• হোম
  • একাডেমি
  • সাধারণ
  • নবম-দশম শ্রেণি
  • জীবকোষ ও টিস্যু
জীবকোষ ও টিস্যু

পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।

Back

জীবকোষ ও টিস্যু

নিউক্লিয়াস বা কেন্দ্রিকা (Nucleus)

জীবকোষের প্রোটোপ্লাজমে নির্দিষ্ট পর্দাঘেরা ক্রোমোজোম বহনকারী সুস্পষ্ট যে বস্তুটি দেখা যায় সেটিই হচ্ছে নিউক্লিয়াস। এর আকৃতি গোলাকার, ডিম্বাকার বা নলাকার। সিভকোষ এবং লোহিত রক্তকণিকায় নিউক্লিয়াস থাকে না। নিউক্লিয়াসে বংশগতির বৈশিষ্ট্য নিহিত থাকে। এটি কোষে সংঘটিত বিপাকীয় কার্যাবলিসহ সব ক্রিয়া-বিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। সুগঠিত নিউক্লিয়াসে নিচের অংশগুলো দেখা যায়।

নিউক্লিয়াস

(a) নিউক্লিয়ার ঝিল্লি (Nuclear membrane)

নিউক্লিয়াসকে ঘিরে রাখে যে ঝিল্লি, তাকে নিউক্লিয়ার ঝিল্লি বা কেন্দ্রিকা ঝিল্লি বলে। এটি দুই স্তর বিশিষ্ট। এই ঝিল্লি লিপিড ও প্রোটিনের সমন্বয়ে তৈরি হয়। এই ঝিল্লিতে মাঝে মাঝে কিছু ছিদ্র থাকে, যেগুলোকে নিউক্লিয়ার রন্ধ্র বলে। এই ছিদ্রের ভিতর দিয়ে নিউক্লিয়াস এবং সাইটোপ্লাজমের মধ্যে কিছু বস্তু চলাচল করে। নিউক্লিয়ার ঝিল্লি সাইটোপ্লাজম থেকে নিউক্লিয়াসের অন্যান্য বস্তুকে পৃথক রাখে এবং বিভিন্ন বস্তুর চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে।

(b) নিউক্লিওপ্লাজম (Nucleoplasm)

নিউক্লিয়ার ঝিল্লির ভিতরে জেলির মতো বস্তু বা রস থাকে। একে কেন্দ্রিকারস বা নিউক্লিওপ্লাজম বলে। নিউক্লিওপ্লাজমে নিউক্লিক এসিড, প্রোটিন, উৎসেচক ও কতিপয় খনিজ লবণ থাকে।

(c) নিউক্লিওলাস (Nucleolus)

নিউক্লিওপ্লাজমের মধ্যে ক্রোমোজোমের সাথে সংলগ্ন গোলাকার বস্তুকে নিউক্লিওলাস বা কেন্দ্রিকাণু বলে। ক্রোমোজোমের রংঅগ্রাহী অংশের সাথে এরা লেগে থাকে। এরা RNA ও প্রোটিন দিয়ে তৈরি হয়। এরা রাইবোজোম সংশ্লেষণ করে।

(d) ক্রোমাটিন জালিকা (Chromatin reticulum)

বিভাজন চলছে না, এমন কোষের নিউক্লিয়াসের মধ্যে সুতার মতো জিনিস জট পাকিয়ে থাকতে দেখা যায়। এই সুতাগুলো হলো ক্রোমাটিন। ক্রোমাটিন (তথা ক্রোমোজোম) মূলত DNA এবং প্রোটিনের সমন্বয়ে গঠিত জটিল কাঠামো, যা জেনেটিক বৈশিষ্ট্যসমূহ বংশপরাম্পরায় সঞ্চারিত হওয়ার মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। চলন্ত অবস্থায় সিলিং ফ্যানের ব্লেড গোনা যেমন অসম্ভব, বিভাজন চলছে না এমন নিউক্লিয়াসে ক্রোমাটিন সুতা/তন্তু কতগুলো সেটা বোঝাও তেমনি অসম্ভব। জট পাকিয়ে থাকা সেই আলাদা তন্তুগুলোকে একসাথে ক্রোমাটিন জালিকা (chromatin reticulum) বা নিউক্লিয়ার রেটিকুলাম বলা হয়। কোষ বিভাজনের সময় সেই জট কিছুটা খুলে যায় এবং ক্রোমাটিনগুলো তখন আরো মোটা এবং খাটো হয়। সুকেন্দ্রিক কোষের ক্রোমাটিনগুলোকে তখন আলাদা আলাদা কাঠামো হিসেবে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়। কোষবিভাজনের সময় মোটা ও খাটো হয়ে আলাদা হয়ে পড়া ক্রোমাটিনগুলোর আরেক নাম ক্রোমোজোম। বিভাজনের মেটাফেজ দশায় তা সবচেয়ে ভালো বোঝা যায়। মেটাফেজ দশায় প্রতিটি ক্রোমোজোম বিভাজিত হয়ে ক্রোমোজোমজোড় গঠন করে যার দৈর্ঘ্য বরাবর অর্ধাংশকে বলে এক একটি ক্রোমাটিড। ক্রোমাটিডের (প্রায়) মধ্যবর্তী অংশে একটি সংকুচিত অঞ্চল থাকে যার নাম সেন্ট্রোমিয়ার। কোষ বিভাজনের সময় সেন্ট্রোমিয়ারের যে অংশে স্পিন্ডল যন্ত্রের মাইক্রোটিউবিউল এসে যুক্ত হয় তাকে বলে কাইনেটোকোর। সেন্ট্রোমিয়ারের উভয় পাশে ক্রোমাটিডের অংশদুটি হল তার দুটি বাহু (arm)। এনাফেজ দশায় যখন সেন্ট্রোমিয়ার বরাবর ক্রোমাটিড জোড়া বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, তখন প্রতিটি ক্রোমাটিডকেই এক একটি ক্রোমোজোম হিসেবে ধরা হয়। এ ব্যাপারে তৃতীয় অধ্যায়ে আরো জানতে পারবে।

সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ