- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- অষ্টম শ্রেণি
- কৃষিপ্রযুক্তি
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
কৃষিপ্রযুক্তি
মাঠ ফসলের বহুমুখীকরণ
কৃষক তার ফসলের মাঠে কী কী ফসল ফলান তা আমরা দেখেছি কি? ফসলের মাঠ পরিদর্শনকালে আমরা দেখতে পাব কোন মাঠ ধানভিত্তিক, কোনটা ইক্ষুভিত্তিক, কোনটা তুলাভিত্তিক আর কোনটা পাটভিত্তিক।
মাঠ ফসলের বহুমুখীকরণ বলতে কোনো একক ফসল বা একক প্রযুক্তির উপর নির্ভর না করে ফসল বিন্যাস, মিশ্র ও সাথি ফসলের চাষ ও খামার যান্ত্রিকীকরণকে বোঝায়। শস্য বহুমুখীকরণের উদ্দেশ্য হচ্ছে-
১। কাঙ্ক্ষিত ফসল বিন্যাস, শস্যের আবাদ বাড়ানো এবং কৃষকের আয় ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা।
২। খামারের কর্মকাণ্ড সমন্বয় করা এবং কৃষি পরিবেশের উপর প্রতিকূল প্রভাব কমিয়ে আনা।
৩। প্রচলিত শস্যবিন্যাসে উন্নত ফসলের জাত ও কলাকৌশলের সংযোগ ঘটানো।
৪। বীজের সাশ্রয় করা এবং উৎপাদন খরচ কমানো।
৫। প্রযুক্তি গ্রহণে কৃষকদের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা ও সমাধান করা।
১ । ফসলবিন্যাস: বাংলাদেশের ভূমি নানা জাতের ফসল চাষের উপযোগী। তবে প্রতিটি কৃষকই ফসলের বিন্যাস করে আবাদ করেন। ফসলবিন্যাস অর্থ হচ্ছে কৃষক সারা বছর বা ১২ মাস তার জমিতে কী কী ফসল ফলাবেন তার একটা পরিকল্পনা করা। ফসলবিন্যাস করা হয় মাটির গুণাগুণ, পানির প্রাপ্যতা, চাষ পদ্ধতি, শস্যের জাত, ঝুঁকি, আয় এসব বিষয় বিবেচনা করে। ফসলবিন্যাসে একটি শিম জাতীয় ফসল অর্ন্তভুক্ত করে সারের চাহিদা হ্রাস করা সম্ভব এবং তাতে মাটির উর্বরতাও বৃদ্ধি পাবে।
২। মিশ্র ও সাথি ফসলের চাষ মিশ্র ও সাথি ফসলের চাষ বলতে একাধিক ফসল যা ভিন্ন সময়ে পাকে, ফসলবৃদ্ধির ধরন ভিন্ন এবং মাটির বিভিন্ন স্তর থেকে খাদ্য আহরণ করে এরূপ ফসলের একত্রে চাষকে বোঝায়। মিশ্র ও সাথি ফসলে পোকামাকড়, রোগবালাই এবং আবহাওয়াজনিত ঝুঁকি হ্রাস পায়। মিশ্র ফসলে একাধিক ফসলের বীজ একসাথে মিশিয়ে জমিতে বপন করা হয়। কিন্তু সাথি ফসলের ক্ষেত্রে প্রতিটি ফসলের বীজ আলাদা সারিতে বপন করা হয় বা আলাদা সারিতে ফসলের চারা রোপণ করা হয়।
৩। শূন্য চাষ পদ্ধতি: শূন্য চাষ অর্থ হচ্ছে বিনা চাষে ফসল ফলানো। বন্যাকবলিত এলাকায় ধানভিত্তিক ফসল বিন্যাসে শূন্য চাষ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। যেমন, বন্যার পানি নেমে গেলে মাটিতে রস থাকা অবস্থায় মসুর, ভুট্টা, রসুন ইত্যাদি রোপণ বা লাগানো যায় এবং ভালো ফলনও পাওয়া যায়। এতে কৃষকের ৩-৪ সপ্তাহ সময় বাঁচে।
৪। রিলে চাষ: কৃষকেরা একটি শস্যে ফুল আসার পর, কিন্তু অন্য শস্য কর্তনের প্রায় এক সপ্তাহ আগে কতিপয় সুবিধা পাওয়ার জন্য শিম জাতীয় বীজ বপন করেন। একেই রিলে চাষ বলা হয়। রিলে চাষের উদ্দেশ্য হলো সেচের সীমাবদ্ধতা, শ্রমঘাটতি এবং সময়ের অভাব দূর করা। আমাদের কৃষকেরা সাধারণত ধানের ক্ষেতে রিলে চাষ করে থাকেন। রিলে চাষ দ্বারা মাটির গঠন উন্নত হয় এবং উর্বরতা বৃদ্ধি পায়।
৫। সম্পদের সুষ্ঠু সদ্ব্যবহার মাঠ ফসল বহুমুখীকরণের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে- (১) অধিক উৎপাদন এবং (২) অধিক আয়। জমি, সময়, বীজ, সার, সেচের পানি, কৃষি যন্ত্রপাতি, কৃষি প্রযুক্তি এগুলো হচ্ছে কৃষকের কৃষি সম্পদ। কৃষকের আয় নির্ভর করে সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারের উপর। যেমন-মিশ্র বা সাথি ফসলের চাষ হতে কৃষক অধিক মুনাফা অর্জন করতে পারেন। আবার বিনা চাষে ফসল ফলালে সময় ও অর্থ উভয়ের সাশ্রয় হয়। আবার ফসল বিন্যাসে শিম জাতীয় শস্য আবাদের ব্যবস্থা থাকলে সারের চাহিদা হ্রাস পাবে।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ

