- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- ষষ্ঠ শ্রেণি
- প্রবন্ধ রচনা
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
প্রবন্ধ রচনা
জাতীয় ফুল শাপলা
সূচনা
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সৃষ্টিতে ফুলের অবদান অপরিসীম। অন্যান্য ফুলের মতো শাপলাও সে-সৌন্দর্যের অংশীদার। শাপলা বাংলাদেশের সব অঞ্চলে সহজে পাওয়া যায়। শাপলা ফুলের সৌন্দর্য বাংলাদেশের সর্বত্রই ছড়িয়ে আছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বিবেচনায় এবং খুব সহজেই পাওয়া যায় বলে শাপলা জাতীয় ফুলের মর্যাদা পেয়েছে। আমাদের জাতীয় ফুল শাপলার মতো অন্যান্য দেশেও জাতীয় ফুল রয়েছে। যেমন- ভারতের জাতীয় ফুল পদ্ম, ইরানের জাতীয় ফুল গোলাপ ইত্যাদি।
প্রাপ্তিস্থান
শাপলা জলে জন্মে বলেই এটি জলজ ফুল। খালে-বিলে, হাওড়ে-বাঁওড়ে, ঝিলে, পুকুরে, নদীতে, পরিত্যক্ত জলাশয়ে এ-ফুল জন্মে। এ-ফুল চাষাবাদ করতে হয় না। বিনা যত্নেই ফুটে থাকে।
জাতীয় জীবনে ব্যবহার
জাতীয় জীবনে এর অনেক ব্যবহারিক দিক রয়েছে। ডাকটিকিট ও মুদ্রায় শাপলার ছাপচিত্রের ব্যবহার আছে। জাতীয় প্রতীকের মর্যাদাও পেয়েছে এ ফুল।
প্রকারভেদ
রঙের বিবেচনায় শাপলার রয়েছে রকমফের। শাপলা সাদা, লাল, নীল, হলুদ, কালচে লাল, বেগুনি-লাল, রক্ত-বেগুনি, নীল-বেগুনি প্রভৃতি রঙের হয়ে থাকে। বাংলাদেশে সাদা, লাল ও নীল- এই তিন রঙের শাপলা পাওয়া যায়। অন্যান্য রঙের শাপলার তুলনায় সাদা শাপলা বেশি পাওয়া যায়। আমাদের জাতীয় ফুল সাদা শাপলা।
পরিচয়
পানির নিচের মাটি থেকে প্রথমে মূল বা শিকড় গজায়। আর সে-শিকড় থেকে সরু নলের মতো একটি দণ্ড পানি ভেদ করে উপরে উঠে আসে এবং পানির উপরে সে-দণ্ডটি থেকে পাতা বের হয়। পাতা বড় ও পুরু হয়ে পানির উপরে ভাসে। আর মূল থেকে একাধিক শাখা বের হয়, যা দেখতে অনেকটা ঝাড়ের মতো। একাধিক শাখাই মূলত শাপলার নল বা ডাঁটা। এসব নলের মাথায় কলার মোচার আকৃতির ফুলের কুঁড়ি ফোটে। ফুলগুলোও পাতার মতো পানির উপরে ভাসে। শাপলা ফোটে বর্ষাকালে। শাপলা ফুলের মেলায় প্রকৃতিকে অপরূপ সাজে সজ্জিত হতে দেখা যায়।
শাপলা পরিপূর্ণভাবে ফোটার সাথে সাথে পাপড়িগুলো ঝরে পড়ে; আর নলের আগায় গোলাকার বিচিটি পানিতে ডুবে যায়। পানি বাড়ার সাথে সাথে শাপলার বৃদ্ধি ঘটে। আর পানি কমার সাথে সাথে তা নিশ্চিহ্ন হতে থাকে। শীত মৌসুমে খালে-বিলে, নদী-নালায় পানি না থাকার কারণে শাপলা মরে যায়। তবে বিচিগুলো সুপ্ত অবস্থায় থাকে। নতুন বর্ষার আগমনে শাপলাগুলোর শিকড় থেকে আবার চারা গজায়।
সৌন্দর্য
বর্ষার জলে শাপলা ফোটার সাথে সাথে প্রকৃতি ধরা দেয় নবরূপে। শাপলার সৌন্দর্য এমনভাবে ফুটে ওঠে যে প্রকৃতিকে অপরূপ বলে মনে হয়। জ্যোৎস্নারাতে নানা রঙের শাপলা রাতের সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে তোলে।
উপকারিতা
শাপলা সৌন্দর্য বাড়ায়। শিশু-কিশোররা শাপলা ফুল হাতে নিয়ে আনন্দ উপভোগ করে। তারা শাপলার নল দিয়ে মালা গাঁথে। এর নল বা ডাঁটা তরকারি হিসেবে খাওয়া হয়। শাপলার বিচি থেকে খৈ হয়। তা ছাড়া শাপলা থেকে যে শালুক হয়, তা শুকিয়ে খাওয়া যায়।
উপসংহার
বাংলাদেশের অধিকাংশই জলজ অঞ্চল। বর্ষাকালে তার সম্পূর্ণ রূপ আমরা দেখতে পাই। এ সময় শাপলা জলজ ফুল হিসেবে প্রকৃতির শোভাবর্ধন করে। এর স্বাভাবিক সৌন্দর্য বাঙালির লোকজীবনে, জাতীয় জীবনে বিশেষ স্থান দখল করে আছে। শাপলা ফুলের তুলনা হয় না।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ