- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- নবম-দশম শ্রেণি
- কৃষি প্রযুক্তি
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
কৃষি প্রযুক্তি
মাটি ও পরিবেশের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী ফসল নির্বাচন
মাটি ফসল উৎপাদনের অন্যতম মাধ্যম। ফসল উৎপাদন মাটির বৈশিষ্ট্যের উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল। মাটিই হচ্ছে পানি ও পুষ্টির প্রাকৃতিক উৎস। সব মাটিতে সব ফসল জন্মায় না। যেমন: ধানগাছ কাদা মাটি বা কাদা দোআঁশ মাটিতে ভালো জন্মে করে। অপরদিকে চিনা বাদাম বেলে বা বেলে-দোআঁশ মাটি পছন্দ করে। তবে বাংলাদেশের মাটি পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনার পলি দ্বারা সৃষ্টি হওয়ার কারণে সব ধরনের ফসলই কমবেশি জন্মায়। বাংলাদেশের অধিকাংশ মাটিই নরম, হালকা, ধূলিময় ও কর্ষণযোগ্য। মাটি বলতে তাকেই বোঝায়, যেখানে ফসল জন্মায়, বন সৃষ্টি হয় আর গবাদিপশু বিচরণ করে। একজন কৃষককে যখন মাটি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয় তিনি ঝটপট বলে থাকেন যে ভূ-ত্বকের গভীরে যতটুকু লাঙলের ফলা পৌঁছে, যা ফসল উৎপাদনের উপযোগী তাই মাটি। অর্থাৎ কৃষকের ভাষায় ভূ-পৃষ্ঠের ১৫-১৮ সে.মি. গভীর স্তরকে মাটি বলা হয়। অতএব, ফসল উপযোগী মাটির বৈশিষ্ট্য এ স্তরেই নিহিত।
আগেই বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশের মাটিতে অল্প বিস্তর সব ফসলই জন্মে। কিন্তু সব অঞ্চলের মাটির বৈশিষ্ট্য একরূপ নয়। তাই দেখা যায়, কোথাও ধান, কোথাও গম, কোথাও আলু আবার কোথাও পাট ভালো হয়। নিচে বিভিন্ন ফসল উপযোগী মাটির বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হলো।
ধান চাষোপযোগী মাটির বৈশিষ্ট্য | গম চাষোপযোগী মাটির বৈশিষ্ট্য |
|---|---|
কংকর ও বেলেমাটি ছাড়া সব মাটিই ধান চাষের উপযোগী। এঁটেল ও এঁটেল দোআঁশ মাটি ধান চাষের জন্য খুব ভালো। নদ-নদীর অববাহিকা ও হাওর-বাঁওড় এলাকা যেখানে পলি জমে সেখানেও ধান ভালো হয়। | উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমি গম চাষের জন্য উপযোগী। মাঝারি নিচু জমিতেও গম চাষ করা হয়। |
প্রকারভেদে উঁচু, মাঝারি, নিচু সব ধরনের জমিতেই ধানের চাষ করা যায়। যেমন, নিচু জমিতে বোরো ও জলি আমন চাষ করা হয়। | দোআঁশ বা বেলে দোআঁশ মাটি গম চাষের জন্য ভালো। এঁটেল দোআঁশ মাটিতেও গমের চাষ হয়। |
মাটির অম্লাতাক থেকে নিরপেক্ষ অবস্থা ধান চাষের অনুকূল। | বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে গমের চাষ ভালো হয়। এছাড়া ঢাকা, কুমিল্লা, টাঙ্গাইল, ফরিদপুরেও গমের আবাদ হয়। |
মাটিতে জৈব পদার্থ কম হলে কমপোস্ট ব্যবহার করে এর মাত্রা বাড়ানো যায়। | বাংলাদেশের সব কৃষি অঞ্চলে গমের চাষ হয় না। বিশেষ করে হাওর বাঁওড় ও বিল অঞ্চলে গমের আবাদ করা হয় না। |
মাটির নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশ, জিঙ্ক, সালফার ইত্যাদির মাত্রা নির্ধারণ করে প্রয়োজনীয় সার ব্যবহার করে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করা যায়। | যে মাটিতে PH (অম্লাত্মক-ক্ষারত্মক)। মাত্রা ৬.০ থেকে ৭.০ সেসব মাটিতে গম ভালো হয়। |
পাট চাষোপযোগী মাটির বৈশিষ্ট্য | ডাল চাষোপযোগী মাটির বৈশিষ্ট্য |
|---|---|
ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, মেঘনা প্রভৃতি নদ-নদীর পলিবাহিত উর্বর সমতল ভূমিতে পাট ভালো জন্মে। | উঁচু ও মাঝারি জমিতে দোআঁশ, বেলে দোআঁশ, এঁটেল দোআঁশ এবং পলি দোআঁশ মাটিতে ডাল জাতীয় ফসল জন্মে। ডাল ফসল অতিরিক্ত পানি সহ্য করতে পারেনা। তাই নিষ্কাশনযোগ্য মাটিই ডাল চাষের জন্য উপযোগী। |
নদীবাহিত গভীর পলিমাটি পাট চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী। | ডাল নিরপেক্ষ বা ক্ষারীয় চুনযুক্ত মাটিতে ভালো হয়। |
দোআঁশ ও বেলে দোআঁশ মাটিতেও পাট ভালো জন্যে। | শুষ্ক ও ঠাণ্ডা আবহওয়া এবং অল্প বৃষ্টিপাত ডাল ফসল চাষের জন্য উপযোগী। যদি এরূপ আবহাওয়া ও বৃষ্টিপাত থাকে তবে বেলে দোআঁশ থেকে এঁটেল দোআঁশ প্রকৃতির মাটিতে অবশ্যই ডাল ফসল ভালো ফলন দিবে। |
বিনা চাষে ডাল ফসল আবাদের জন্য নিচু ও মাঝারি জমি নির্বাচন করতে হবে। জমি থেকে বর্ষার পানি নেমে গেলে ভেজা মাটিতে ডাল ফসলের বীজ বোনা হয়। |
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ

