• হোম
  • একাডেমি
  • সাধারণ
  • একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি
  • পরিসংখ্যান, চলক ও প্রতীক
পরিসংখ্যান, চলক ও প্রতীক

পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।

Back

পরিসংখ্যান, চলক ও প্রতীক

পরিসংখ্যানের বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Statistics)

যদিও পরিসংখ্যানকে সংখ্যাত্মক তথ্যের বিজ্ঞান বলা হয় তবুও সকল সংখ্যাত্মক তথ্য যে পরিসংখ্যান হবে তা নিশ্চিত করা যায় না। যে কোনো সংখ্যাত্মক তথ্য পরিসংখ্যান হতে হলে নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যসমূহ থাকা আবশ্যক-

১. সমগ্রকের তথ্য হতে হবে: পরিসংখ্যানিক তথ্যসমূহ কোনো এককের তথ্য নয় বরং সমষ্টির তথ্য। সংগৃহীত তথ্য পরিসংখ্যান হতে হলে তা অবশ্যই সমগ্রকের তথ্য হতে হবে। কোনো নির্দিষ্ট ঘটনা বা বিশেষ পর্যবেক্ষণ বা বিচ্ছিন্ন ঘটনার সংখ্যাত্মক মান কখনও পরিসংখ্যান হতে পারে না। যেমন- কোনো কলেজের পাসের হার বলতে ঐ কলেজের সকল ছাত্র-ছাত্রীর গড় পাস বুঝায়। এটি সমগ্রকের তথ্য, কোনো ছাত্রের একার তথ্য নয়। আবার একজন ছাত্রের উচ্চতা 5 ফুট তা পরিসংখ্যান হবে না। যদি বলা হয় একাদশ শ্রেণির ছাত্রদের গড় উচ্চতা 5 ফুট তবে তা পরিসংখ্যান হবে।

২. পরিসংখ্যানিক তথ্য বহুবিধ কারণ দ্বারা প্রভাবিত হতে: পরিসংখ্যানিক তথ্যের মানের বিভিন্নতা একাধিক কারণের ওপর নির্ভরশীল হতে হবে। একক কারণ দ্বারা এই মান প্রভাবিত হবে না। যেমন- একটি ঘড়ি কোম্পানির বাৎসরিক ঘড়ি বিক্রয়ের পরিমাণ বিভিন্ন কারণ যেমন: ঘড়ির চাহিদা, দাম, সরবরাহ, উৎপাদন, উৎকর্ষতা ইত্যাদির ওপর নির্ভরশীল। এক্ষেত্রে উৎপাদিত ঘড়ির তথ্যকে পরিসংখ্যান বলা যাবে। কিন্তু কোনো একটি বিশেষ কারণ দ্বারা বিক্রয় প্রভাবিত হলে তা পরিসংখ্যানের পর্যায়ে পড়বে না।

৩. পরিসংখ্যানিক তথ্য নির্দিষ্ট তথ্যানুসন্ধান ক্ষেত্র থেকে প্রাপ্ত পরিসংখ্যান হতে হলে যে কোনো তথ্যকে সুনির্দিষ্ট তথ্যানুসন্ধান ক্ষেত্র থেকে প্রাপ্ত হতে হবে। বৈজ্ঞানিক ভিত্তিহীন কোনো সংখ্যা পরিসংখ্যান হবে না। যেমন- কোনো দেশের শিক্ষিতের হার 64%। এখানে 64 সংখ্যাটি পরিসংখ্যান কেননা এটি অনুসন্ধান থেকে প্রাপ্ত তথ্য।

৪. পরিসংখ্যানিক তথ্য সুশৃঙ্খলভাবে সংগৃহীত হতে হবে: পরিসংখ্যানিক গবেষণার উদ্দেশ্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ একটি উপযুক্ত ও সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে সুশৃঙ্খলভাবে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। উদ্দেশ্যহীনভাবে সংগৃহীত তথ্য সঠিক সিদ্ধান্ত দিতে ব্যর্থ। যেমন- ভোটার তালিকা তৈরির জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের সময় মূল উদ্দেশ্যের সাথে সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করতে হবে।

৫. পরিসংখ্যানিক তথ্য সংখ্যাসূচকে প্রকাশিত হতে হবে: কোনো গুণবাচক তথ্যকে পরিসংখ্যান বলা হবে না যতক্ষণ না তা সংখ্যায় প্রকাশ করা যায়। অর্থাৎ, পরিসংখ্যানিক তথ্য অবশ্যই সংখ্যায় প্রকাশ করতে হবে। যেমন- ধনী, গরিব, সৌন্দর্য, বুদ্ধি, বিবেক, পেশা, মেধা ইত্যাদি গুণবাচক তথ্য পরিসংখ্যান হবে না যতক্ষণ না তাদেরকে কোডিং এর মাধ্যমে সংখ্যায় প্রকাশ করা হয়। আবার ওজন, উচ্চতা, সময় ইত্যাদি বিভিন্ন এককের মাধ্যমে সংখ্যায় প্রকাশিত তথ্য পরিসংখ্যান হবে।

৬. পরিসংখ্যানিক তথ্য পরস্পর সম্পর্কযুক্ত, তুলনাযোগ্য ও সমজাতীয় হতে হবে বিচ্ছিন্ন, সম্পর্কহীন বা তুলনাযোগ্য নয় এমন তথ্যকে পরিসংখ্যান বলা যাবে না। তথ্যাবলি পরস্পর সম্পর্কযুক্ত ও একই জাতীয় হলে তাকে পরিসংখ্যান হিসেবে গণ্য করা হবে। যেমন কোনো একটি বিশেষ শ্রেণির ছাত্রদের উচ্চতা ও তাদের বয়স সম্পর্কযুক্ত। কিন্তু একটি শ্রেণির ছাত্রদের উচ্চতা অন্য শ্রেণির ছাত্রদের বয়স কোনো ক্রমেই সম্পর্কযুক্ত নয় তাই তাদের পরিসংখ্যান বলা যায় না। আবার তিন ভাই বোনের মধ্যে শুভ্রর ওজন, নির্ঝরের উচ্চতা এবং সারথির বয়সকে কখনো পরিসংখ্যান বলা যায় না কারণ এগুলো সমজাতীয় ও তুলনাযোগ্য নয়। অপরদিকে শুভ্র, নির্ঝর, সারথির বয়স যথাক্রমে 3, 5, 7 বছর হলে তাদের বয়সের তথ্যকে পরিসংখ্যান বলা যাবে। কারণ এগুলো সমজাতীয় ও তুলনাযোগ্য।

৭. পরিসংখ্যানিক তথ্য সংগ্রহের একটি বিশেষ উদ্দেশ্য থাকতে হবে: পরিসংখ্যানিক গবেষণার উদ্দেশ্য পূর্ব নির্ধারিত ও সুস্পষ্ট হতে হবে। কারণ তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্র, তথ্যের একক, তথ্যের শুদ্ধতার মাত্রা প্রভৃতি বিষয়াদি নির্ভর করে কী উদ্দেশ্যে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে তার ওপর। যেমন- কৃষি শুমারীতে সংগৃহিত তথ্য বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়নে গবেষণার জন্যই সংগ্রহ করা হয়। পরিসংখ্যান ছাড়া বিজ্ঞান, ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি বা অন্যান্য যে কোনো বিষয়ের নীতি প্রণয়ন কিংবা সঠিক সিদ্ধান্ত প্রদান প্রায় অসম্ভব। তাই এর জন্য প্রথমেই যে জিনিসটি দরকার তা হলো পরিসংখ্যানিক তথ্য। আর পরিসংখ্যানিক তথ্য হতে হলে উপরের সমস্ত বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হতে হবে।

সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ