- হোম
- স্কুল ১-১২
- সাধারণ
- একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি
ইসলামি শিক্ষা ও সংস্কৃতি || Islamic Education and Culture
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
ইসলামি শিক্ষা ও সংস্কৃতি || Islamic Education and Culture
মক্তবের প্রয়োজনীয়তা- Necessity of Maktab
মুসলিম সমাজে মক্তব একটি বিশেষ প্রভাবক প্রতিষ্ঠান। পরিশীলিত মানবসমাজ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিষয়টি বিভিন্নভাবে বিশ্লেষণ করা যায়। যেমন—
শিক্ষা বিস্তার: শিক্ষা বিস্তারে মুসলিম সমাজে মক্তবের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। অক্ষর জ্ঞানদান, শুদ্ধ পঠন ও প্রয়োজনীয় অন্যান্য বিষয়ে মক্তবে জ্ঞানদান করা হয়।
আদর্শ মানুষ তৈরি: আদর্শ ও নীতিবান মানুষ তৈরির শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান মক্তব। এখানে শৈশবে কোমলমতি শিশুদের সত্য- মিথ্যা, ন্যায়-অন্যায় সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দিয়ে সবসময় সত্য-ন্যায়ের অনুশীলন ও অনুসরণের প্রেরণা দেওয়া হয় । মহানবি (স) বলেছেন, اَحَبُّ النَّاسِ إِلَى اللهِ اَحْسَنُهُمْ خُلُقًا.
অর্থ: আল্লাহর কাছে সেই লোকই অধিক প্রিয়; চরিত্রের বিচারে যে উত্তম (ইবন হিব্বান)।
সহাবস্থানের প্রেরণা: মক্তব সমাজের সবশ্রেণির শিশুকে একই স্থানে এক সুমহান শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলে। এখানে তারা শৃঙ্খলা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করতে শেখে ।
মমত্ববোধের উন্মেষ: মক্তবে একই স্থানে বিভিন্ন বাড়ির ছেলেমেয়ে এক সাথে পড়াশোনা করে। প্রতিদিন তাদের দেখা- সাক্ষাৎ হয়। একটা পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশে তাদের শিশুমন প্রতিদিন একত্রিত হয়। ফলে তাদের মধ্যে পরস্পরের প্রতি মমত্ববোধ ও সহমর্মিতার মনোভাব গড়ে ওঠে।
পাপপ্রবণতা হ্রাস: মক্তবে শিশুকে খুব সহজ ও হৃদয়গ্রাহী ভাষায় পাপ না করার জন্য উৎসাহিত করা হয়। তাকে পাপের পরিণতি ও পাপ না করার পুরস্কার সম্পর্কে অবহিত করা হয়। তার মনে পাপের ব্যাপারে তীব্র ঘৃণা সৃষ্টি করা হয়। ফলে সে পাপ না করায় অভ্যস্ত হয়ে ওঠে, যা তার পাপ-প্রবণতা কমিয়ে আনে।
আখিরাতমুখী জীবনযাপন: মক্তব শিশুকে আখিরাতের জীবন সম্পর্কে অবহিত করে। ফলে দুনিয়ার পাশাপাশি আখিরাতের জীবনও তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। সে আখিরাতমুখী জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়।
আল্লাহ বলেন, অর্থ: আখিরাত সর্বোত্তম ও চিরস্থায়ী (সুরা আল আ'লা: ১৬)।
সদাচারপূর্ণ সামাজিক জীবন: মক্তবে শিশুদেরকে আদব-কায়দা শিক্ষা দেওয়া হয়। সহপাঠী, বন্ধু, মা-বাবা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন এবং অনাত্মীয় অন্যান্য ছোট-বড় মানুষের সাথে আচরণের ইসলামি রীতি শেখায়। মক্তব থেকেই সে বড়দের শ্রদ্ধা এবং ছোটদের স্নেহ করার শিক্ষা পায় ।
হালাল উপার্জন: মত্তবে শেখানো হয় হালাল উপার্জন ছাড়া কোনো ইবাদত কবুল হয় না। সুদ, ঘুষ, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, প্রতারণা, আত্মসাৎ প্রভৃতি উপায়ে উপার্জন করা যে হারাম তাও এখানে অবহিত করা হয় ।
দেশপ্রেমিক নাগরিক গঠন: মক্তবে শিশুদের দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা হয়। তাদেরকে দেশপ্রেমের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অবহিত করা হয়। রাসুলুল্লাহ (স)সহ সকল নবি-রাসুল ও মনীষীর দেশপ্রেমের দৃষ্টান্ত পেশ করা হয়। এভাবে মক্তব শিশুদের দেশকে ভালোবাসায় উৎসাহী করে তোলে।
ধূমপান ও মাদকাসক্তি রোধ: মক্তব শিশুদের মধ্যে ধূমপান ও মাদকবিরোধী চেতনা জাগিয়ে তোলে। এগুলোর ক্ষতি সম্পর্কে জ্ঞান দেয়। ধূমপান ও মাদকাসক্তির অভিশাপ থেকে সমাজকে রক্ষার উপায় শিক্ষা দেয়। ফলে শিশু নিজে যেমন ধূমপান ও মাদকাসক্তি থেকে দূরে থাকে তেমনি সমাজকেও এ অভিশাপ থেকে মুক্ত রাখতে পারে ।
মহানবি (স) বলেছেন,
অর্থ: যাবতীয় মদ হারাম (মুসলিম, দারে কুতনি)।
একক কাজ: মত্তবের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সাতটি বাক্য লেখো ।