- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- নবম-দশম শ্রেণি
- আইন, স্বাধীনতা ও সাম্য
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
আইন, স্বাধীনতা ও সাম্য
সাম্য
সাম্যের অর্থ সমান। অতএব শব্দগত অর্থে সাম্য বলতে সমাজে সবার সমান মর্যাদাকে বোঝায়। কিন্তু সমাজে সবাই সমান নয় এবং সবাই সমান যোগ্যতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে না। প্রকৃত অর্থে সাম্য বলতে এমন এক সামাজিক পরিবেশকে বোঝায়, যেখানে জাতি-ধর্ম-বর্ণ ইত্যাদি নির্বিশেষে যোগ্যতা অনুযায়ী সবাই সমান সুযোগ-সুবিধা লাভ করে, যেখানে কারো জন্য কোনো বিশেষ সুযোগ সুবিধা নাই এবং সে সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করে সকলে নিজ নিজ দক্ষতার বিকাশ ঘটাতে পারে। মূলত, সাম্য বলতে বোঝায়, প্রথমত: কোনো ব্যক্তি বা শ্রেণির জন্য বিশেষ সুযোগ-সুবিধার অবসান, দ্বিতীয়ত: সকলের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা, তৃতীয়ত: যোগ্যতা অনুযায়ী সমান সুযোগ-সুবিধা ভোগ করা।
সাম্যের বিভিন্ন রূপ
মানুষের বিভিন্নমুখী বিকাশ সাধনের জন্য বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রয়োজন। নাগরিক জীবনে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগের জন্য সাম্যকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন- ১। সামাজিক সাম্য, ২। রাজনৈতিক সাম্য, ৩। অর্থনৈতিক সাম্য, ৪। আইনগত সাম্য, ৫। স্বাভাবিক সাম্য ও ৬। ব্যক্তিগত সাম্য।
১. সামাজিক সাম্য: জাতি-ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ-পেশা নির্বিশেষে সমাজের সকল সদস্যের সমানভাবে সামাজিক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করাকে সামাজিক সাম্য বলে। এ ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি বা শ্রেণিকে কোনো বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দেওয়া যাবে না।
২. রাজনৈতিক সাম্য: রাষ্ট্রীয় কাজে সকলের অংশগ্রহণের সুযোগ-সুবিধা থাকাকে রাজনৈতিক সাম্য বলে। নাগরিকরা রাজনৈতিক সাম্যের কারণে মতামত প্রকাশ, নির্বাচিত হওয়া এবং ভোট দেওয়ার অধিকার ভোগ করে।
৩. অর্থনৈতিক সাম্য যোগ্যতা অনুযায়ী প্রত্যেকের কাজ করার ও ন্যায্য মজুরি পাওয়ার সুযোগকে অর্থনৈতিক সাম্য বলে। বেকারত্ব থেকে মুক্তি, বৈধ পেশা গ্রহণ ইত্যাদি অর্থনৈতিক সাম্যের অন্তর্ভুক্ত।
৪. আইনগত সাম্য: জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে আইনের দৃষ্টিতে সমান মনে করা এবং বিনা অপরাধে গ্রেফতার ও বিনা বিচারে আটক না করার ব্যবস্থাকে আইনগত সাম্য বলে।
৫. স্বাভাবিক সাম্য: এর অর্থ জন্মগতভাবে প্রত্যেক মানুষ স্বাধীন এবং সমান। কিন্তু বাস্তবে জন্মগতভাবে প্রত্যেক মানুষ শারীরিক ও মানসিকভাবে সমান হতে পারে না। এ জন্য বর্তমানে স্বাভাবিক সাম্যের ধারণা প্রায় অচল।
৬. ব্যক্তিগত সাম্য জাতি, ধর্ম, বর্ণ, বংশ ও মর্যাদা ইত্যাদি নির্বিশেষে মানুষে মানুষে কোনো ব্যবধান না করাকে ব্যক্তিগত সাম্য বলে।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ