• হোম
  • একাডেমি
  • সাধারণ
  • একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি
  • পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ
পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ

পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।

Back

পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ

১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন

১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট গঠন ছিল বিরোধী দলগুলোর একটি রাজনৈতিক কৌশল (Political Strategy)। ১৯৫৩ সালের ৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও কৃষক-শ্রমিক পার্টির নেতা শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক ও নেজামে ইসলাম পার্টির নেতা মাওলানা আতাহার আলী যুক্তফ্রন্ট নামে একটি নির্বাচনি জোট গঠন করেন। যুক্তফ্রন্ট গঠনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সক্রিয়া ভূমিকা পালন করেন। পরবতীতে হাজী মোহাম্মদ দানেশের গণতন্ত্রী দল যুক্তফ্রন্টে যোগদান করে। যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনি প্রতীক ছিল 'নৌকা'।

যুক্তফ্রন্টের ২১ দফা কর্মসূচি: মহান একুশে ফেব্রুয়ারির স্মৃতিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনি কর্মসূচিকে ২১টি দফায় ভাগ করা হয়। এই ২১টি দফা কর্মসূচি ছিল নিম্নরূপ-

১. বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দান।

২. বিনা ক্ষতিপূরণে সমস্ত খাজনা আদায়কারী স্বত্ব উচ্ছেদ ও রহিতকরণ এবং ভূমিহীন কৃষকদের মধ্যে উদ্বৃত্ত জমি বিতরণ।

৩. পাট ব্যবসায় জাতীয়করণ। মুসলিম লীগ মন্ত্রিসভার আমলে পাট সংক্রান্ত কেলেঙ্কারির তদন্ত ও শাস্তি প্রদান।

৪. কৃষির উন্নতির জন্য সমবায় কৃষি ব্যবস্থা প্রবর্তন এবং সরকারি সাহায্যে সকল প্রকার কুটির ও হস্তশিল্পের কেলেঙ্কারি তদন্ত ও শাস্তি বিধান।

৫. লবণ তৈরির কারখানা স্থাপন। মুসলিম লীগ মন্ত্রিসভার আমলে লবণ, কেলেঙ্কারির তদন্ত ও শাস্তি বিধান।

৬. শিল্প ও কারিগর শ্রেণির মোহাজেরদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।

৭. খাল খনন ও সেচের ব্যবস্থা করে দেশকে বন্যা ও দুর্ভিক্ষের কবল হতে রক্ষা করা।

৮. শিল্প ও খাদ্যে দেশকে স্বাবলম্বী করা। আই, এল, ওর মূলনীতি অনুযায়ী শ্রমিকদের সকল প্রকার অধিকার নিশ্চিত করা।

৯. দেশের সর্বত্র একযোগে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষার প্রবর্তন।

১০. কেবল মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করা।

১১. ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন প্রভৃতি কালাকানুন বাতিল এবং বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে সরকারি সাহায্য পুষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা।

১২. প্রশাসনিক ব্যয় হ্রাস করা এবং উচ্চ ও নিম্ন বেতনভোগী কর্মচারীদের বেতনের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করা।

১৩. ঘুষ, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি বন্ধ করার লক্ষ্যে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ।

১৪. জননিরাপত্তা আইন ও অর্ডিন্যান্স প্রভৃতি কালাকানুন রদ।

১৫. বিচার বিভাগকে শাসন বিভাগ থেকে পৃথক করা।

১৬. পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন 'বর্ধমান হাউজকে' আপাতত ছাত্রাবাস ও পরে বাংলা ভাষার গবেষণাগারে পরিণত করা।

১৭. ১৯৫২ এর ভাষা শহিদদের স্মরণে শহিদ মিনার নির্মাণ।

১৮. ২১ ফেব্রুয়ারিকে সরকারি ছুটির দিন ঘোষণা।

১৯. ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাব অনুযায়ী পূর্ব বাংলাকে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন প্রদান।

২০. যুক্তফ্রন্টের সরকার কোনো অজুহাতেই আইন পরিষদের আয়ু বাড়াবে না।

২১. আইন পরিষদের কোনো আসন শূন্য হলে, তিন মাসের মধ্যে উপনির্বাচনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তা পূরণ করা।

নির্বাচন প্রস্তুতি: ১৯৫১ সালে পূর্ব বাংলার প্রাদেশিক আইন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা ছিল কিন্তু নানা অজুহাতে পাক শাসকগোষ্ঠী তা বিলম্বিত করতে থাকে। ১৯৪৬ সালে ব্রিটিশ শাসনাধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচন অনুযায়ী প্রাদেশিক আইনসভা চলছিল। নির্বাচনে ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগের পরাজয়ের আশঙ্কাই নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার কারণ ছিল। ১৯৪৯ সালে টাঙ্গাইলে উপনির্বাচনে সরকার দলীয় প্রার্থীর পরাজয় থেকে তা স্পষ্টত ধারণা করা যাচ্ছিল। অবশেষে ১৯৫৪ সালের মার্চ মাসে পূর্ব বাংলার প্রাদেশিক আইন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রাপ্তবয়স্কদের ভোটাধিকারের ভিত্তিতে তা অনুষ্ঠিত হলেও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা তখন পর্যন্ত কার্যকর ছিল। প্রাদেশিক পরিষদের মোট আসন সংখ্যা ছিল ৩০৯। এর মধ্যে ২৩৭টি আসন (৯টি মহিলাসহ) মুসলমান সম্প্রদায়ের জন্য এবং ৭২টি আসন (৬টি মহিলাসহ) অমুসলিমদের জন্য সংরক্ষিত ছিল। ১৫টি মহিলা আসনের মধ্যে ৯টি মুসলমান, ১টি বর্ণ হিন্দু এবং ২টি তফসিলি হিন্দু, ১টি পাকিস্তানি খ্রিষ্টান এবং ২টি বৌদ্ধ মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়। চুয়ান্নর এ নির্বাচনে ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে যুক্তফ্রন্টের আত্মপ্রকাশ ঘটে এবং এই ফ্রন্টের হাতে মুসলিম লীগের শোচনীয় পরাজয় হয়।

প্রধান নির্বাচনি ইস্যু: উল্লিখিত ২১ দফা কর্মসূচির মধ্যে রাষ্ট্রভাষা ও পূর্ব বাংলার পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন দাবি ছিল যুক্তফ্রন্টের প্রধান নির্বাচনি ইস্যু। এছাড়া যুক্তফ্রন্টের নেতারা তাদের নির্বাচনি প্রচারে ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগ সরকারের বিরুদ্ধে লবণ কেলেঙ্কারির ঘটনা সম্মুখে নিয়ে আসেন। তখন দুই থেকে তিন আনার স্থলে প্রতি সের লবণের দাম বৃদ্ধি পেয়ে ১৬ টাকা পর্যন্ত হয় এবং তা ভোটারদের সাংঘাতিকভাবে ক্ষুব্ধ করে। পক্ষান্তরে মুসলিম লীগের সুনির্দিষ্ট কোনো আর্থ-সামাজিক কর্মসূচি ছিল না।

১৯৫৪ সালের নির্বাচনের ফলাফল

১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনে শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে গঠিত যুক্তফ্রন্ট বিপুলভাবে জয়লাভ করে। এই নির্বাচনে ২৩৭টি মুসলিম আসনের মধ্যে যুক্তফ্রন্ট এককভাবে ২২৩টি আসন এবং প্রদত্ত ভোটের শতকরা ৬৪ ভাগ লাভ করে, সরকারি দল মুসলিম লীগ পায় মাত্র ৯টি আসন এবং প্রদত্ত ভোটের শতকরা ২৭%। বাকি ৫টি মুসলিম আসনের মধ্যে ৪টি পান স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এবং ১টি লাভ করে খেলাফতে রব্বানী পার্টি। এরা একত্রে ভোট পায় শতকরা ৯ ভাগ। নির্বাচনের পর একজন স্বতন্ত্র সদস্য মুসলিম লীগে যোগ দিলে ৩০৯ সদস্যবিশিষ্ট প্রাদেশিক আইন পরিষদে এ দলের সদস্য সংখ্যা দাঁড়ায় ১০। নির্বাচনের পর শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের নেতৃত্বে গঠিত মন্ত্রিসভা পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করে।

দলের নাম
আসন সংখ্যা
প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার
যুক্তফ্রন্ট
২২৩
৬৪%
মুসলিম লীগ

২৭%
খেলাফতে রব্বানী


স্বতন্ত্র
8
৯%
সর্বমোট
২৩৭
১০০%

যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভা-১৯৫৪

মন্ত্রিপরিষদ সদস্যদের নাম
বণ্টিত দপ্তর
এ. কে. ফজলুল হক
মুখ্যমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র ও সংস্থাপন
আবু হোসেন সরকার
অর্থ
আতাউর রহমান খান
বেসামরিক সরবরাহ
আবুল মনসুর আহমদ
জনস্বাস্থ্য
কফিলউদ্দিন চৌধুরী
বিচার ও আইন
সৈয়দ আজিজুল হক
শিক্ষা ও রেজিস্ট্রেশন
আবদুস সলিম খান
শিল্প ও শ্রম
শেখ মুজিবুর রহমান
কৃষি, সমবায়, পল্লী উন্নয়ন
আবদুল লতিফ বিশ্বাস
রাজস্ব, ভূমি সংস্কার
আশরাফ আলী চৌধুরী
সড়ক ও গৃহ নির্মাণ
হাশিম উদ্দিন আহমেদ
বাণিজ্য ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন
রাজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী
স্বাস্থ্য
ইউসুফ আলী চৌধুরী
কৃষি, বন ও পাট
মোয়াজ্জেম উদ্দিন হোসেন
জমিদারি অধিগ্রহণ

উল্লেখ্য যে, পাকিস্তানি কেন্দ্রীয় সরকারের ষড়যন্ত্রের ফলে যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভা বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। মাত্র ৫৬ দিন ক্ষমতায় থাকার পর আদমজী পাটকল ও কর্ণফুলিতে বাঙালি-অবাঙালি দাঙ্গার অজুহাতে যুক্তফ্রন্ট সরকারকে বরখাস্ত করা হয়।

১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিজয় ও মুসলিম লীগের পরাজয়ের কারণ

১৯৫৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগের চরম ভরাডুবি ঘটে। যুক্তফ্রন্ট বিপুলভাবে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। যে সব কারণে ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিজয় ও মুসলিম লীগের পরাজয় ঘটে তা নিম্নরূপ-

১. মুসলিম লীগ বিরোধী জোট গঠন ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে মধ্যপন্থি, বামপন্থি, ইসলামপন্থি নির্বিশেষে পূর্ব বাংলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নিয়ে একটি সর্বোচ্চ প্রতিনিধিত্বশীল ও শক্তিশালী নির্বাচনি জোট যুক্তফ্রন্ট গঠন ছিল নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার ক্ষেত্রে খুবই সহায়ক।

২. ভাষা প্রশ্নে বাঙালিদের ক্ষোভ উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করায় ক্ষমতাসীনদের সিদ্ধান্ত বাঙালিদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করে। ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২ সালে পুলিশের গুলিতে কয়েকজন ছাত্র শহিদ হলে ছাত্রসমাজের মধ্যে সৃষ্ট ক্ষোভপশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও বিস্ফোরণের রূপ নেয়। শাসকগোষ্ঠীর জাতিবিরোধী ভাষানীতি এবং ২১ ফেব্রুয়ারির মর্মান্তিক ঘটনা পূর্ব বাংলার জনগণকে কী পরিমাণে বিক্ষুব্ধ করেছিল ৫৪-এর নির্বাচনি ফলাফলে এর প্রতিফলন ঘটে।

৩. যুক্তফ্রন্টের জনপ্রিয় নেতৃত্ব যুক্তফ্রন্টের নেতৃত্বে ছিলেন বাঙালির প্রিয় নেতা ও ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের উত্থাপক শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক, বিরল সাংগঠনিক প্রতিভার অধিকারী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মজলুল জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, তরুণ জননেতা শেখ মুজিবুর রহমান প্রমুখ। পক্ষান্তরে মুসলিম লীগে এ মাপের কোনো গণভিত্তিসম্পন্ন নেতৃত্ব ছিল না।

৪. মুসলিম লীগের কোন্দল সরকারি দল মুসলিম লীগ নানা ক্ষেত্রে শুধু দুর্বল অবস্থানেই ছিল না বরং নির্বাচনের প্রাককালে লীগের নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপদলীয় কোন্দল তীব্র আকার ধারণ করে। বিপরীতে পূর্ব বাংলায় সে সময়ে গুরুত্ব বহনকারী সকল রাজনৈতিক দল ও এলিটবৃন্দ সরকারি দলের বিরুদ্ধে যুক্তফ্রন্ট গঠন করে। একটি ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক অবস্থান গ্রহণ নির্বাচনে জয়লাভের কৌশল হিসেবে অত্যন্ত কার্যকর হয়।

৫. বাঙালিদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ পাকিস্তান সৃষ্টিকে ঘিরে বাঙালিদের স্বপ্ন ছিল তাদের আর্থ-সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অবস্থার উন্নতি ঘটবে কিন্তু নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে তাদের এ স্বপ্ন ভঙ্গ হয়। পূর্ব বাংলার ওপর পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর নতুন ধরনের শাসন-শোষণ ও বৈষম্যমূলক আচরণের ফলে দ্রুত বাঙালিদের মধ্যে উপলব্ধি হয় যে, তারা এক দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হয়ে আরেক দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয়েছে। তাই ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে বাঙালিরা গোপন ব্যালটের মাধ্যামে তাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের প্রতিবাদ জানায়।

৬. স্বায়ত্তশাসনের প্রতি অবজ্ঞা ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর থেকে ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগ নেতৃবৃন্দ পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের প্রতি চরম অবজ্ঞা প্রদর্শন করে আসছিল। যুক্তফ্রন্টের ২১ দফা কর্মসূচিতে স্বায়ত্তশাসনের দাবি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে ব্যাপকভাবে উদ্বুদ্ধ করে।

৭. প্রশাসনিক ব্যর্থতা পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকে খাদ্য সংকট, লবণ সংকট, বন্যা সমস্যাসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে মুসলিম লীগ চরমভাবে ব্যর্থ হয়। তাদের ব্যর্থতা পূর্ব বাংলার জনগণকে যুক্তফ্রন্টের পক্ষে রায় প্রদানে অনুপ্রাণিত করে।

৮. মুসলিম লীগ সরকারের নির্যাতন-নিপীড়ন ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের বিজয়ে মুসলিম লীগ সরকারের নির্যাতন-নিপীড়নমূলক পদক্ষেপ একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। পূর্ব বাংলার প্রাদেশিক স্বায়ত্বশাসনকামী ছাত্র-যুব রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে তারা 'ভারতের চর', 'ইসলামের শত্রু, 'কমিউনিস্ট' নানাভাবে আখ্যায়িত করে নির্যাতন চালাতে থাকে। ফলে পূর্ব বাংলার বিক্ষুব্ধ জনগণ মুসলিম লীগের বিপক্ষে যুক্তফ্রন্টের পক্ষে নির্বাচনে রায় প্রদান করে।

৯. সংবিধান প্রণয়নে ব্যর্থতা পাকিস্তান সৃষ্টির পর দীর্ঘ নয় বছরেও মুসলিম লীগ নেতৃবৃন্দ পাকিস্তানের জন্য একটি সংবিধান প্রণয়নে ব্যর্থ হয়। যুক্তফ্রন্ট নেতৃবৃন্দের দ্রুত সংবিধান প্রণয়নের প্রতিশ্রুতি পূর্ব বাংলার জনগণকে যুক্তফ্রন্টের প্রতি আকৃষ্ট করে তোলে।

১০. অর্থনৈতিক মুক্তির আকাঙ্ক্ষা পূর্ব বাংলার জনগণের প্রতি মুসলিম লীগ নেতৃবৃন্দের চরম অর্থনৈতিক শোষণ, বিমাতাসুলভ আচরণ থেকে মুক্তিলাভের আকাঙ্ক্ষা যুক্তফ্রন্টের বিজয়কে ত্বরান্বিত করে।

সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ