- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- অষ্টম শ্রেণি
- কৃষিজ উৎপাদন
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
কৃষিজ উৎপাদন
মাশরুম চাষ পদ্ধতি
বাংলাদেশে গ্রীষ্মকালে চাষ করা যায় মিল্কি, ঋষি ও স্ট্র মাশরুম এবং শীতকালে শীতাকে, বাটন, শিমাজি ও ইনোকি মাশরুম। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি চাষ করা হয় বারোমাসি ওয়েস্টার মাশরুম। বিভিন্ন ধরনের মাশরুম চাষে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। আমরা এ পাঠে ওয়েস্টার মাশরুম চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানব।
মাশরুমের বীজ বা স্পন তৈরি: মাশরুমের বীজ ল্যাবরেটরিতে টিস্যু কালচারের মাধ্যমে উৎপাদন করা হয়। চাষি পর্যায়ে মাশরুম চাষের জন্য প্যাকেটজাত বীজ কিনতে পাওয়া যায় যাকে বাণিজ্যিক স্পন বলে। আবার খড় দিয়ে চাষিরা নিজেরাও স্পন তৈরি করে নিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে চাষিদেরকে বাজার থেকে মাদার স্পন সংগ্রহ করে স্পন তৈরি করে নিতে হয়।
চাষঘর তৈরি: মাশরুম চাষের ঘরটিতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন প্রবেশের জন্য জানালা রাখতে হবে। ঘরটিতে আবছা আলোর ব্যবস্থা রাখতে হবে। ঘরের তাপমাত্রা ২০-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। মাশরুম আর্দ্র অবস্থা পছন্দ করে। ঘরটিতে ৭০-৮০% আপেক্ষিক আর্দ্রতার ব্যবস্থা করতে হবে। মাশরুম চাষঘরে অসংখ্য অনুজীবের শ্বাস-প্রশ্বাসের ফলে প্রচুর কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপন্ন হয়। কার্বন ডাই অক্সাইড ভারী বলে নিচের দিকে জমা হয়। এজন্য বেড়ার নিচে খোলা রাখতে হয়।
স্পন সংগ্রহ: চাষঘর তৈরির পর বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান থেকে পলি প্যাকেটে তৈরি স্পন সংগ্রহ করতে হবে। ভালো স্পনের বৈশিষ্ট্য হলো প্যাকেটটি সুষমভাবে মাইসিলিয়াম দ্বারা পূর্ণ ও সাদা হবে। স্পন সংগ্রহের পর তাড়াতাড়ি প্যাকেট কাটার ব্যবস্থা করতে হবে। কাটতে দেরি হলে বস্তা থেকে প্যাকেট বের করে আলাদা আলাদা জায়গায় ঘরের ঠান্ডা স্থানে রাখতে হবে।
প্যাকেট কর্তন: চাষঘরে বসানোর আগে স্পন প্যাকেট সঠিক নিয়মে কেটে চেঁছে পানিতে চুবিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। স্পন প্যাকেটের কোনাযুক্ত দুই কাঁধ বরাবর প্রতি কাঁধে ৫ সে মি লম্বা এবং ১ ইঞ্চি ব্যাস করে কাটতে হবে। উভয় পার্শ্বের এ কাটা জায়গার সাদা অংশ ব্লেড দিয়ে চেঁছে ফেলতে হবে। এবার প্যাকেটটি ৫-১৫ মিনিট পানিতে উপুড় করে চুবিয়ে নিতে হবে। চুবানোর পর পানি ভালোভাবে ঝরিয়ে সরাসরি চাষঘরের মেঝেতে অথবা তাকে সারি করে সাজিয়ে চাষ করতে হবে।
পরিচর্যা: চাষঘরের মেঝে বা তাকে দুই ইঞ্চি পর পর স্পন সাজাতে হবে। স্পন প্যাকেটের চারপাশের আর্দ্রতা ৭০-৮০% রাখার জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী গরমে ৪-৫ বার, শীতে বা বর্ষায় ২-৩ বার পানি স্প্রে করতে হবে। স্প্রেয়ারের নজল প্যাকেটের এক ফুট উপরে রেখে স্প্রে করতে হবে। আর্দ্রতা ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য স্পন প্যাকেটের উপর কখনো খবরের কাগজ ভিজিয়ে, কখনো বস্তা ভিজিয়ে একটু উঁচু করে রাখতে হবে।
অন্যান্য পরিচর্যা: পরিচর্যা ঠিকমতো হলে ২-৩ দিনের মধ্যে মাশরুমের অঙ্কুর পিনের মতো বের হবে। প্রতি পার্শ্বে ৮-১২টি বড়ো অঙ্কুর রেখে ছোটগুলো কেটে ফেলতে হবে। ৫-৭ দিনের মধ্যে মাশরুম তোলার উপযোগী হবে। প্রথমবার মাশরুম তোলার পর একদিন বিশ্রাম অবস্থায় রাখতে হবে। পরের দিন আগের কাটা অংশে পুনরায় ব্লেড দিয়ে চেঁছে ফেলে পানি স্প্রে করতে হবে। একটি প্যাকেট থেকে ৮-১০ বার মাশরুম সংগ্রহ করা যায়। এতে একটি প্যাকেট থেকে ২০০-২৫০ গ্রাম মাশরুম পাওয়া যাবে।
মাশরুম সংগ্রহ ও সংরক্ষণ মাশরুম যথেষ্ট বড়ো হয়েছে কিন্তু শিরাগুলো ঢিলা হয়নি- এমন অবস্থায় হাত দিয়ে আলতো করে টেনে তুলতে হবে। পরে গোড়া কেটে বাছাই করে পলি ব্যাগে ভরে মুখ বন্ধ করে বাজারজাত করতে হবে। এগুলো ঠান্ডা জায়গায় ২-৩ দিন রেখে খাওয়া যায়। ফ্রিজে রাখলে ৭-৮ দিন ভালো থাকে।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ

