানতা: তোমরা নিজের হাতে কখনো নিজেদের জামাকাপড় পরিষ্কার করে দেখেছ কী ঘটে? একটু বেশি কাপড় একসাথে পরিষ্কার করলে দেখা যায়, হাতের তালু থেকে একটু একটু চামড়া উঠে যায়। এর জন্য দায়ী হলো সাবানে থাকা ক্ষার। এসিড যেমন মানুষের শরীরের ক্ষতি করতে পারে, তেমনি ক্ষারও শরীরের ক্ষতি করতে পারে। তাই শক্তিশালী ক্ষারীয় দ্রব্যাদি নিয়ে কাজ করার সময় হাতে রাবারের মোজা এবং গায়ে অ্যাপ্রোন পরা উচিত।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ