- হোম
- স্কুল ১-১২
- সাধারণ
- একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি
ইসলামি শিক্ষা ও সংস্কৃতি || Islamic Education and Culture
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
ইসলামি শিক্ষা ও সংস্কৃতি || Islamic Education and Culture
সাহিত্যে মুসলিম মনীষীদের অবদান- Contributions of Muslim Scholars in Literature
সাহিত্য মানবসভ্যতা ও সমাজের দর্পণ। এটি সমাজের কথা বলে। সাহিত্য সভ্যতার ইতিহাস বহন করে। যে কোনো জাতির সাহিত্য তাদের সমাজ ও সভ্যতার বাস্তব চিত্র তুলে ধরে। ইসলামপূর্ব আরবের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম ছিল না। ইসলাম প্রতিষ্ঠার আগে আরবদের সাহিত্যে বিশৃঙ্খল ও কুরুচিপূর্ণ মানসিকতার বিকাশ ঘটেছে । ইসলামের আবির্ভাবের সূচনালগ্ন থেকে সাহিত্যের ধারা পরিবর্তন হয়ে যায়। সাহিত্যের ক্ষেত্রে সূচনা হয় রুচিশীল নবধারা, যার মোকাবিলায় তাদের নগ্ন সাহিত্য মুখ থুবড়ে পড়ে। সাহিত্য তার মাধুর্যতা ফিরে পায় ।
রাসুলুল্লাহ (স)-এর অবদান
রাসুলুল্লাহ (স)-এর হাদিস সাহিত্যে মুসলিম মনীষীদের পদচারণা সুগম করে তোলে। ব্যক্তিগতভাবে রাসুল (স) শিষ্ট ও সুরুচিসম্পন্ন সাহিত্যের সমঝদার ছিলেন। তিনি এ জাতীয় সাহিত্য চর্চাকে উৎসাহিত করেন। তাঁর উৎসাহ ও পৃষ্ঠপোষকতায় লাবীদ (রা), হাসসান বিন সাবিত (রা), কা'ব বিন যুহাইর (রা) প্রমুখ সাহাবি কবি অমর কাব্য রচনা করে প্রথম সার্থক ইসলামি সাহিত্যের সূচনা করেন ।
খোলাফায়ে রাশিদিন, উমাইয়া ও আব্বাসীয় শাসকদের অবদান
খোলাফায়ে রাশিদার স্বর্ণযুগে খলিফাদের সহযোগিতায় ইসলামি সাহিত্যের গতি অব্যাহত থাকে। চতুর্থ খলিফা হযরত আলি (রা) নিজে 'দিওয়ান-ই-আলি' ও 'নাহজুল বালাগা' নামে শিক্ষামূলক কাব্য সম্ভার উপহার দেন। আব্বাসীয় খলিফা আল-মনসুরের প্রচেষ্টায় প্রাচীন আরবি কবিতাসমূহ গ্রন্থাবদ্ধ হয়। খলিফা হারুন অর রশীদের সময়ে বিশ্ববিখ্যাত আরব্য রূপকথা 'আলিফ লায়লা ওয়া লায়লা' রচিত হয়।
পরবর্তী যুগের মনীষীদের অবদান
মুসলিম কবি সাহিত্যিকদের অবদানে সর্বাধিক সমৃদ্ধ সাহিত্য ভাণ্ডার গড়ে ওঠে উর্দু ও ফার্সি ভাষায়। আমীর খসরু, নূর কুতুবুল আলম, শেখ জাহিদ কাব্য রচনায় নতুন ধারার সূচনা করেন। মাওলানা জালালুদ্দীন রুমী, শেখ সাদী, জামী, নিযামী, হাফিয়, ফেরদৌসী প্রমুখ সাহিত্যে সুফি ভাবধারা ও ইতিহাসমুখিতা সংযুক্ত করেন। ‘দাস্তানে আমীর হামযা' 'মসনবি' 'শাহনামা' 'গুলিস্তা', 'বুস্তা' প্রভৃতি কালজয়ী ফার্সি কাব্যগ্রন্থ। মহাকবি ইকবাল, মির্যা গালিব, কবি হালি প্রমুখ উর্দু সাহিত্যের উন্নতি ও অগ্রগতির চেষ্টা করেন। ইকবালের 'শিকওয়া ওয়া জওয়াবে শিকওয়া' চিন্তাশীল সাহিত্যের শ্রেষ্ঠতম নিদর্শন।
বাংলা সাহিত্যে মুসলিম মনীষীদের অবদান
মুসলিমদের প্রত্যক্ষ অবদানেই বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিকশিত হয়েছে। শাহ মুহাম্মদ সগীর, দৌলত উজির, সৈয়দ সুলতান, আলাওল, কায়কোবাদ, শেখ ফয়জুল্লাহ প্রমুখ বাংলা সাহিত্যের উদ্ভব ও বিকাশে অসামান্য অবদান রাখেন। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী, ফররুখ আহমদ, মীর মশাররফ হোসেন, ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্, গোলাম মোস্তফা, আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ, শেখ আবদুর রহিম, মোজাম্মেল হক, আল মাহমুদ প্রমুখ বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদান রেখে চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছেন।
একক কাজ: সাহিত্যে মুসলিম মনীষীদের অবদান সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত অনুচ্ছেদ লেখো ।