• হোম
  • একাডেমি
  • সাধারণ
  • একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি
  • পরিসংখ্যান, চলক ও প্রতীক
পরিসংখ্যান, চলক ও প্রতীক

পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।

Back

পরিসংখ্যান, চলক ও প্রতীক

পরিসংখ্যানের কার্যাবলি (Functions of Statistics)

বিভিন্ন পরিসংখ্যানবিদ বিভিন্নভাবে পরিসংখ্যানকে সংজ্ঞায়িত করেছেন। তাদের মতামতগুলো বিশ্লেষণ করলে পরিসংখ্যানের কার্যাবলির একটি ধারণা পাওয়া যায়। যেমন-
Croxton and Cowden-এর মতে, "Statistics may be defined as the collection, presentation, analysis and interpretation of numerical data." অর্থাৎ সংখ্যাত্মক তথ্যাবলি সংগ্রহ, উপস্থাপন, বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা প্রদান করাকেই পরিসংখ্যান বলা হয়।

কোনো ঘটনা নিয়ে সংখ্যাত্মক গবেষণা করাই হলো পরিসংখ্যানের প্রধান উদ্দেশ্য। এই সংখ্যাত্মক উপাত্ত অনুসন্ধানের প্রাথমিক পরিকল্পনা থেকে শুরু করে চূড়ান্ত তাৎপর্য ব্যাখ্যা প্রদান সংক্রান্ত যাবতীয় পদক্ষেপই হচ্ছে পরিসংখ্যানের কার্যাবলি।

পরিসংখ্যানের কার্যাবলি ফ্লো-চার্টের মাধ্যমে দেখানো হলো-

যে কোনো অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেয়ার পদ্ধতির ওপর ভিত্তি করে পরিসংখ্যানের কার্যাবলিকে প্রধানত কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়-

১. সুনির্দিষ্ট তথ্যানুসন্ধান থেকে তথ্য সংগ্রহ (Data collection)
২. শ্রেণিবদ্ধকরণ (Classification)
৩. সারণিবদ্ধকরণ (Tabulation)
৪. তথ্যাবলির উপস্থাপন (Presentation of data)
৫. তথ্য বিশ্লেষণ (Analysis of data)
৬. ব্যাখ্যাকরণ (Interpretation)
৭. সম্পর্ক নির্ণয় (Determining relationship)

পরিসংখ্যানের কার্যাবলির ধাপগুলো নিচে আলোচনা করা হলো-

১. সুনির্দিষ্ট তথ্যানুসন্ধান ক্ষেত্র থেকে তথ্যসংগ্রহ: যে কোনো পরিসংখ্যানিক অনুসন্ধানের প্রথম ধাপ হচ্ছে সুনির্দিষ্ট তথ্যানুসন্ধান থেকে তথ্য সংগ্রহ করা। ভিত্তিহীন ক্ষেত্র হতে সংগৃহীত তথ্য সঠিক সিদ্ধান্ত দিতে ব্যর্থ হয়।

২. শ্রেণিবদ্ধকরণ: পরিসংখ্যানিক গবেষণার দ্বিতীয় পর্যায় হলো তথ্যের বৈশিষ্ট্য অনুসারে শ্রেণিবদ্ধ করা। সংগৃহীত তথ্য প্রথম অবস্থায় এলোমেলো থাকে এবং এ থেকে কোনো কিছু বোঝার উপায় থাকে না। অবিন্যস্ত তথ্য শ্রেণিবদ্ধকরণের দ্বারা বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য অনুসারে বিভিন্ন শ্রেণিতে সাজিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের উপযোগী করা হয়।

৩. সারণিবদ্ধকরণ: সংগৃহীত তথ্যসমূহ সহজ, সুশৃঙ্খল ও সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করা পরিসংখ্যানের অন্যতম কাজ। তথ্য প্রক্রিয়াকরণের শেষ পর্যায়ে সারণিবদ্ধকরণের দ্বারা তথ্যসমূহকে সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করা হয়।

৪. তথ্যাবলির উপস্থাপন: ছক, সারণি, লেখ ও চিত্রের মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্যকে উপস্থাপন করে বিশ্লেষণ ও তত্ত্ব উৎঘাটনের কাজ সহজ করা হয়। তথ্য সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াকরণের পর পরিসংখ্যানীয় অনুসন্ধানের পরবর্তী স্তর হলো তথ্য উপস্থাপন।

৫. তথ্য বিশ্লেষণ: তথ্য বিশ্লেষণ করা পরিসংখ্যানের অন্যতম প্রধান কাজ। বিভিন্ন ধরনের পরিসংখ্যানিক সূত্র প্রয়োগ করে তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়। তথ্য বিশ্লেষণে সাধারণত গড়,মধ্যমা, প্রচুরক, সম্ভাবনা, সহসম্বন্ধ, নির্ভরণ ইত্যাদি পরিসংখ্যানিক সূত্র ব্যবহার করা হয়।

৬. ব্যাখ্যাকরণ: তথ্য বিশ্লেষণ করে বিশ্লেষণে প্রাপ্ত ফলাফলের ওপর যথাযথ ব্যাখ্যা প্রদান করে সে অনুয়ায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

৭. সম্পর্ক নির্ণয়: সংগৃহীত তথ্যসমূহের ওপর সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যাখ্যা প্রদানের পরবর্তী স্তর হচ্ছে ঘটনাসমূহের মধ্যে কার্যকরী সম্পর্ক নিরূপণ করা।

পরিসংখ্যান উপরোক্ত কার্যাবলি ছাড়াও আরো যেসব কাজ করে তা হলো-

  • জটিল তথ্যকে সহজ ও বোধগম্য করে।
  • ভবিষ্যদ্বাণীকরণে সাহায্য করে।
  • নীতি নির্ধারণে সহায়তা করে।
  • বিভিন্ন তথ্যের মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয় করে।
  • বৈজ্ঞানিক সূত্র প্রমাণ করে।
  • অনিশ্চয়তা পরিমাপ করে।

পরিশেষে বলা যায়, পরিসংখ্যান সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, ব্যবসায়িক, বৈজ্ঞানিক ইত্যাদি ক্ষেত্রে ঘটনার অনিশ্চয়তা সম্পর্কে ধারণা দেয় এবং যথার্থ সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে।

সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ