• হোম
  • একাডেমি
  • সাধারণ
  • অষ্টম শ্রেণি
  • কৃষিজ উৎপাদন
কৃষিজ উৎপাদন

পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।

Back

কৃষিজ উৎপাদন

চিংড়ি চাষের জন্য পুকুর নির্বাচন ও প্রস্তুতি

চিংড়ি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ মৎস্যসম্পদ। মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্যের রপ্তানি আয়ের শতকরা প্রায় ৮০ ভাগ আসে হিমায়িত চিংড়ি থেকে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ক্ষেত্রে পোশাকশিল্পের পরেই চিংড়ির স্থান। চিংড়িশিল্পের কাঁচামাল যেমন- চিংড়ির পোনা এ দেশের প্রাকৃতিক উৎস ও হ্যাচারি থেকে সহজেই পাওয়া যায়। তাই এ শিল্পে স্বল্প ব্যয়ে অধিক মুনাফা অর্জন করা যায়। চিংড়ি চাষ বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন সম্ভব। এ দেশের মিঠা ও লোনা পানিতে প্রায় ৬০ প্রজাতির চিংড়ি পাওয়া যায়। এদের সবগুলোই লাভজনকভাবে চাষোপযোগী নয়। আমাদের দেশে বাণিজ্যিকভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চাষোপযোগী মিঠাপানির চিংড়ি প্রজাতিটি হচ্ছে গলদা চিংড়ি এবং লোনাপানির প্রজাতিটি হচ্ছে বাগদা চিংড়ি।

গলদা চিংড়ির মাথা ও দেহ প্রায় সমান। পুরুষ গলদার ২য় জোড়া পা বেশ বড়ো। অপরদিকে বাগদা চিংড়ির মাথা দেহের থেকে ছোট হয়। বাংলাদেশে বর্তমানে চাষের মাধ্যমে চিংড়ি উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার মে.টন। এখানে আমরা মিঠা পানিতে গলদা চিংড়ি চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানব। গলদা একক চাষ ছাড়াও কার্প জাতীয় মাছের সাথে মিশ্রচাষ করা যায়।

গলদা চাষের জন্য পুকুর নির্বাচন: ছোট বড় সব পুকুরেই গলদা চিংড়ি চাষ করা যায়। তবে বড় পুকুর গলদা চিংড়ি চাষের জন্য সুবিধাজনক। গলদা চাষের জন্য নির্বাচিত পুকুরে নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলো থাকা প্রয়োজন-

  • পুকুরটি খোলামেলা হবে যেন পর্যাপ্ত সূর্যের আলো পায়।
  • পুকুরের মাটি এঁটেল, দোঁ-আশ বা বেলে দোঁ-আশ হলে ভালো হয়।
  • পুকুরের পানির গভীরতা ১-১.২ মিটার হওয়া দরকার।
  • পুকুরে পানি সরবরাহ ও নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
  • পুকুর বন্যামুক্ত হতে হবে।
  • পুকুরের পানি দূষণমুক্ত হতে হবে।

পুকুর প্রস্তুতি: আমরা আগের অধ্যায়ে মাছ চাষের জন্য পুকুর প্রস্তুতি সম্পর্কে জেনেছি। মিঠা পানিতে চিংড়ি চাষের জন্য পুকুর প্রস্তুতিও প্রায় অনুরূপ। নিচে সংক্ষেপে চিংড়ি চাষের জন্য পুকুর প্রস্তুতির বিভিন্ন ধাপ উল্লেখ করা হলো-

১। পুকুরের পাড় ভাঙা থাকলে তা মেরামত করতে হবে এবং তলদেশের অতিরিক্ত কাদা তুলে ফেলতে হবে।

২। রাক্ষুসে ও অচাষযোগ্য মাছ থাকলে পুকুর শুকিয়ে অথবা রোটেনন ব্যবহার করে তা অপসারণ করতে হবে।

৩। পুকুরের ভাসমান ও অন্যান্য জলজ আগাছা দূর করতে হবে।

৪। পুকুরে শতকে ১-২ কেজি চুন প্রয়োগ করতে হবে। চুন মাটি ও পানির অম্লতা দূর করে, পানির ঘোলাত্ব দূর করে ও সারের কার্যকারিতা বাড়ায়।

৫। চুন দেওয়ার ৭-১০ দিন পর পুকুরে সার প্রয়োগ করতে হবে। পুকুর প্রস্তুতিকালীন সারের পরিমাণ সম্পর্কে ইতিমধ্যেই আমরা আগের অধ্যায়ে জেনেছি।

সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ