• হোম
  • একাডেমি
  • সাধারণ
  • অষ্টম শ্রেণি
  • কৃষি ও জলবায়ু
কৃষি ও জলবায়ু

পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।

Back

কৃষি ও জলবায়ু

ফসল উৎপাদনে প্রতিকূল পরিবেশ

জলবায়ু ও পরিবেশগত উপাদান স্বাভাবিক থাকলে ফসলের বৃদ্ধি ও বিকাশ স্বাভাবিকভাবে হয়ে থাকে। তবে প্রকৃতি সব সময় স্বাভাবিক থাকে না। কিছু কিছু অঞ্চলে উৎপাদন মৌসুমে ফসলকে জলবায়ু ও পরিবেশগত নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। এ অবস্থাকে প্রতিকূল পরিবেশ বলে। এ ধরনের অবস্থায় ফসল জৈব-রাসায়নিক ও শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তনের মাধ্যমে খাপ খাইয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। একে ফসলের অভিযোজন ক্ষমতা বলে।
আমরা জানবো জলবায়ু ও পরিবেশের কোন উপাদানগুলো ফসল উৎপাদনের জন্য প্রতিকূল পরিবেশের সৃষ্টি করে। প্রতিকূল পরিবেশ সৃষ্টিকারী জলবায়ুগত উপাদানগুলোর মধ্যে রয়েছে-

  • বন্যা বা জলাবদ্ধতা
  • অনাবৃষ্টি বা খরা
  • উচ্চতাপ
  • নিম্নতাপ

আর পরিবেশগত উপাদানের মধ্যে রয়েছে-

  • মাটির লবণাক্ততা
  • মাটিতে বিষাক্ত রাসায়নিকের উপস্থিতি
  • বাতাসে বিষাক্ত গ্যাসের উপস্থিতি

বাংলাদেশের কৃষিতে প্রতিকূল পরিবেশজনিত সমস্যা অনেক আগে থেকেই ছিল। বর্তমানে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রতিকূল পরিবেশজনিত সমস্যা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বাংলাদেশের কৃষি খাতে ৩টি আশঙ্কাজনক ক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়েছে-

  • খরা
  • লবণাক্ততা
  • বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৃষ্টিপাত অনিয়মিতভাবে হচ্ছে। বোরো মৌসুমে এবং আমন মৌসুমে খরার মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৃষ্টিনির্ভর আমন মৌসুমে সাধারণত চাষিদের সেচ দেওয়ার কোনো পূর্বপ্রস্তুতি থাকে না। ফলে নীরব খরায় ধানের ফলন হ্রাস পাচ্ছে।

বরিশাল ছিল একসময় শস্যভাণ্ডার। এখন সেই বরিশাল খাদ্য ঘাটতি এলাকা। মাটি ও পানির লবণাক্ততা বৃদ্ধির ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ লাখ হেক্টর আমন আবাদি জমি চাষের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। বাংলাদেশে প্রায় প্রতিবছর বন্যা হয়ে থাকে। তবে কোনো কোনো বছর ভয়াবহ বন্যার কারণে ব্যাপক ফসলহানি হয়ে থাকে। ১৯৯৮ সালে এ দেশে দীর্ঘস্থায়ী ও ভয়াবহ বন্যায় তিন লক্ষ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হ্রাস পায়। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় বোরো ধান পাকার সময় তলিয়ে যায়। আবার দেশের মধ্যাঞ্চলের বিস্তৃত অঞ্চলে আমন ধান রোপণের সময় বা রোপণ পরবর্তী বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ভয়াবহ বন্যায় ২০০৭ সালে দেশের প্রায় ৬০% এলাকা প্লাবিত হয় এবং ৮ মিলিয়ন হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়। বন্যায় আমন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে উঠার আগেই আবার আঘাত হানে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় 'সিডর'। ফসল উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রায় ১৩ লক্ষ টন। এছাড়াও ২০০৪ সালে বন্যায় ১.৩ মিলিয়ন হেক্টর, ২০০৭ সালে বন্যায় ৮.৯ মিলিয়ন হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয় সর্বশেষ ২০২৪ সালে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি ও নোয়াখালি জেলা ব্যাপক বন্যাকবলিত হয়।

বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। এদেশে প্রতি বছর অন্তত ১% হারে আবাদি জমি কমে যাচ্ছে। পক্ষান্তরে ১.৩৯% হারে জনসংখ্যা বাড়ছে। অন্যদিকে প্রতিকূল পরিবেশের মোকাবিলাও করতে হচ্ছে। এমতাবস্থায় বর্ধিত জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা মেটাতে আমাদের প্রতিকূল পরিবেশে ফসল উৎপাদনের কলাকৌশল জানতে হবে।

পূর্ববর্তী

সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ