- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি
ই-গভর্নেন্স ও সুশাসন
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
ই-গভর্নেন্স ও সুশাসন
ই-গভর্নেন্সের বৈশিষ্ট্য | Characteristics of E-governance
আধুনিক বিশ্বায়নের যুগে সুশাসন নিশ্চিত করতে এবং অর্থনীতির দ্রুত বিকাশ ও উন্নয়নে তথ্যপ্রযুক্তির ভূমিকা অনস্বীকার্য। আর তথ্যপ্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার ও প্রয়োগে ই-গভর্নেন্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। নিম্নে ই-গভর্নেন্সের বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা করা হলো:
১. ইলেকট্রনিক গভর্নেন্স বা সরকার: ই-গভর্নেন্স শব্দটির উৎপত্তি Electronic Government থেকে। এর অর্থ ইলেকট্রনিক সরকার বা শাসন। ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি ও কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে সরকার পরিচালনা ই-গভর্নেন্স-এর প্রধান বৈশিষ্ট্য।
২. সহজে নাগরিক সেবা জনগণ যাতে সহজে সেবা পেতে পারে, সে কাজটি সম্পন্ন করে তোলা ই-গভর্নেন্সের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য। বিশ্বের সর্বত্র ই-গভর্নেন্সের প্রচলন বাড়ছে। অনলাইনের মাধ্যমে প্রচলিত ডেলিভারি ও সেবা জনগণের মধ্যে সহজলভ্য করা ই-গভর্নেন্সের বৈশিষ্ট্য।
৩. সরকারি কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা সরকারি কর্মকাণ্ড, উন্নয়নমূলক প্রক্রিয়াসমূহ উন্নত করে ই-গভর্নেন্স সরকার, জনগণ ও সুশীল সমাজের মধ্যে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করে। এতে সরকারি কাজের স্বচ্ছতা যেমন দেখা যায়, তেমনি জবাবদিহিতার বিষয়টিও নিশ্চিত হয়।
৪. কেন্দ্রীয় ডাটাবেজ: কেন্দ্রীয় ডাটাবেজ তৈরি ও নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা ই-গভর্নেন্সের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। ই-গভর্নেন্স সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তরের নানামুখী যোগাযোগ সৃষ্টি করে একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি করে।
৫. প্রযুক্তি নির্ভর: ই-গভর্নেন্সের প্রথম ও প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এটি প্রযুক্তি নির্ভর। ই-গভর্নেন্স সম্পূর্ণভাবে আধুনিক প্রযুক্তি, যেমন- কম্পিউটার, ইন্টারনেট, ফ্যাক্স ইত্যাদির ওপর নির্ভরশীল।
৬. দ্রুতগতিতে কাজ সম্পন্ন: ই-গভর্নেন্সের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো দ্রুতগতিতে কাজ সম্পন্ন করা। দ্রুতগতিতে কাজ সম্পন্ন হওয়ায় জনগণের দ্রুত সেবা যেমন নিশ্চিত হয়, তেমনিভাবে সময় ও অর্থের অপচয়ও রোধ হয়।
৭. তথ্যের অবাধ প্রবাহ তথ্যের অবাধ প্রবাহ ই-গভর্নেন্সের আর একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য। কেননা ই-গভর্নেন্সে তথ্যকে ফাইলবন্দি করে রাখা হয় না। নাগরিকগণ যেকোনো সময় যেকোনো স্থান থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে পারে।
৮. সঠিক তথ্য পাওয়ার নিশ্চয়তা: ই-গভর্নেন্সের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো সঠিক তথ্য পাওয়ার নিশ্চয়তা। কারণ ই-গভর্নেন্সে সরাসরি কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন তথ্য প্রদান করে থাকে। এ কারণে ই-গভর্নেন্সে নাগরিকদের সঠিক তথ্য পাওয়ার নিশ্চয়তা থাকে।
৯. দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ ই-গভর্নেন্সের আর একটি বৈশিষ্ট্য হলো এখানে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ থাকে। ই-গভর্নেন্সে দ্রুত তথ্য আদান-প্রদান করা যায় বলে এখানে স্বল্প সময়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায়।
১০. সকলের জন্য সমানভাবে তথ্য পাওয়ার সুযোগ ই-গভর্নেন্সের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো এখানে সকলের জন্য সমানভাবে তথ্য পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। সমাজের উচ্চ শ্রেণি থেকে একেবারে নিম্ন শ্রেণি পর্যন্ত সকলেই সমানভাবে তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন।
১১. দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার হ্রাস দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার হ্রাস করা ই-গভর্নেন্সের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। ই-গভর্নেন্সে কাজের স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার হ্রাস পায়।
১২. লালফিতার দৌরাত্ম্য (Red Tapism) হ্রাস: ই-গভর্নেন্সের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো এটি লালফিতার দৌরাত্ম্য (Red Tapism) হ্রাস করে। লালফিতার দৌরাত্ম্য শব্দটির অর্থ হচ্ছে পূর্ব নজির অন্ধভাবে অনুসরণ করা ও মেনে চলা। ই-গভর্নেন্স আমলাদের এই পূর্ব নজির বা দৃষ্টান্ত (Precedent)-কে হুবহু অন্ধের মতো মেনে চলার পদ্ধতির পরিবর্তন ঘটিয়ে জনকল্যাণকর প্রশাসন গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
১৩. বৈদেশিক বাণিজ্যে গতি বৃদ্ধি ই-গভর্নেন্সের আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো এটি বৈদেশিক বাণিজ্যে গতি বৃদ্ধি করে। ই-গভর্নেন্সের মাধ্যমে সহজে বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে বৈদেশিক বাণিজ্য চুক্তি এবং অর্থ লেনদেন করা সম্ভব।
১৪. দোরগোড়ায় সরকারি সেবা পৌঁছানো ই-গভর্নেন্সের গুরুত্বপূর্ণ একটি বৈশিষ্ট্য হলো এটি সরকারি বিভিন্ন সেবা সহজেই সাধারণ নাগরিকের নিকট পৌছিয়ে দিতে পারে। নাগরিকগণও স্বল্প সময়ে তাদের বিভিন্ন দাবি সরকারকে অবহিত করতে পারে।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ