- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি
নাগরিক অধিকার ও কর্তব্য এবং মানবাধিকার
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
নাগরিক অধিকার ও কর্তব্য এবং মানবাধিকার
মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকারের সম্পর্ক Relation Between Fundamental Rights and Human Rights
রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে জীবনের, ব্যক্তিত্বের পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য মৌলিক অধিকার একান্ত অপরিহার্য। মৌলিক অধিকার দেশের সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও বলবৎ হয়। এ অধিকার আইনের মতোই অলঙ্ঘনীয়। মৌলিক অধিকার মানুষের মৌলিক চাহিদা বা প্রয়োজনের সাথে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত। মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি সর্বোচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হয়ে ন্যায়বিচার লাভ করতে পারে। সুতরাং নাগরিক জীবনের বিকাশ ও ব্যক্তির জন্য সেসব অপরিহার্য শর্তাবলি যা দেশের সংবিধান হতে প্রাপ্ত এবং সকলের জন্য মেনে চলা বাধ্যতামূলক, তাই হলো মৌলিক অধিকার।
জাতিসংঘ কর্তৃক মানবজাতির জন্য ঘোষিত ও স্বীকৃত অধিকারসমূহ হলো মানবাধিকার। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নারী-পুরুষ, ধনী-গরিব, রাজনৈতিক মতামত পদমর্যাদা নির্বিশেষে জাতিসংঘ যেসব অধিকারের স্বীকৃতি প্রদান করেছে তাকেই মানবাধিকার বলে। মানবাধিকার সর্বকালে, সর্বযুগে বিশ্বের সকল মানুষের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য।
মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকারের মধ্যে প্রকৃতিগত পার্থক্য খুবই কম। উভয় ধরনের অধিকারের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষের কল্যাণ। রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে এবং বিশ্ব মানবজাতির সদস্য হিসেবে মানুষের ব্যক্তিত্বের বিকাশ ও জীবনের পরিপূর্ণতা অর্জনের জন্যই মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকারের ঘোষণা ও সৃষ্টি। জাতিসংঘ ঘোষিত অধিকাংশ মানবাধিকারই মৌলিক অধিকারের মধ্যে স্থান লাভ করেছে। আবার, বিশ্বের অধিকাংশ রাষ্ট্রের সংবিধানে সংযোজিত মৌলিক অধিকারসমূহ মানবাধিকারের মধ্যে রয়েছে। তা সত্ত্বেও মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকারের মধ্যে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। নিচে তা উল্লেখ করা হলো:
১. মৌলিক অধিকারের চেয়ে মানবাধিকারের পরিধি ও ব্যাপ্তি অনেক ব্যাপক ও বিস্তৃত। মানবাধিকারের পরিধি বিশ্বব্যাপী সকল রাষ্ট্র, জাতির মধ্যে বিস্তৃত। কিন্তু মৌলিক অধিকারের পরিধি নিজ রাষ্ট্রেই সীমাবদ্ধ।
২. মৌলিক অধিকারের উৎস রাষ্ট্রের সংবিধান, আর মানবাধিকারের উৎস হলো জাতিসংঘ।
৩. মৌলিক অধিকারসমূহ একেক রাষ্ট্রে একেক রকম হতে পারে। কিন্তু জাতিসংঘের সদস্য সকল রাষ্ট্রে একই ধরনের মানবাধিকার অনুসৃত হয় বা রক্ষা করা হয়।
৪. রাষ্ট্র ও সংবিধান মৌলিক অধিকারের রক্ষক হিসেবে কাজ করে। অন্যদিকে মানবাধিকারের রক্ষক হলো জাতিসংঘ।
৫. মৌলিক অধিকার সহজে বাস্তবায়ন করা যায় এবং রাষ্ট্র নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা দেয়। কিন্তু মানবাধিকারের বাস্তবায়ন সকল রাষ্ট্রে সহজে সম্ভব হয় না।
৬. মৌলিক অধিকারের আইনগত ভিত্তি রয়েছে। কিন্তু মানবাধিকারের ক্ষেত্রে আইনগত সম্মান বা ভিত্তি নাও থাকতে পারে।
৭. মানবাধিকারের চেয়ে মৌলিক অধিকার সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট।
৮. মৌলিক অধিকার রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক অধিকার। কিন্তু মানবাধিকার আন্তর্জাতিক অধিকার।
৯. মৌলিক অধিকার রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় চেতনাবোধ থেকে বিকাশ লাভ করে। অন্যদিকে মানবাধিকার বিকাশ লাভ করে আন্তর্জাতিক চেতনাবোধ থেকে।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ