- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- অষ্টম শ্রেণি
- কৃষিজ উৎপাদন
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
কৃষিজ উৎপাদন
মিশ্র চাষের জন্য আদর্শ পুকুর
মিশ্র চাষের জন্য উপযোগী পুকুর নির্বাচনে যে বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হবে তা হচ্ছে-
- পুকুরটি বন্যামুক্ত হবে। এজন্য পুকুরের পাড় অবশ্যই উঁচু ও মজবুত হবে।
- পুকুরের পানির গড় গভীরতা ২-৩ মিটার হবে এবং শুষ্ক মৌসুমে সময় পানির গভীরতা হবে কমপক্ষে ১ মিটার।
- দো-আঁশ, এঁটেল দো-আঁশ বা এঁটেল মাটির পুকুর সবচেয়ে ভালো। কারণ এ মাটির পানি ধারণক্ষমতা বেশি।
- পূর্ব, দক্ষিণ ও পশ্চিম পাড়ে বড়ো গাছ থাকবে না।
- পুকুরটি খোলামেলা হবে যেন প্রচুর আলোবাতাস পায়।
- আয়তন ৩০-৫০ শতক হলে ব্যবস্থাপনায় সুবিধা হয়।
- রাক্ষুসে মাছ ও ক্ষতিকারক পোকামাকড় থাকবে না।
- পুকুরে আগাছা থাকবে না।
- পুকুরের তলায় বেশি কাদা থাকবে না।
মাছের জীবনধারণের মাধ্যম হচ্ছে পানি। পুকুরের পানির গুণাগুণ মাছ চাষে সরাসরি প্রভাব ফেলে। একটি উৎপাদনশীল পুকুরের পানির নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলো খেয়াল রাখা প্রয়োজন-
১। গভীরতা মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য হচ্ছে প্লাংকটন। এটি উৎপাদনের জন্য সূর্যালোক দরকার। পুকুরের পানির গভীরতা বেশি হলে সূর্যালোক পানির অতি গভীরে পৌঁছাতে পারে না। তাই পর্যাপ্ত প্লাংকটন তৈরি হয় না। আবার গভীরতা কম হলে পানি অতিরিক্ত গরম হয়ে যেতে পারে ও পুকুরের তলদেশে আগাছা জন্মাতে পারে।
২। পানির ঘোলাত্ব: পুকুরে ভাসমান কাদা ও মাটির কণা ঘোলাত্ব সৃষ্টি করে। তা ছাড়া বৃষ্টি হলে পুকুরের পানি ঘোলাটে হয়ে যেতে পারে। ফলে পানিতে সূর্যের আলো প্রবেশে বাধা পায়, এবং পানিতে খাদ্য তৈরি হয় না। মাছের ফুলকা নষ্ট হয়ে যায়। এ সমস্যা প্রতিকারের উদ্দেশ্যে প্রতি শতকে ৩০ সে.মি. গভীরতার জন্য ২৪০-২৫০ গ্রাম ফিটকিরি অথবা প্রতি শতকে ১.২ কেজি খড় দেওয়া যেতে পারে।
৩। পানির রং: পানির রং ঘন সবুজ হয়ে যাওয়া বা পানির উপর শেওলার স্তর পড়া মাছের জন্য ক্ষতিকর। প্রতি শতকে ১২-১৫ গ্রাম তুঁতের ছোটো ছোটো পোটলা বেঁধে রাখলে পানিতে ঢেউয়ের ফলে তুঁত পানিতে মিশে শেওলা দমন করে। অতিরিক্ত আয়রন বা লাল শেওলার জন্য পানির উপর লাল স্তর পড়তে পারে। এ জন্য পুকুরে অক্সিজেনের ঘাটতি হয়। খড়ের বিচালি বা কলাগাছের পাতা পেঁচিয়ে দড়ি তৈরি করে পানির উপর দিয়ে টেনে তা তুলে ফেলা যায়। পানির রং যদি হালকা সবুজ, লালচে সবুজ ও বাদামি সবুজ হয় তবে বোঝা যাবে যে, পানিতে মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য প্লাংকটন পরিমিত পরিমাণ আছে।
৪। তাপমাত্রা: পানির তাপমাত্রা কমে গেলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় ও মাছের খাদ্য গ্রহণের হার কমে যায়। আবার তাপমাত্রা বেড়ে গেলে খাদ্য গ্রহণের হার বেড়ে যায়। এজন্য শীতকালে সার ও সম্পূরক খাদ্যের পরিমাণ কিছুটা কমিয়ে দিতে হয়। বুই জাতীয় মাছ ২৫-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সবচেয়ে ভালো হয়।
৫। দ্রবীভূত গ্যাস: মাছ তার শ্বাসকার্য পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেন থেকে ফুলকার সাহায্যে গ্রহণ করে। পুকুরে বিভিন্ন প্রাণী, উদ্ভিদ ও শেওলার অতিরিক্ত পচন, মেঘলা আবহাওয়া, ঘোলাত্ব, পানিতে অতিরিক্ত লৌহের উপস্থিতির কারণে অক্সিজেন কমে যায়। সে সাথে কার্বনডাই-অক্সাইড ও অন্যান্য বিষাক্ত গ্যাস বেড়ে যায়। অক্সিজেনের পরিমাণ কমে গেলে মাছ পানির উপর ভেসে মুখ হাঁ করে খাবি খেতে থাকে। কৃত্রিম উপায়ে পুকুরে বাঁশ পিটিয়ে, সাঁতার কেটে এ অবস্থা দূর করা যায়।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ

