• হোম
  • একাডেমি
  • সাধারণ
  • অষ্টম শ্রেণি
  • কৃষিজ উৎপাদন
কৃষিজ উৎপাদন

পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।

Back

কৃষিজ উৎপাদন

পোনা মজুদ ও মজুদ-পরবর্তী ব্যবস্থাপনা

সার দেওয়ার ৩-৫ দিন পর পুকুরের পানির রং হালকা সবুজ হলে পোনা মজুদ করতে হবে। পোনা মজুদের একদিন আগে গলদা চিংড়ির জন্য আশ্রয়স্থল স্থাপন করতে হবে। কারণ চিংড়ি একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর খোলস বদলায়। খোলস ছাড়ার মাধ্যমেই চিংড়ির বৃদ্ধি ঘটে। খোলস বদলের সময় চিংড়ি দুর্বল থাকে। এ সময় চিংড়ি নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে চায়। এ জন্য নারিকেল, তাল, খেজুর গাছের শুকানো পাতা, ডালপালা ও বাঁশের টুকরো পুকুরের তলদেশে স্থাপন করতে হয় যা চিংড়ির আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহার করে।

প্রাকৃতিক উৎস বা হ্যাচারি হতে সংগৃহীত ১০-১৫ মিলি. মি. আকারের পোনা পানির সাথে খাপ খাইয়ে সাবধানে পুকুরে ছাড়তে হবে। অত্যধিক রোদ বা বৃষ্টির মধ্যে পোনা মজুদ করা উচিত নয়। একক চাষের ক্ষেত্রে প্রতি শতকে ৪০-১২০টি চিংড়ির পোনা ছাড়া যায়। মিশ্র চাষের ক্ষেত্রে শতক প্রতি চিংড়ি ৪৮টি, সিলভার কার্প ৬টি, রুই ৭টি, কাতলা ৭টি, গ্রাস কার্প ১টি ও সরপুটি ৯টি ছাড়া যায়।

পানির অবস্থা পর্যবেক্ষণ: পুকুরে পোনা মজুদের পর নিয়মিত পানির অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। দুই-তিন মাস পর পুকুরের পানি বেশি সবুজ হলে অথবা চিংড়ির অস্বাভাবিক আচরণ দেখা গেলে পানি পরিবর্তনের ব্যবস্থা করতে হবে।

সার প্রয়োগ: প্রাকৃতিক খাদ্য উৎপাদনের জন্য পুকুরে সার দেওয়া দরকার। এ জন্য পুকুরে প্রতিদিন শতক প্রতি গোবর ১৫০-২০০ গ্রাম, ইউরিয়া ৩-৫ গ্রামটি, এসপি ১-২ গ্রাম ও এমওপি ০.৫-১ গ্রাম দেওয়া যেতে পারে। সকালে সূর্যের আলো পড়ার পর সার প্রয়োগ করতে হবে। পানির রং অতিরিক্ত সবুজ হলে সার প্রয়োগ বন্ধ রাখতে হবে।

খাদ্য ব্যবস্থাপনা: চিংড়ির ভালো উৎপাদন পাওয়ার জন্য প্রাকৃতিক খাদ্যের পাশাপাশি সম্পূরক খাবার দেওয়া দরকার। সুষম সম্পূরক খাদ্য তৈরির জন্য চালের কুঁড়া বা গমের ভুসি, খৈল, ফিশমিল, শামুক বা ঝিনুকের খোলসের গুঁড়া, লবণ ও ভিটামিন মিশ্রণ একসাথে মিশিয়ে বল তৈরি করে পুকুরে দেওয়া যায়। পুকুরে বিদ্যমান চিংড়ির মোট ওজনের ৩-৫ ভাগ হারে প্রতিদিন খাদ্য দিতে হবে। এ ছাড়া শামুক বা ঝিনুকের মাংস কুচি কুচি করে কেটে প্রতিদিন একবার করে দিলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। বল আকারে তৈরি ভেজা খাদ্য পুকুরের নির্দিষ্ট স্থানে খাদ্যদানিতে করে দিতে হবে। প্রতিদিনের খাবারকে দুইভাগ করে সকালে ও সন্ধ্যায় পুকুরে প্রয়োগ করতে হবে।

চিংড়ির সম্পূরক খাদ্যতালিকা
ক্রমিক নং
খাদ্য উপকরণ
পরিমাণ (%)
চালের কুঁড়া বা গমের ভুসি
৪০-৬০

খৈল
১০-২০

ফিশমিল
২০-৩০
8
শামুক বা ঝিনুকের খোলসের গুঁড়া
৯.৫

লবণ
০.২৫

ভিটামিন মিশ্রণ
০.২৫

রোগ প্রতিরোধ: দূষিত পরিবেশ, রোগাক্রান্ত পোনা মজুদ, তাপমাত্রা বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে চিংড়িতে রোগ হতে পারে। তবে রোগবালাইয়ের প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ ব্যবস্থাই উত্তম। সুস্থ, সবল পোনা মজুদ ও ভালো ব্যবস্থাপনা করা গেলে রোগের সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। চাষকালীন চিংড়ির কয়েকটি সাধারণ রোগ হচ্ছে খোলস, লেজ ও ফুলকায় কালো দাগ রোগ, খোলস নরম রোগ, চিংড়ির গায়ে শেওলা সমস্যা, পেশি সাদা ও হলদে হয়ে যাওয়া। চিংড়িতে রোগ দেখা দিলে প্রথমেই দ্রুত পানি পরিবর্তন করে নতুন পানি দিতে হবে। পুকুরের পানিতে শতকে ১ কেজি পরিমাণ পাথুরে চুন প্রয়োগ করা যেতে পারে।

সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ