- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি
ই-গভর্নেন্স ও সুশাসন
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
ই-গভর্নেন্স ও সুশাসন
ই-গভর্নেন্সের উদ্দেশ্য | Objectives of E-governance
আধুনিক জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্রে সুশাসন নিশ্চিত করতে ই-গভর্নেন্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সরকারি কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা বৃদ্ধি, সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় জনগণের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করতে সরকারি অফিসসমূহে তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ ও ব্যাপক ব্যবহারই ই-গভর্নেন্সের মূল উদ্দেশ্য। নিম্নে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:
১. উন্নতমানের নাগরিক সেবা: তথ্য ও প্রযুক্তির মাধ্যমে সরকারের উন্নতমানের সেবা জনগণের কাছে পৌঁছানোই ই-গভর্নেন্সের প্রধান উদ্দেশ্য। নাগরিকদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ক্ষেত্রে সহজে দ্রুত তথ্য প্রদান, স্বাস্থ্য রক্ষায় উন্নত চিকিৎসা, চিকিৎসাকেন্দ্র, কৃষকদের জন্য উন্নতমানের সার-বীজ, সেচের খবরাখবর প্রচার ও সরবরাহের মাধ্যমে ই-গভর্নেন্স সহায়তা প্রদান করে।
২. ব্যবসায়-বাণিজ্য ও শিল্পের প্রসার ব্যবসায়-বাণিজ্য ও শিল্পের প্রসারে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে উন্নত লেনদেন ও আদান-প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে ই-গভর্নেন্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৩. জনগণের অংশগ্রহণ ও ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি: রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে জনগণের অংশগ্রহণ এবং এর মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি করা ই-গভর্নেন্সের অন্যতম উদ্দেশ্য। জনগণ বিভিন্ন পণ্য সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য, কর প্রদান, লাইসেন্স সংগ্রহ-নবায়ন, শুল্ক প্রদানসহ প্রয়োজনীয় তথ্যাদি ই-গভর্নেন্সের মাধ্যমে ঘরে বসেই পেতে পারে। তবে সরকারি কর্মকাণ্ডে জনগণের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পায়।
৪. সরকারের দক্ষতা বৃদ্ধি: ই-গভর্নেন্স তথ্য ও প্রযুক্তির মাধ্যমে সরকারের দক্ষতা বৃদ্ধি ও উন্নত ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পারে। ই-গভর্নেন্সের দ্বারা মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ থাকায় মন্ত্রণালয়সমূহের কাজের মান বৃদ্ধি পায়। স্বল্প সময়ে দ্রুত কাজ সম্পাদিত হয়। এতে সরকারের দক্ষতা বাড়ে এবং উন্নত ব্যবস্থাপনা ত্বরান্বিত হয়।
৫. সরকারের আয় বৃদ্ধি: সরকারের আয় বৃদ্ধি করা ই-গভর্নেন্সের অন্যতম লক্ষ্য। ই-গভর্নেন্সের বদৌলতে জনগণ কোনো রকম ঝুট-ঝামেলা ছাড়াই তাদের দেয় কর, খাজনা, শুল্ক ইত্যাদি সহজে প্রদান করতে পারে। এতে সরকারের আয় বৃদ্ধি পায়।
৬. দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি হ্রাস: সরকারি অফিস-আদালত, প্রতিষ্ঠানসমূহে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি হ্রাস করা ই-গভর্নেন্সের অন্যতম লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। জনগণ যদি ঘরে বসে সরকারের বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য পেতে পারে, আবেদন ফরম পূরণ করতে পারে এবং অফিস-আদালতে কম যেতে হয় তাহলে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি অনেকটা কমে যাবে ফলে জনদুর্ভোগ কমবে।
৭. স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা ই-গভর্নেন্স সরকারি কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে। সরকার প্রতিনিয়ত নতুন নতুন তথ্য ই-গভর্নেন্স-এর মাধ্যমে জনগণকে অবহিত করছে। তাই এ প্রক্রিয়ায় সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা ই-গভর্নেন্সের অন্যতম উদ্দেশ্য।
৮. দ্রুতগতিতে কাজ সম্পন্ন কাজের সময় সাশ্রয় করা এবং দ্রুত গতিতে কাজ সম্পাদন করা ই-গভর্নেন্সের অন্যতম উদ্দেশ্য। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে ই-গভর্নেন্স সহজেই সেই উদ্দেশ্য সফল করতে পারে।
৯. সরকার ও জনগণের মধ্যে সু-সম্পর্ক সৃষ্টি: ই-গভর্নেন্স তথ্য ও প্রযুক্তিগত সেবার মাধ্যমে সরকার ও জনগণের মধ্যকার সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করে তোলে। একটি আধুনিক ও কল্যাণমুখী সমাজ প্রতিষ্ঠায় সরকার ও জনগণের মধ্যকার সু-সম্পর্ক খুবই জরুরি।
১০. সুশাসন প্রতিষ্ঠা সুশাসন প্রতিষ্ঠা ই-গভর্নেন্সের অন্যতম মূল লক্ষ্য। জনগণের সার্বিক কল্যাণ সাধনে আধুনিক রাষ্ট্রগুলো যে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য তৎপর সে প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করাই ই-গভর্নেন্সের অন্যতম লক্ষ্য।
১১. শিল্প ও সংস্কৃতির বিকাশ নিজস্ব শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশেও ই-গভর্নেন্স কাজ করে। বর্তমানের আধুনিক সংস্কৃতির যুগে আন্তর্জাতিক সংস্কৃতির সাথে জাতীয় সংস্কৃতির আদান-প্রদান সহজে ঘটছে। এতে জাতীয় নীয় ও নিজস্ব সংস্কৃতি উন্নয়ন হওয়ার সুযোগ ঘটছে।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ