- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- অষ্টম শ্রেণি
- কৃষিজ উৎপাদন
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
কৃষিজ উৎপাদন
গম চাষপদ্ধতি
দানা ফসল শর্করার প্রধান উৎস। এ কারণে পৃথিবীর সকল দেশে খাদ্যশস্য হিসেবে দানা ফসল চাষ করা হয়। বিশ্বের অনেক দেশে গম প্রধান খাদ্যশস্য। বাংলাদেশে ধানের পরে খাদ্যশস্য হিসেবে গমের অবস্থান দ্বিতীয়। বর্তমানে দেশের প্রায় সব জেলাতেই গমের চাষ করা হয়। তবে দিনাজপুর, রংপুর, ঠাকুরগাঁও, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, জামালপুর, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলায় বেশি চাষ হয়। বাংলাদেশে গমের অনেক উচ্চফলনশীল অনুমোদিত জাত রয়েছে। তন্মধ্যে কাঞ্চন, আব্বর, অঘ্রাণী, প্রতিভা, সৌরভ, গৌরব, শতাব্দী, প্রদীপ, বিজয় ইত্যাদি জাত জনপ্রিয়।
বপন সময়: গম শীতকালীন ফসল। বাংলাদেশে শীতকাল স্বল্পস্থায়ী। এ কারণে গমের ভালো ফলন পেতে হলে সঠিক সময়ে গম বীজ বপন করা উচিত। আমাদের দেশে নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ডিসেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত গম বপনের উপযুক্ত সময়। উঁচু ও মাঝারি দোঁআশ মাটিতে গম ভালো জন্মে। তবে লোনা মাটিতে গমের ফলন কম হয়। যেসব এলাকায় ধান কাটতে ও জমি তৈরি করতে দেরি হয় সেসব এলাকায় কাঞ্চন, আকবর, প্রতিভা, গৌরব চাষ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।
বীজের হার: বীজ গজানোর হার শতকরা ৮৫ ভাগের বেশি হলে ভালো। এক হেক্টর জমিতে ১২০ কেজি গম বীজ বপন করতে হয়। বপনের আগে বীজ শোধন করে নিলে বীজবাহিত অনেক রোগ প্রতিরোধ করা যায়। প্রতি কেজি বীজ ৩ গ্রাম প্রভেক্স ২০০-এর সাথে ভালো করে মিশিয়ে বীজ শোধন করা যায়।
বপন পদ্ধতি: জমিতে জো (যে অবস্থায় জমিতে কাঙ্খিত পানি উপস্থিত থাকে, তাকে জো বলে) এলে ৩-৪টি চাষ ও মই দিয়ে জমি ভালোভাবে তৈরি করতে হবে। জমিতে পর্যাপ্ত রস না থাকলে সেচ দেওয়ার পর জো এলে চাষ দিতে হবে। সারিতে বা ছিটিয়ে গম বীজ বপন করা যায়। ছিটিয়ে বপন করলে শেষ চাষের সময় সার ও বীজ ছিটিয়ে মই দিয়ে বীজ ঢেকে দিতে হয়। সারিতে বপনের ক্ষেত্রে জমি তৈরির পর ছোট হাত লাঙল দিয়ে ২০ সে.মি. দূরে দূরে সরু নালা তৈরি করতে হয়। ৪-৫ সে.মি. গভীর নালায় বীজ বপন করে মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হয়। বপনের ১৫ দিন পর পর্যন্ত পাখি তাড়ানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
সার প্রয়োগ পদ্ধতি: সেচসহ চাষের ক্ষেত্রে মোট ইউরিয়া সারের তিন ভাগের দুই ভাগ এবং সবটুকু টিএসপি, এমওপি ও জিপসাম সার শেষ চাষের সময় দিতে হবে। বাকি এক ভাগ ইউরিয়া সার প্রথম সেচের সময় উপরি প্রয়োগ করতে হবে। সেচ ছাড়া চাষের ক্ষেত্রে পুরো ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি এবং জিপসাম সার শেষ চাষের সময় জমিতে দিতে হবে।
গম চাষে সার প্রয়োগের পরিমাণ নিচের তালিকায় দেওয়া হলো:
সারের নাম | সারের পরিমাণ/হেক্টর | সারের পরিমাণ/হেক্টর |
|---|---|---|
সেচসহ | সেচ ছাড়া | |
ইউরিয়া | ২০০ কেজি | ১৬০ কেজি |
টিএসপি | ১৬০ কেজি | ১৬০ কেজি |
এমওপি | ৪৫ কেজি | ৩৫ কেজি |
জিপসাম | ১১৫ কেজি | ৮০ কেজি |
গোবর/কম্পোস্ট সার | ৮.৫ টন | ৮.৫ টন |
পানি সেচ: মাটির বুনটের প্রকার অনুযায়ী গম চাষে ২-৩টি সেচের প্রয়োজন হয়। প্রথম সেচ চারার তিন পাতার সময়, দ্বিতীয় সেচ গমের শিষ বের হওয়ার সময় এবং তৃতীয় সেচ দানা গঠনের সময় দিতে হবে।
আগাছা দমন: সার, সেচের পানি ইত্যাদিতে আগাছা ভাগ বসায়। ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগের আগে নিড়ানি দিতে হবে। উপরি প্রয়োগের পর সেচ দিতে হবে। গম ক্ষেত আগাছামুক্ত রাখার জন্য কমপক্ষে দুবার নিড়ানি দিতে হবে।
ফসল সংগ্রহ: গম পাকলে গাছ হলদে হয়ে মরে যায়। তালুতে শিষ নিয়ে ঘষলে দানা বের হয়ে আসবে। এ অবস্থায় গম কেটে ভালোভাবে শুকিয়ে মাড়াই যন্ত্র দিয়ে মাড়াই করতে হবে।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ

