- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি
দেশপ্রেম ও জাতীয়তা
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
দেশপ্রেম ও জাতীয়তা
জাতীয়তা ও স্বদেশপ্রেম Nationality and Patriotism
জাতীয়তা ও স্বদেশপ্রেম এক ও অভিন্ন সূত্রে গ্রথিত। জাতীয়তার বিষয়বস্তু মানুষ ও মানুষের আচার-আচরণ। মানুষের মনের ওপর জাতীয়তার প্রভাব তাই অনেক বেশি। জাতীয়তা রাষ্ট্রের নাগরিকতা সম্পর্কিত বিষয়গুলো ব্যাপকভাবে আলোচনা করে। রাষ্ট্রের নাগরিকগণ এ সমস্ত মৌলিক প্রতিষ্ঠান ও এদের কার্যাবলির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যার ফলে নাগরিকগণ পারস্পরিক সম্পর্কের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে প্রত্যেকেই স্বয়ংসম্পূর্ণতার দিকে এগিয়ে যেতে চায়। এক্ষেত্রে মানব মনের মানসিক ধারণাগুলো লালিতপালিত হবার সুযোগ পায়। প্রত্যেকেই প্রত্যেকের প্রয়োজনে মনস্তাত্ত্বিক শান্তি খুঁজে পেতে চায়। প্রত্যেক নাগরিকই নিজের মনের মাধুরী দিয়ে গড়ে তোলে আপন ভুবন।
নাগরিক যে স্থানে জন্মগ্রহণ করে সেখানকার পরিবেশ ও পাশাপাশি জনগোষ্ঠীকে সে আপন করে ভাবে বা প্রাপ্তির সাথে সাথে জন্মস্থানকে আত্মার সাথে একাতা করে বাঁধে। জন্মস্থানের সখ্য সে তার আমৃত্যু বলে ধরে নেয়। দূরে কোথাও গেলে জন্মভূমির আকর্ষণ তাকে বিচলিত করে। এমনিভাবে ক্ষুদ্র পরিসরে জন্মস্থানের ভালোবাসা গভীর থেকে গভীরতর হয় জন্মভূমিকে কেন্দ্র করে। ধীরে ধীরে দেশের মাটি, মানুষ, আবহাওয়া ও সম্পদসহ সকল অণু-পরমাণুর প্রতি গড়ে ওঠে তার আত্মার এক নিবিড় সম্পর্ক, সৃষ্টি হয় দেশপ্রেমের। দেশের প্রতি তার অকৃত্রিম ভালোবাসা কৈশোর, যৌবন এমনকি প্রৌঢ়ত্বের সীমানাকেও ছাড়িয়ে 'যায়। ফলে দেশের জন্য সে জীবন উৎসর্গ করতেও কুণ্ঠিত হয় না।
তাই যুগে-যুগে অনেক মনীষী তাদের কর্মকাণ্ডে দেশপ্রেমের স্বাক্ষর রেখে আমাদের কাছে স্মরণীয় হয়ে আছেন। মহাত্মা গান্ধী, পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস, শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদ বিরোধী নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা প্রমুখ তাদের গভীর দেশপ্রেমের জন্য আমাদের কাছে চিরকাল শ্রদ্ধা ও অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে আছেন। তাদের গভীর দেশপ্রেম, জাতীয়তাবাদী চেতনা সৃষ্টিতে অনবদ্য ভূমিকা পালন করে।
দেশপ্রেম ও জাতীয়তা এক গভীর বন্ধনে আবদ্ধ। দেশপ্রেমের অনুভূতি থেকেই জাতীয়তার জন্ম হয়। তাই জাতীয়তাকে এক ধরনের মানসিক ধারণা বলে ধরে নেওয়া হয়। দেশপ্রেমের প্রবল আবেগ, অনুভূতি, জাতীয়তার সৃষ্টি করে। বিশেষ বিশেষ পরিস্থিতিতে জাতীয়তার চেতনা আবেগে উদ্বেলিত হয়ে ওঠে। জাতীয়তার এই চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাংলাদেশের মানুষ (সাবেক পূর্ব পাকিস্তান) ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা করে। আর এর মূলে রয়েছে গভীর দেশপ্রেম। দেশপ্রেমের প্রবল বেগেই জাতীয়তাবাদী চেতনার সৃষ্টি করে- গতিবেগকে করে বেগবান।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ