• হোম
  • স্কুল ১-১২
  • সাধারণ
  • নবম-দশম শ্রেণি

শরিয়তের উৎস

পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।

Back

শরিয়তের উৎস

শরিয়তের প্রথম উৎস : আল-কুরআন

শরিয়তের সর্বপ্রথম ও সর্বপ্রধান উৎস হলো আল-কুরআন। ইসলামি শরিয়তের সকল বিধি-বিধানের মূল উৎসই আল- কুরআন । এর উপরই ইসলামি শরিয়তের ভিত্তি ও কাঠামো প্রতিষ্ঠিত। আল-কুরআন শরিয়তের অকাট্য ও প্রামাণ্য দলিল। মানব জীবনের প্রয়োজনীয় সকল বিষয়ের সমাধানসূচক মূলনীতি ও ইঙ্গিত আল-কুরআনে বিদ্যমান। আল্লাহ তায়ালা বলেন-

وَنَزَلْنَا عَلَيْكَ الْكِتَبَ تِبْيَانًا لِكُلِّ شَيْءٍ

অর্থ : “আমি আপনার প্রতি কিতাব নাজিল করেছি প্রত্যেক বিষয়ের স্পষ্ট ব্যাখ্যা স্বরূপ।” (সুরা আন-নাহল, আয়াত ৮৯)

আল-কুরআন আল্লাহ তায়ালার পবিত্র বাণী। এটি সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানি কিতাব। আল্লাহ ভায়ালা হযরত জিবরাইল (আ.)-এর মাধ্যমে মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর উপর এ কিতাব নাজিল করেন। এ কিতাব আরবি ভাষায় নাজিলকৃত । ইসলামি শরিয়তের প্রধান উৎস হিসেবে আল-কুরআনে মানবজাতির জীবন পরিচালনার সুস্পষ্ট মূলনীতি ও নির্দেশনা বিদ্যমান। আল্লাহ তায়ালা বলেন-

وَلَقَد صَرَّفْنَا لِلنَّاسِ فِي هَذَا الْقُرْآنِ مِنْ كُلِّ مَقَلٍ

অর্থ : “আর অবশ্যই আমি মানুষের জন্য এ কুরআনে বিভিন্ন উপমা বিশদভাবে বর্ণনা করেছি।” (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত ৮৯)
কুরআন মজিদ সহজ ও সাবলীল ভাষায় নাজিলকৃত। এতে কোনোরূপ অস্পষ্টতা, বক্রতা, কিংবা জটিলতা নেই। বরং এতে খুবই সুন্দর ও সরল ভাষায় নানা বিষয়ের বর্ণনা করা হয়েছে। অতি সাধারণ মানুষও এ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। আল্লাহ তায়ালা বলেন-

فَإِنَّمَا يَشَرِنْهُ بِلِسَانِكَ لَعَلَّهُمْ يَتَذَكَّرُونَ

অর্থ : “আর আমি তো কুরআনকে আপনার ভাষায় সহজ করে দিয়েছি, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।” (সূরা আদ-দুখান, আয়াত ৫৮)

অবতরণ

আল-কুরআন আল্লাহ্ তায়ালার কালাম। এটি 'লাওহে মাহফুজ' বা সংরক্ষিত ফলকে লিপিবদ্ধ। এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন-

بَلْ هُوَ قُرْآنٌ فَجِيدُهُ فِي لَوْحٍ مَّحْفُوظ

অর্থ : “বস্তুত এটি সম্মানিত কুরআন। সংরক্ষিত ফলকে লিপিবদ্ধ।” (সূরা আল-বুরূজ, আয়াত ২১-২২)

আল্লাহ তায়ালা সর্বপ্রথম কদরের রাতে গোটা কুরআন মজিদ লাওহে মাহফুজ থেকে 'বায়তুল ইযযাহ' নামক স্থানে নাজিল করেন। বায়তুল ইযযাহ হলো প্রথম আসমানের একটি বিশেষ স্থান ।

মহানবি (স.) হেরা গুহায় ধ্যানমগ্ন থাকা অবস্থায় মহান আল্লাহর নির্দেশে জিবরাইল (আ.) আল-কুরআনের সুরা আলাকের প্রথম পাঁচটি আয়াত নিয়ে তথায় মহানবি (স.)-এর নিকট অবতরণ করেন। এটাই ছিল দুনিয়াতে আল-কুরআনের প্রথম নাজিলের ঘটনা। এরপর বিভিন্ন সময় ও প্রয়োজনের পরিপ্রেক্ষিতে মহানবি (স.)-এর প্রতি কুরআন নাজিল হয় ।

এভাবে মহানবি (স.)-এর জীবদ্দশায় মোট ২৩ বছরে সম্পূর্ণ কুরআন নাজিল হয়। এটি একসাথে নাজিল হয়নি। বরং অল্প অল্প করে প্রয়োজনানুসারে নাজিল হতো। কখনো ৫ আয়াত, কখনো ১০ আয়াত, কখনো আয়াতের অংশবিশেষ, আবার কখনো একটি পূর্ণাঙ্গ সূরা একসাথে নাজিল হতো। আল্লাহ তায়ালা এ প্রসঙ্গে বলেন-

وَقَرْ أَنَا فَرَقْنَهُ لِتَقْرَاهُ عَلَى النَّاسِ عَلَى مُكْرٍ وَنَزَلْنَهُ تَنْزِيلًاه

অর্থ : “আর আমি খণ্ড-খণ্ডভাবে কুরআন নাজিল করেছি যাতে আপনি তা মানুষের নিকট ক্রমে ক্রমে পাঠ করতে পারেন আর আমি তা ক্রমশ নাজিল করেছি।” (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত ১০৬)

অন্যান্য আসমানি কিতাবের ন্যায় আল-কুরআন একসাথে নাজিল করা হয়নি। তাওরাত, যাবুর, ইঞ্জিল ইত্যাদি একসাথে পূর্ণাঙ্গ আকারে নাজিল করা হয়েছিল। কিন্তু আল-কুরআন এর ব্যতিক্রম । এটি আল-কুরআনের বিশেষ মর্যাদার পরিচায়ক। মক্কার কাফিররা এ সম্পর্কে রাসুল (স.)-কে প্রশ্ন করলে আল্লাহ তায়ালা বলেন, “কাফিররা বলে, তাঁর উপর সমগ্র কুরআন একবারে অবতীর্ণ হলো না কেন? আমি এভাবেই অবতীর্ণ করেছি আপনার হৃদয়কে তার দ্বারা মজবুত করার জন্য এবং আমি তা ক্রমে ক্রমে স্পষ্টভাবে আবৃত্তি করেছি।” (সূরা আল-ফুরকান, আয়াত ৩২)

আল-কুরআন আল্লাহ তায়ালার বাণী । জিবরাইল (আ.)-এর মাধ্যমে আল্লাহ্ তায়ালা অল্প অল্প করে মহানবি (স.)-এর ২৩ বছরের নবুওয়াতি জীবনে পূর্ণরূপে নাজিল করেন।

শরিয়তের প্রথম উৎস : আল-কুরআন | শরিয়তের উৎস - ইসলাম শিক্ষা (নবম-দশম শ্রেণি, সাধারণ)