- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি
- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি : বিশ্ব ও বাংলাদেশ প্রেক্ষিত
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি : বিশ্ব ও বাংলাদেশ প্রেক্ষিত
তথ্য প্রযুক্তির নেতিবাচক প্রভাব
আসক্তি: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির নিয়ন্ত্রণহীন অবাধ ব্যবহারের ফলে পারিবারিক, সামাজিক এমনকি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নেতিবাচক অবস্থা পরিলক্ষিত হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (যেমন- ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি) ব্যবহারের তীব্র আসক্তির ক্ষতিকারক প্রভাব আশঙ্কাজনক মাত্রায় বেড়ে যাচ্ছে। এর ফলে অল্পবয়সি শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় অমনোযোগী, নৈতিক-অনৈতিকতার তফাত শনাক্ত করতে না পারা, শুদ্ধাচারে অনীহাসহ নানা অসামাজিকতায় লিপ্ততা তাদের পেয়ে বসছে।
অভিভাবকগণও এর আসক্তি থেকে নিষ্কৃতি পাচ্ছেন না; যার দরুন কর্মক্ষেত্রে শ্রমঘণ্টা নষ্ট, অনৈতিক কার্যকলাপে অর্থহীনভাবে সময়ক্ষেপণ, স্বাভাবিক পারিবারিক নিয়মাচারে ব্যত্যয়, সন্তানদের সময় না দেয়া বা তাদের প্রতি যত্নবান না হওয়ায় অনেক অনভিপ্রেত ঘটনার জন্ম হচ্ছে। অনলাইনে গেমসের আসক্তি আরো ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে সামাজিক জীবনে। ঘণ্টার পর ঘন্টা এতে কালক্ষেপণ মাদকাসক্তির মতো ভয়ংকর নেশাগ্রস্ততায় নিমজ্জিত হয়ে যাচ্ছে সমাজের একটি বিরাট অংশ। এসব গেমসের জন্য নিজের সন্তান বিক্রির মতো চরম অনৈতিক ঘটনাও সংঘটনের খবর পাওয়া গেছে। অনলাইন গেমসে আসক্ত হয়ে ব্যবহারকারীদের মৃত্যুমুখে পতিত হওয়ার মতো ঘটনাও বিভিন্ন দেশে ঘটেছে।
জনৈক রাশিয়ান নাগরিকের সৃষ্ট গেমসের মাধ্যমে অনেক ছেলেমেয়ে আত্মহত্যা বা অকাল মৃত্যুর খবর আমরা সবাই অবগত আছি। এছাড়া বিদেশি সংস্কৃতির বিরূপ প্রভাব তো রয়েছেই। ইদানীং প্রতিটি দেশের চলচ্চিত্রে প্রদর্শিত মারামারি, হত্যাকাও ও অন্যান্য ভায়োলেন্স অনুকরণ করে উঠতি বয়সি ছেলেমেয়েদেরকে সহিংস করে তুলছে। এসবের ফলে আচার-আচরণ, মানসিকতা, পোশাক-পরিচ্ছদে নেতিবাচক পরিবর্তন লক্ষণীয় মাত্রায় বাড়তে দেখা যাচ্ছে। অবাধ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অপব্যবহারে কুরুচিপূর্ণ ছবি বা ভিডিও এখন স্বল্পমূল্যের মোবাইল ফোনেও দৃশ্যমান।
অপরাধ: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র আসক্তির কারণে কোমলমতি শিশু-কিশোরসহ সমাজের এক বৃহদংশ বিপথগামী হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। মতলববাজ হ্যাকাররা নানা কৌশলে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ ব্যক্তিগত গোপনীয় তথ্য চুরি/পাচার, সাইবার হামলা, নেতিবাচক প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে দিয়ে সমাজে অস্থিতিশীল পরিবেশের জন্ম দিতে পারে।
স্বাস্থ্যগত সমস্যা: তথ্য ও যোগাযোগ সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি বিশেষত কম্পিউটারের অত্যধিক ব্যবহারের ফলে চোখের উপর চাপ পড়ে, মাথা ব্যথা, হাত ব্যথা, ঘাড় ও পিঠের সমস্যায় আক্রান্ত হতে দেখা যায় অনেককেই। রাত জেগে মোবাইল ফোন ব্যবহার, কম্পিউটার বা ইন্টারনেটে সময় কাটানোর কারণে স্নায়বিক ও মস্তিষ্কের নানাবিধ অসুস্থতাও পরিলক্ষিত হচ্ছে।
পরিশেষে বলা যায়, চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত সার্জারির চাকুর ব্যবহার যথাযথভাবে না করে খুন-খারাবির কাজের অপব্যবহার রোধ করার দায়িত্ব সার্জারি-চাকুর নয়, এই দায়িত্ব আমাদের সবার। একইভাবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যথোপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিতের মাধ্যমে মানব সভ্যতাকে আরো অনন্যমাত্রায় অধিষ্ঠিত করার জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতেই হবে
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ