- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- ষষ্ঠ শ্রেণি
- প্রবন্ধ রচনা
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
প্রবন্ধ রচনা
জাতীয় পাখি দোয়েল
ভূমিকা :
"... কোকিল ডাকে কুহু কুহু দোয়েল ডাকে মুহু মুহু
নদী যেথায় ছুটে চলে
আপন ঠিকানায়
একবার যেতে দে-না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়।"
বাংলাদেশ অসংখ্য রূপ-রং-কণ্ঠের পাখির সমারোহে সমৃদ্ধ। যে-পাখির গান আর ডালে ডালে নেচে বেড়ানো দেখে মনে চঞ্চলতা জাগে, তার নাম দোয়েল। বাংলার অতি পরিচিত এক পাখি। দোয়েল বাংলাদেশে গানের পাখি হিসেবেও স্বীকৃত।
আকৃতি
আকৃতির দিক থেকে দোয়েল ছোট পাখি। এরা সাধারণত ৫-৬ ইঞ্চি লম্বা হয়। স্ত্রী ও পুরুষ দোয়েল রং, আকার ও চেহারায় পৃথক হয়। পুরুষ দোয়েলের মাথা, ঘাড়, গলা, বুক ও পিঠের পালক চকচকে নীলাভ কালো। নিচের বাকি অংশের পালক সাদা। এদের ডানা কালচে বাদামি রঙের, তার মাঝে পিঠঘেঁষে সাদা ছোপ আর আর টানা দাগ। লেজ লম্বা, সরু থেকে মোটা। লেজে মাঝের দুটো পালক কালো, বাকি অংশ সাদা, এদের চোখ ও ঠোঁট কালো এবং পা গাঢ় সিসা রঙের। স্ত্রী দোয়েলের রং অনেকটা বাদামি ও ধূসর, দেখতে ময়লা বালির মতো। দোয়েল সবসময় তার লেজ উঁচু করে রাখে।
খাদ্য ও বাসস্থান
পোকামাকড় দোয়েলের প্রধান খাদ্য। আকারে ছোট বলে এদের তেমন বেশি খাদ্যের প্রয়োজন হয় না। দোয়েল শস্যকণাও খেয়ে থাকে। এদের শিমুল ও মাদার ফুলের মধু খেতেও দেখা যায়। দোয়েল ঝোপঝাড়ে একাকী বা জোড়াসহ বাসা বেঁধে বাস করে। মানুষের বসতের কাছাকাছি দেয়াল কিংবা গাছের গুঁড়িতেও এরা বাসা বাঁধে। দোয়েল গাছের ডালে বাসা বাঁধতে পারে না। এরা খড়-কুটো বা শুকনো ঘাস জমা করে বাসা তৈরি করে।
প্রকৃতি
দোয়েল চঞ্চল এবং অস্থির প্রকৃতির পাখি। নাচের ঢঙে এরা লাফিয়ে চলে। মাটি থেকে দশ ফুট উচ্চতার ভেতরে এরা অল্প দূরত্বে উড়ে চলে। এদের দীর্ঘক্ষণ শূন্যে ভাসতে দেখা যায় না।
বিশেষত্ব
দোয়েলের বিশেষত্ব এর মোহনীয় সুরে ও সংগীতে। আকর্ষণীয় এই আদুরে পাখিটি সুন্দর সুরে গান করে এবং আস্তে আস্তে শিস দেয়। বসন্তকালে এদের নাচ ও গানে মন ভরে ওঠে। একেক্ষে কোকিল সবচেয়ে, পরিচিত সেটি তবে অতিথি গানের পাখি। আর এরা আমাদের একান্তই প্রকৃতির গানের পাখি। সারাদিন এমনকি সন্ধ্যার পরও দোয়েল গান গায়।
কেন জাতীয় পাখি
বাংলার প্রকৃতির সঙ্গে দোয়েলের রূপ, রং, স্বভাব, গান মিশে আছে। দোয়েল তার সহজাত চঞ্চলতায় গাছের ডালে বসে যখন গান করে ও শিস দেয়, তখন বাঙালি বাংলার অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে। বাংলার সুজলা-সুফলা-শস্য-শ্যামলা প্রকৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে বলেই দোয়েল আমাদের জাতীয় পাখি।
উপসংহার
বাংলাদেশের সর্বত্র দোয়েল পাখি দেখা যায়। প্রকৃতির প্রতিকূলতা, তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে জীববৈচিত্র্যে যে ক্ষতি হচ্ছে, তাতে এ-পাখিও রেহাই পাচ্ছে না। দোয়েল তথা সব পাখির জন্ম, বৃদ্ধি ও বিকাশ নিশ্চিত করাই আমাদের দায়িত্ব।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ