- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- অষ্টম শ্রেণি
- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির নিরাপদ ও নৈতিক ব্যবহার
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির নিরাপদ ও নৈতিক ব্যবহার
নিরাপত্তাবিষয়ক ধারণা
তোমরা নিশ্চয়ই এতদিনে জেনে গেছ তথ্যপ্রযুক্তি আমাদের দৈনন্দিন জীবন থেকে শুরু করে একটা রাষ্ট্রের পরিচালনা বা নিরাপত্তার প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জীবনের যেকোনো ক্ষেত্রকে আরও সুন্দর, আরও সহজ এবং আরও দক্ষভাবে পরিচালনা করতে হলে আমাদের তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্য নিতে হবে। নেটওয়ার্কের কারণে এখন কেউই আর আলাদা নয়, এক অর্থে সবাই সবার সাথে যুক্ত। এক দিক দিয়ে এটি একটি অসাধারণ ব্যাপার, অন্যদিক দিয়ে এটি নতুন এক ধরনের ঝুঁকি তৈরি করেছে।
নেটওয়ার্ক দিয়ে যেহেতু সবাই সবার সাথে যুক্ত, তাই কিছু অসাধু মানুষ এই নেটওয়ার্কের ভেতর দিয়ে যেখানে তার যাবার কথা নয় সেখানে যাওয়ার চেষ্টা করে। যে তথ্যগুলো কোনো কারণে গোপন রাখা হয়েছে, সেগুলো দেখার চেষ্টা করে। যারা নেটওয়ার্ক তৈরি করিয়েছেন, তারা সবসময়ই চেষ্টা করেন কেউ যেন সেটি করতে না পারে। প্রত্যেকটি কম্পিউটার বা নেটওয়ার্কেরই নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকে, কেউ যেন সেই নিরাপত্তার দেয়াল ভেঙে ঢুকতে না পারে তার চেষ্টা করা হয়। নিরাপত্তার এ অদৃশ্য দেয়ালকে ফায়ারওয়াল বলা হয়। তারপরও প্রায় সব সময়েই অসাধু মানুষেরা অন্যের এলাকায় প্রবেশ করে তার তথ্য দেখে, সরিয়ে নেয় কিংবা অনেক সময় নষ্ট করে দেয়। এ পদ্ধতিকে বলে হ্যাকিং। যারা হ্যাকিং করে তাদেরকে বলে হ্যাকার। একজন হ্যাকার ২০০০ সালে ডেল, ইয়াহ্র, আমাজন, ই-বে, সিএনএনের মতো বড় বড় প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট হ্যাক করে একশ কোটি ডলারের বেশি ক্ষতি করে ফেলেছিল।
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নেটওয়ার্ক সংযোগের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীর জন্য প্রদত্ত নির্দিষ্ট পাসওয়ার্ড দেওয়া হয়। পাসওয়ার্ডটি এমনভাবে দেওয়া হয় কেউ যেন সেটি সহজে অনুমান করতে না পারে। কিন্তু পাসওয়ার্ড বের করে ফেলার জন্য বিশেষ কম্পিউটার বা বিশেষ রোবট তৈরি হয়েছে। এগুলো সারাক্ষণই সম্ভাব্য সকল পাসওয়ার্ড দিয়ে চেষ্টা করতে থাকে, যতক্ষণ না সঠিক পাসওয়ার্ডটি বের হয়। সেজন্য আজকাল প্রায় সবক্ষেত্রেই সঠিক পাসওয়ার্ড দেওয়ার পরও একজনকে ঢুকতে দেওয়া হয় না। একটি বিশেষ লেখা পড়ে সেটি টাইপ করে দিতে হয়। একজন সত্যিকার মানুষ যেটি সহজেই বুঝতে পারে কিন্তু একটি যন্ত্র বা রোবট তা বুঝতে পারে না। মানুষ এবং যন্ত্রকে আলাদা করার এই পদ্ধতিকে বলা হয় captcha।
যতই দিন যাচ্ছে আমরা ততই তথ্যপ্রযুক্তি এবং নেটওয়ার্কের উপর বেশি নির্ভর করতে শুরু করেছি। কোনো কারণে যদি কিছুক্ষণের জন্যও এই নেটওয়ার্ক অচল হয়ে যায়, পৃথিবীতে এক ধরনের বিপর্যয় নেমে আসবে। বলা যেতে পারে সারা পৃথিবী এক ধরনের নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থায় চলে যাবে। সে কারণে এ নেটওয়ার্কগুলো সচল রাখার জন্য প্রয়োজনীয় সব রকম ব্যবস্থা করা হয়। বড়ো বড়ো তথ্যভান্ডারগুলোকে বলা হয় ডেটা সেন্টার। সব রকম যান্ত্রিক গোলযোগ, আগুন, ভূমিকম্প বা অপরাধীদের হামলা থেকে এগুলো রক্ষার ব্যবস্থা করা হয়।
ইন্টারনেটের সম্পূর্ণ ভিন্ন এক ধরনের নিরাপত্তাহীনতা বাড়ছে, যেটি সম্পর্কে অনেকেরই ভালো ধারণা নেই। আজকাল সবরকম তথ্যের জন্য আমরা ইন্টারনেটের উপর নির্ভর করি কিন্তু সকল তথ্য যে সঠিক সেটি সত্যি নয়।
অনেকে অনিচ্ছাকৃতভাবে বা অনেকে ইচ্ছা করে ভুল বা মিথ্যা তথ্য দিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মিথ্যা তথ্য প্রচার করার অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। কাজেই ইন্টারনেট থেকে তথ্য নেওয়ার বেলায় সব সময়ই নিজের জ্ঞান-বুদ্ধি ব্যবহার করে যাচাই করে নিতে হয়।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ

