- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি
- পরিসংখ্যান, চলক ও প্রতীক
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
পরিসংখ্যান, চলক ও প্রতীক
পরিসংখ্যান (Statistics)
বর্তমানে পরিসংখ্যান একটি বহুল পরিচিত নাম। আজকাল পত্রপত্রিকা, সাময়িকী এবং টেলিভিশনে আমরা প্রায় বিভিন্ন ধরনের পরিসংখ্যান দেখতে পাই। আমাদের প্রাত্যহিক কাজ কর্মে আমরা পরিসংখ্যান ব্যবহার করছি কিন্তু আমরা জানি না, যা ব্যবহার করছি সেটা পরিসংখ্যান।
সাধারণভাবে পরিসংখ্যানের অর্থ হচ্ছে কোনো ঘটনা বা বিষয়ের সংখ্যাত্মক প্রকাশ। তবে প্রাথমিকভাবে পরিসংখ্যান বলতে কোনো বিষয়ে জরিপ কার্য পরিচালনার মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য ও ঐ তথ্যকে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে প্রাপ্ত ফলাফলকে বুঝায়।
বর্তমানে আমাদের জীবনের এমন কোনো ক্ষেত্র খুজে পাওয়া যাবে না যেখানে পরিসংখ্যান ব্যবহৃত হয় না। যেমন:
ঘটনা-০১: আমরা ভাত রান্না করার সময় কিছু ভাত পরীক্ষা করে সম্পূর্ণ পাতিলের ভাত সম্বন্দ্বে সিদ্ধান্ত নিই। পরিসংখ্যানের কাজও হচ্ছে অতীত অভিজ্ঞতা ও বর্তমান সংগৃহীত তথ্যের বিশ্লেষণ করে কোনো বিষয়ের ওপর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা।
ঘটনা-০২: টিভিতে ক্রিকেট খেলা দেখার সময় অনেক তথ্য ভিত্তিক রেকর্ড, গ্রাফ, তালিকা, ওভার প্রতি রান, খেলোয়াড়ের স্ট্রাইক রেট, খেলোয়াড়ের র্যাংকিং দেখতে পাই। এগুলো সবই পরিসংখ্যান।
ঘটনা-০৩: বাড়িতে অনেক সময় বিভিন্ন সংস্থা থেকে আদমশুমারির জন্য, কেউ আবার ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য তথ্য নিতে আসে। এগুলোও পরিসংখ্যানের অংশ।
আরো যেসব ক্ষেত্রে পরিসংখ্যান ব্যবহৃত হয় তা হলো- কোনো দেশের বাজেট, শেয়ার বাজার, মুদ্রা বাজার, নিত্যপ্রযোজনীয় জিনিসের বাজার দর নির্ধারণ, পরীক্ষার ফলাফলের পাশের হার, আবহাওয়ার পূর্বাভাস, অর্থনীতির অধিকাংশ বিষয় যেমন আমদানি, রপ্তানি, উৎপাদন, চাহিদা, সরবরাহ, মূল্য মজুরি, আয়, ব্যয় ইত্যাদি।
প্রাচীনকালেও মানুষ পরিসংখ্যান ব্যবহার করতো যদিও মানুষ তখনও জানতো না তারা প্রাত্যহিক কাজ কর্মে এটি ব্যবহার করছে। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে পরিসংখ্যানের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি ছিল না।
পরিসংখ্যান হলো সংখ্যাত্মক তথ্য নিয়ে গবেষণার বিজ্ঞান। পরিসংখ্যানের সাধারণ অর্থ হচ্ছে কোনো ঘটনা বা বিষয়ের সংখ্যাত্মক প্রকাশ। ভারতের প্রখ্যাত পরিসংখ্যানবিদ পি.সি. মহলানবিশ ইংরেজি শব্দ 'Statistics' এর বাংলা পরিভাষা 'পরিসংখ্যান' করেছেন যা সংখ্যাত্মক তথ্য ও সংখ্যাত্মক পদ্ধতি উভয় অর্থেই ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশের প্রখ্যাত পরিসংখ্যানবিদ ডক্টর কাজী মোতাহার হোসেন "Statistics" শব্দের বাংলা পরিভাষা করেছেন 'তথ্যগণিত'।
বিভিন্ন পরিসংখ্যানবিদের মতামত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে পরিসংখ্যানকে তারা দুইটি অর্থে প্রকাশ করেছেন-
১. একবচন অর্থে
২. বহুবচন অর্থে
যে সকল বিজ্ঞানী পরিসংখ্যানকে একবচন হিসেবে বিবেচনা করেছেন তাদের মধ্যে আর এ ফিশার, ক্রক্সটন, কাউডেন এর নাম উল্লেখযোগ্য।
একবচন অর্থে পরিসংখ্যান হলো সেইসব নীতি বা সূত্র যার মাধ্যমে সংখ্যাত্মক তথ্যকে ব্যাখ্যা করা যায়।
যে সকল বিজ্ঞানী পরিসংখ্যানকে বহুবচন হিসেবে বিবেচনা করেছেন তাদের মধ্যে ইউল এন্ড কেন্ডাল, ওয়েবস্টার, বাউলী, কন্নর এর নাম উল্লেখযোগ্য।
বহুবচন অর্থে পরিসংখ্যান হলো তথ্যানুসন্ধানে প্রাপ্ত, বহুবিধ কারণ দ্বারা প্রভাবিত, সুশৃঙ্খলভাবে সংগৃহীত, সংখ্যাসূচকে প্রকাশিত, পরস্পর সম্পর্কযুক্ত, তুলনাযোগ্য ও সমজাতীয় সমগ্রকের তথ্য।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ