• হোম
  • একাডেমি
  • সাধারণ
  • নবম-দশম শ্রেণি
সংবিধান

পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।

Back

সংবিধান

বাংলাদেশের সংবিধানের সংশোধনীসমূহ

১৯৭২ সালে সংবিধান প্রণয়নের পর থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের সংবিধান মোট ১৭ বার সংশোধন করা হয়েছে। বাংলাদেশ সংবিধানের ১৭টি সংশোধনীর প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য নিম্নে বর্ণিত হলো-

সংশোধনী ও সাল​
বিষয়বস্তু
প্রথম সংশোধনী জুলাই, ১৯৭৩
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময়কার মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিধান করা হয়।
দ্বিতীয় সংশোধনী সেপ্টেম্বর, ১৯৭৩
দেশের ভেতরে গোলযোগ, যুদ্ধের আশঙ্কা কিংবা মানুষের জীবনযাত্রায় সংকট দেখা দিলে রাষ্ট্রপতিকে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে 'জরুরি অবস্থা' ঘোষণার ক্ষমতা দেওয়া হয়।
তৃতীয় সংশোধনী নভেম্বর, ১৯৭৪
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর মধ্যে ভারত-বাংলাদেশের সীমান্ত সংক্রান্ত যে চুক্তি হয়, তৃতীয় সংশোধনীতে তা বৈধ ঘোষণা করা হয়।
চতুর্থ সংশোধনী জানুয়ারি, ১৯৭৫
  • সংসদীয় সরকারব্যবস্থার পরিবর্তে রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়।
  • উপরাষ্ট্রপতির পদ সৃষ্টি এবং সকল রাজনৈতিক দল বিলুপ্ত করে একটিমাত্র জাতীয় দল সৃষ্টি করা হয়।
পঞ্চম সংশোধনী এপ্রিল, ১৯৭৯
  • ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পরে সামরিক সরকার কর্তৃক যেসব বিধিবিধান প্রণয়ন ও সংবিধানের সংশোধনী আনা হয়েছে, সেগুলো পঞ্চম সংশোধনী আইনে বৈধ বলে ঘোষণা করা হয়।
  • রাষ্ট্রীয় মূলনীতি পরিবর্তন করা হয়।
  • বাংলাদেশের নাগরিকতা 'বাঙালি' থেকে 'বাংলাদেশি' করা হয়।
ষষ্ঠ সংশোধনী জুলাই, ১৯৮১
উপরাষ্ট্রপতির পদ লাভজনক নয় এই বিধান করে বিচারপতি আব্দুস সাত্তারকে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়।
সপ্তম সংশোধনী নভেম্বর, ১৯৮৬
১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ থেকে ১৯৮৬ সালের নভেম্বর পর্যন্ত জেনারেল এরশাদ যেসব বিধি-বিধান ও সামরিক আইন জারি এবং তার ভিত্তিতে যেসব কাজ সম্পাদন করেছিলেন, সেগুলোকে এ সংশোধনীতে বৈধতা দেওয়া হয়।
অষ্টম সংশোধনী জুন, ১৯৮৮
বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম এবং ঢাকার বাইরে হাইকোর্টের ৬টি বেঞ্চ স্থাপন করা হয়।
নবম সংশোধনী  জুলাই, ১৯৮৯
  • জনগণের সরাসরি ভোটে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিধান করা হয়।
  • রাষ্ট্রপতি পদে কোনো ব্যক্তি পর পর দুই মেয়াদের অধিক অধিষ্ঠিত না হতে পারার নিয়ম করা হয়।
দশম সংশোধনী জুন, ১৯৯০
জাতীয় সংসদে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত ৩০টি আসনের সময় আরও ১০ বছর বৃদ্ধি করা হয়।
একাদশ সংশোধনী আগস্ট, ১৯৯১
অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসেবে প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ কর্তৃক প্রয়োগকৃত সকল কার্যক্রম বৈধ করা হয় এবং পুনরায় তাঁর প্রধান বিচারপতি পদে ফিরে যাবার বিধান করা হয়।
দ্বাদশ সংশোধনী সেপ্টেম্বর, ১৯৯১
রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকারব্যবস্থার পরিবর্তে সংসদীয় সরকারব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন হয়।
ত্রয়োদশ সংশোধনী মার্চ, ১৯৯৬
উপরাষ্ট্রপতির পদ বিলুপ্ত করা হয়। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়।
চতুর্দশ সংশোধনী মে, ২০০৪
  • মহিলাদের জন্য জাতীয় সংসদে ৪৫টি আসন সংরক্ষণ করা হয়।
  • রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতিকৃতি সরকারি অফিসসহ নির্ধারিত প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের বিধান করা হয়।
  • সুপ্রীমকোর্টের বিচারক, পিএসসির চেয়ারম্যান ও সদস্যদের অবসরের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা হয়।
পঞ্চদশ সংশোধনী জুলাই, ২০১১
  • তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্ত করা হয়।
  • ১৯৭২ মূল সংবিধানের রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতি যথা: জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন করা হয়।
  • রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রাখার পাশাপাশি সকল ধর্মচর্চার স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়।
  • জাতীয় সংসদে মহিলাদের জন্য ৫০টি আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।
ষোড়শ সংশোধনী সেপ্টেম্বর, ২০১৪
সুপ্রীমকোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে আনার বিধান পুনঃপ্রবর্তন করা হয়।
সপ্তদশ সংশোধনী জুলাই, ২০১৮
জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত ৫০টি নারী আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচনের ব্যবস্থা আরো ২৫ বছর রাখার বিধান করা হয়।

বিভিন্ন সরকার বিভিন্ন সময়ে তাদের নিজেস্ব স্বার্থে বারবার সংবিধান সংশোধন করেছে। এতো সহজে সংবিধানের সংশোধন করা এটা আমাদের সংবিধানের দুর্বলতা এর ফলে সংবিধান ঠিকভাবে কাজ করেনি। নিয়মিত বিরতিতে নির্বাচন নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে এই সংবিধান।

সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ