- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- অনার্স
- আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার আর্থসামাজিক পটভূমি
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার আর্থসামাজিক পটভূমি
আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার কয়েকটি বিষয়বস্তু লিখ।
ভূমিকা: রাষ্ট্র ও এর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া সংক্রান্ত ধ্যানধারণা, চিন্তা-চেতনা, বিশ্বাস ও কর্মকাণ্ডের বিষয়বস্তু। সংক্ষেপে বলা যায়-রাষ্ট্র কী? রাষ্ট্রের সাথে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সম্পর্ক কী? রাষ্ট্রের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কী? এই সবই রাষ্ট্রচিন্তার মূল বিষয়বস্তু।
রাষ্ট্রচিন্তার বিষয়বস্তু নিম্নে রাষ্ট্রচিন্তার বিষয়বস্তু সম্পর্কে বিস্তৃত আলোচনা করা হলো-
১. রাষ্ট্রের উৎপত্তি: রাষ্ট্র নামক যে প্রতিষ্ঠানে আমরা বাস করি সেই প্রতিষ্ঠানটির উৎপত্তি কীভাবে হলো এ নিয়ে রাষ্ট্রচিন্তা বিদদের মধ্যে যথেষ্ট মতপার্থক্য রয়েছে। কেউ বলেন, বলপ্রয়োগের মাধ্যমে রাষ্ট্রের উৎপত্তি; কেউ বলেন, সামাজিক চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের উৎপত্তি; আবার কেউ কেউ বলেন, ঐতিহাসিক বিবর্তনই হলো রাষ্ট্রের উৎপত্তির মূল কারণ।
২. রাষ্ট্রের প্রকৃতি: রাষ্ট্র কী সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান? নাকি রাষ্ট্র জবরদস্তিমূলক প্রতিষ্ঠান? এ নিয়ে রাষ্ট্রচিন্তাবিদদের মধ্যে যথেষ্ট মতপার্থক্য বিদ্যমান। আজও এ মতপার্থক্যের অবসান হয়নি। তাই এটি রাষ্ট্রচিন্তার একটি উল্লেখযোগ্য আলোচনার বিষয়।
৩. রাষ্ট্রের কার্যাবলি: অতীতে মনে করা হতো যে, রাষ্ট্রকে বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করা এবং দেশের অভ্যন্তরে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করাই রাষ্ট্রের মুখ্য কাজ। কিন্তু বর্তমানে এ ধারণার পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমানে রাষ্ট্রের নাগরিকদের জীবনের ন্যূনতম প্রয়োজন থেকে শুরু করে স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু প্রদান ও নিশ্চিত করাই রাষ্ট্রের মুখ্য কাজ। আসলে অতীত থেকে শুরু করে বর্তমান পর্যন্ত প্রায় প্রত্যেক যুগেই রাষ্ট্রের কার্যাবলি নিয়ে চিন্তাবিদগণ ছিলেন উদ্বিগ্ন ও আলোচনা মুখর। সুতরাং এটিও রাষ্ট্রচিন্তার আলোচ্যসূচির মধ্যেই পড়ে।
৪. বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে রাষ্ট্রের সম্পর্ক: রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে অবস্থিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রের অধঃস্তন না রাষ্ট্রের সমকক্ষ এ নিয়েও অতীতে চিন্তাবিদদের মধ্যে বেশ মতপার্থক্য ছিল। বর্তমানে অবশ্য এ মতানৈক্যের অবসান ঘটেছে। এখন রাষ্ট্রই শ্রেষ্ঠ এবং রাষ্ট্র অভ্যন্তরস্থ সকল প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রের অধীন। সুতরাং, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে রাষ্ট্রের সম্পর্ক নির্ধারণের বিষয়টি বহু পূর্ব হতেই রাষ্ট্রচিন্তার বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
৫. মানব প্রকৃতি: মানব প্রকৃতি রাষ্ট্রচিন্তার আর একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয়। তাই প্লেটো, এরিস্টটল থেকে শুরু করে টমাস, গ্রাহাম ওয়ালাস ও হবস পর্যন্ত প্রায় সকল রাষ্ট্রচিন্তা বিদই মানব প্রকৃতির স্বরূপ নির্ধারণ করেছেন।
৬. ধর্ম ও নৈতিকতা: ধর্ম ও নৈতিকতা রাষ্ট্রের কতটা স্থান দখল করে আছে, রাষ্ট্র নামক প্রতিষ্ঠানটির ওপর এর প্রভাব কতটা কিংবা সুশীল সমাজ প্রতিষ্ঠায় ধর্ম ও নৈতিকতা কতটা গুরুত্বপূর্ণ প্রভৃতি বিষয়ে রাষ্ট্রচিন্তাবিদগণ আজও সচেতন।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, উপরিউক্ত বিষয়গুলো ছাড়াও রাষ্ট্রচিন্তার বিষয়বস্তুর মধ্যে যেগুলো উল্লেখযোগ্য সেগুলো হচ্ছে- রাষ্ট্রের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য, সরকারের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যকার এবং রাষ্ট্রের সঙ্গে বা রাষ্ট্র অঙ্গীভূত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যক্তি নাগরিকের সম্পর্ক প্রভৃতি
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ