• হোম
  • একাডেমি
  • সাধারণ
  • একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি

নাগরিক অধিকার ও কর্তব্য এবং মানবাধিকার

পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।

Back

নাগরিক অধিকার ও কর্তব্য এবং মানবাধিকার

মানবাধিকারসমূহ Human Right as Declared by UNO

জাতিসংঘ (UNO) এর সাধারণ পরিষদ ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর সকল জাতি ও জনগোষ্ঠীর অগ্রগতির সাধারণ মানদণ্ড হিসেবে সর্বজনীন মানবাধিকারের ঘোষণাপত্র জারি করে। জাতিসংঘ সনদের ৩ থেকে ৩০ নম্বর ধারা পর্যন্ত প্রায় ২৮টি গুরুত্বপূর্ণ মানবাধিকারের ঘোষণা দেওয়া হয়। নিম্নে মানবাধিকার ঘোষণাপত্রের বিভিন্ন ধারা উল্লেখ উল্লেখ করা হলো:
ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকারসমূহ

ধারা-১: বন্ধনহীন অবস্থায় সমমর্যাদা ও অধিকার নিয়ে সকল মানুষ জন্মগ্রহণ করে। তাদেরকে বুদ্ধি ও বিবেক অর্পণ করা হয়েছে এবং ভ্রাতৃত্বমূলক মনোভাব নিয়ে তাদের একে অপরের প্রতি আচরণ করা উচিত।

ধারা-২: যেকোনো ধরনের পার্থক্য যেমন- জাতি, গোত্র, বর্ণ, নারী-পুরুষ, ধর্ম, ভাষা, রাজনৈতিক বা অপর কোনো মতবাদ, জাতীয় বা সামাজিক উৎপত্তি, জন্ম বা অন্য কোনো মর্যাদা নির্বিশেষে প্রত্যেকেই ঘোষণাপত্রে উল্লিখিত সকল অধিকার ও স্বাধিকারের প্রতি যত্নবান।

ধারা-৩: প্রত্যেক ব্যক্তিরই নিজের জীবন, স্বাধীনতা ও নিরাপত্তার অধিকার থাকবে।

ধারা-৪: কাউকে দাসত্বে আবদ্ধ রাখা যাবে না। সকল প্রকার দাসপ্রথা ও দাস ব্যবসায় নিষিদ্ধ থাকবে।

ধারা-৫: কারও প্রতি অমানুষিক নির্যাতন অথবা অবমাননাকর আচরণ অথবা শাস্তি ভোগ করতে বাধ্য করা যাবে না।

ধারা-৬: আইনের দৃষ্টিতে সকলেই সমান।

ধারা-৭: আইনের দৃষ্টিতে সকলেই সমান এবং কোনোরূপ বৈষম্য ছাড়াই সকলেই আইনের দ্বারা সমানভাবে রক্ষিত হওয়ার অধিকার রয়েছে।

ধারা-৮: মৌলিক অধিকার খর্ব করা হলে আদালতে প্রতিকার লাভের ব্যবস্থা থাকবে।

ধারা-৯: বিনা কারণে কাউকে গ্রেফতার, আটক বা নির্বাসিত করা যাবে না।

ধারা-১০: প্রত্যেকেই নিরপেক্ষ ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকারী।

ধারা-১১: কেউ দণ্ডযোগ্য অপরাধে অভিযুক্ত হলে তার আত্মপক্ষ সমর্থনের নিশ্চয়তা থাকবে এবং আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত নির্দোষ বলে দাবি করার অধিকার থাকবে।

ধারা-১২: সকল গৃহের নিরাপত্তা ও যোগাযোগের গোপনীয়তার অধিকার থাকবে।

ধারা-১৩: প্রত্যেকেই রাষ্ট্রের মধ্যে সর্বত্র চলাচল, নিজ দেশ ত্যাগ ও স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের অধিকার পাবে।

ধারা-১৪: প্রত্যেকেই নির্যাতন থেকে আত্মরক্ষার জন্য অন্য দেশে আশ্রয় নিতে পারবে।

ধারা-১৫: প্রত্যেকেরই জাতীয়তার অধিকার থাকবে।

ধারা-১৬: সকলেরই বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনের অধিকার থাকবে এবং বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমানাধিকার থাকবে।

ধারা-১৭: সকলেরই সম্পত্তির অধিকার থাকবে, কাউকে জোরপূর্বক সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।

ধারা-১৮: প্রত্যেকের চিন্তা, বিবেক ও ধর্মীয় স্বাধীনতা থাকবে।

ধারা-১৯: প্রত্যেকের স্বাধীন মতামত প্রকাশের অধিকার থাকবে।

ধারা-২০: 'শান্তিপূর্ণভাবে সম্মিলিত হওয়ার এবং সংগঠনের অধিকার সকলের থাকবে।

ধারা-২১: প্রত্যেকে প্রত্যক্ষভাবে বা অবাধে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে নিজ দেশের সরকারে অংশগ্রহণের অধিকার পাবে।

আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকারসমূহ

ধারা-২২: প্রত্যেকেরই সামাজিক নিরাপত্তা লাভের অধিকার থাকবে।

ধারা-২৩ : কাজ করার অধিকার, যেকোনো পেশা গ্রহণের এবং পারিশ্রমিক লাভ, কাজের ন্যায্য শর্তাদি লাভের অধিকার প্রত্যেকের থাকবে।

ধারা-২৪: প্রত্যেকে কর্মজীবনে বিশ্রাম, অবসর বিনোদনের অধিকার পাবে। কাজের সময়ে সুনির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত বেতন ও ছুটি ভোগের অধিকারও থাকবে।

ধারা-২৫: নিজের ও নিজের পরিবারের স্বাস্থ্য, জীবনমানের উপযোগী খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান ও চিকিৎসা লাভের অধিকার পাবে। এছাড়া বেকারত্ব, রোগব্যাধি, অক্ষমতা, বৈধব্য, বার্ধক্য অথবা দৈবদুর্বিপাকে সামাজিক নিরাপত্তা লাভের অধিকার পাবে। মা ও শিশু বিশেষ যত্নলাভের অধিকার পাবে।

ধারা-২৬: প্রত্যেকেরই শিক্ষা লাভের অধিকার রয়েছে। ব্যক্তিত্বের বিকাশ ও বিকাশ ও যেকোনো কর্মের যোগ্যতা অর্জনের জন্য কারিগরি, বৃত্তিমূলক ও উচ্চশিক্ষা গ্রহণের অধিকার রয়েছে।

ধারা-২৭: প্রত্যেকেরই সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ, শিল্পকলা চর্চা এবং বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির বিকাশে সুযোগ লাভের অধিকার থাকবে।

ধারা-২৮: সকলের জন্যই সামাজিক ও আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলার অধিকার থাকবে।

ধারা-২৯: কেউ জাতিসংঘের আদর্শ ও উদ্দেশ্যের পরিপন্থী কোনো অধিকার ও স্বাধীনতা ভোগ করতে পারবে না।

ধারা-৩০: এই ঘোষণায় উল্লিখিত কোনো বিষয়কে এমনভাবে ব্যাখ্যা করা চলবে না যাতে মনে হয় যে, এ ঘোষণার অন্তর্ভুক্ত কোনো অধিকার বা স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ করার উদ্দেশ্যে কোনো রাষ্ট্র, দল বা ব্যক্তি বিশেষের আত্মত্মনিয়োগের প্রমাণ রয়েছে, তাদের প্রতি অধিকারের ঘোষণা আরোপ করা যাবে না।

সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ