• হোম
  • একাডেমি
  • সাধারণ
  • ষষ্ঠ শ্রেণি
  • প্রবন্ধ রচনা
প্রবন্ধ রচনা

পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।

Back

প্রবন্ধ রচনা

জাতীয় ফল কাঁঠাল

সূচনা

দৃষ্টিকাড়া ফুল আর অজস্র উপাদেয় ফলে বাংলার প্রকৃতি ভরপুর। প্রকৃতির অসংখ্য ফল ভোজনরসিক বাঙালিকে তুষ্ট করে। এসব ফলের বিচিত্র নাম, ভিন্ন রূপ, নানা স্বাদ ও গন্ধ। গ্রীষ্মের ফল কাঁঠাল। এ-ফল গন্ধ, স্বাদ ও আকৃতিতে বাঙালির অতিপ্রিয়। কাঁঠাল বাংলাদেশের জাতীয় ফল।

আকার-আকৃতি

জঙ্গল থেকে বাইর অইল এক ব্যাটা গায়ে তার একশো একটা কাঁটা। প্রচলিত এই ধাঁধাটির অর্থ হলো কাঁঠাল। গায়ে কাঁটার আবরণ নিয়ে কাঁঠাল ফলরাজ্যে নিজের স্বাতন্ত্র্যই ঘোষণা করে। আকৃতিতে এটি অনেক বড়। এক কেজি থেকে বিশ কেজি পর্যন্ত হতে পারে একটি কাঁঠালের ওজন। কাঁচা কাঁঠাল সবুজ বা সবুজাভ হলুদ কিংবা হলদেটে রঙের হয়ে থাকে। কাঁঠাল গাছ এবং ফল দুটোতেই থাকে সাদা দুধের মতো কষ। কাঁঠাল গাছ মাঝারি থেকে বড় হয়ে থাকে। একটি গাছে ধরে অনেক অনেক কাঁঠাল। গাছের গোড়া থেকে শাখা পর্যন্ত কাঁঠাল ফলে।

প্রাপ্তিস্থান

কাঁঠাল বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্র পাওয়া গেলেও গাজীপুর, টাঙ্গাইল, নরসিংদী, ময়মনসিংহ এবং যশোর অঞ্চলে এর ফলন বেশি হয়। মূলত লৌহ-সমৃদ্ধ লাল মাটিতে কাঁঠাল ভালো জন্মে। পাহাড়ি কাঁঠালের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা যায়। বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম, সিলেট ও বান্দরবানের পাহাড়ে বিশেষ আকারের কাঁঠাল জন্মে। স্বাদেও এ-এলাকার কাঁঠাল সমতলভূমির কাঁঠাল থেকে পৃথক। দেশের চাহিদা মিটিয়ে কাঁঠাল আজকাল বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে।

ব্যবহার্য অংশ

কাঁঠাল অসংখ্য কোষসমৃদ্ধ হয়ে থাকে। কাঁচা অবস্থায় তা কেটে রান্না করে খাওয়া হয়। কাঁঠালের সব অংশই ব্যবহার করা যায়। কাঁঠালের কোষ এবং বিচি উপাদেয় ও পুষ্টিকর খাবার। এর ছাল গবাদিপশুর খাবার। কাঁঠালের বিচি ভেজে কিংবা রান্না করে খাওয়া যায়। পাকা কাঁঠালের গন্ধ ও স্বাদ অতুলনীয়। কবির ভাষায়:

কাঁঠাল কণ্টকে ঘেরা ভিতরেতে কোষ,

তার তরে এ ফল কেবা দেয় দোষ।

কাঁঠাল পাকার পর এর মৌ মৌ গন্ধে চারপাশ মুখরিত হয়ে ওঠে। গাছের চারদিক পাখি বা কীট ছুটে আসে এর আস্বাদ নিতে।

চাষপদ্ধতি

কাঁঠাল উঁচু জমির ফল। যেখানে বৃষ্টির পানি জমে না, সেখানে কাঁঠাল গাছ ভালো জন্মে। বীজ এবং কলমের মাধ্যমে কাঁঠাল গাছের বংশবৃদ্ধি ঘটানো যায়। বীজ থেকে চারা উৎপন্ন করলে এবং সেই চারা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে রোপণ করলে উৎপাদন ভালো হয়।

উপসংহার

কাঁঠাল বাংলাদেশের অন্যতম অর্থকরী ফসল। বাংলাদেশের উঁচু এলাকায় সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে কাঁঠালের উৎপাদন বাড়ানোর প্রতি আমাদের সচেষ্ট হওয়া উচিত। তা ছাড়া কাঁঠালের জুস বৈজ্ঞানিক উপায়ে সংরক্ষণ করে বাজারজাত করা যেতে পারে। এ-বিষয়ে আমাদের জাতীয়ভাবে সচেতন হওয়া প্রয়োজন।

সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ