• হোম
  • একাডেমি
  • সাধারণ
  • অনার্স
  • আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার আর্থসামাজিক পটভূমি
আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার আর্থসামাজিক পটভূমি

পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।

Back

আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার আর্থসামাজিক পটভূমি

আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার প্রকৃতি উল্লেখ কর।

ভূমিকা: সমাজ ছাড়া মানুষ বসবাস করতে পারে না। মানুষের স্বভাব ও কার্যাবলি মানবজীবনের পূর্ণ উপলব্ধির জন্য পৃথিবীর অন্যান্য বিষয়ের সাথে মানুষের সম্পর্ক ও ব্যক্তির সাথে অপরাপর ব্যক্তির সম্পর্কের ব্যাপারে সমস্ত সমস্যা নিয়ে রাষ্ট্রদর্শন আলোচনা করে।

আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার প্রকৃতি নিম্নে আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার প্রকৃতি আলোচনা করা হলো-

১. ইতিহাসের সঠিক তথ্য ইতিহাসের সঠিক তথ্য প্রদান করা রাষ্ট্রদর্শনের অন্যতম কাজ। রাষ্ট্রদর্শন অতীত রাষ্ট্রচিন্তা বিদদের বুদ্ধিবৃত্তিক বিষয়গুলোর সাথে পার্থক্য করে একটি সুখী সুন্দর পরিবেশ গড়ার দিক নির্দেশ না দেয়। তাছাড়া অতীতে সমাজের মানুষ কিসে বিশ্বাসী ছিল, জনগণ কি পেতে চায় এবং রাষ্ট্রপ্রধানের সাথে জনগণের সম্পর্ক কেমন ছিল সেগুলো রাষ্ট্রদর্শনের মাধ্যমে জানা যায়।

২. বর্তমান সম্পর্কে ধারণা লাভ: আধুনিক যুগে দুটি মহাযুদ্ধের পর জাতিসংঘ আন্তর্জাতিকতার আদর্শে স্থাপিত হয়। বিজ্ঞানের অভূতপূর্ব উন্নতির ফলে মানুষ আজ আণবিক ও হাইড্রোজেন বোমার সন্ধান পেয়েছে। জাতিসংঘ আজ বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী।

৩. রাষ্ট্র ও সমাজজীবনের বিকাশ: আধুনিক রাষ্ট্রদর্শন শুধু রাষ্ট্রের গঠন, প্রকৃতি ও উদ্দেশ্যই আলোচনা করে ক্ষান্ত হয়নি, এ রাষ্ট্রদর্শন রাষ্ট্রের উৎপত্তি তথা সমাজের উৎপত্তি এবং জীবনের বিকাশ সম্পর্কেও আলোচনা করে। রাষ্ট্র ও সমাজের উৎপত্তি সম্পর্কে রাষ্ট্রদর্শনে বিভিন্ন মতবাদ রয়েছে যেগুলো পড়ে আমরা বিশেষ জ্ঞান লাভ করতে পারি।

৪. রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে আলোচনা: রাষ্ট্রের অভ্যন্ত রে যেসব রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেমন- রাজনৈতিক দল, সংবিধান, সরকার, আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ, বিচার বিভাগ প্রভৃতির সাথে রাষ্ট্রের আচরণ ও সম্পর্ক কিরূপ হবে তাও রাষ্ট্রদর্শনের আলোচ্য বিষয়।

৫. সামাজিক ও রাজনৈতিক বিবর্তন সম্পর্কে ধারণা লাভরাষ্ট্রদর্শন ক্রমবিকাশমান সামাজিক ও রাজনৈতিক বিবর্তনের সুস্পষ্ট আভাস দেয় এবং মানুষের ভবিষ্যতের অন্ধকার পথকে আলোকিত করে জীবনযাত্রাকে সহজ করে তোলে। তাছাড়া রাষ্ট্রদার্শনিকদের স্বকীয়তার আলোকে ভবিষ্যতের সমাজ অনুরঞ্জিত করা সম্ভব হয়।

৬. রাষ্ট্রদার্শনিকদের সম্পর্কে ধারণা লাভ রাষ্ট্রদর্শন ক্রমবিকাশমান সামাজিক ও রাজনৈতিক বিবর্তনের সুস্পষ্ট আভাস দেয় এবং মানুষের ভবিষ্যতের অন্ধকার পথকে আলোকিত করে জীবনযাত্রাকে সহজ করে তোলে। তাছাড়া রাষ্ট্রদার্শনিকদের স্বকীয়তার আলোকে ভবিষ্যতের সমাজ অনুরঞ্জিত করা সম্ভব হয়।

৭. রাষ্ট্রের প্রকৃতি ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে আলোচনা: রাষ্ট্রদর্শন গঠন, প্রকৃতি ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে আলোচনা করে থাকে। রাষ্ট্রের গঠন কিরূপ হবে, অর্থাৎ রাষ্ট্রের আয়তন কিরূপ হবে তা রাষ্ট্রদর্শনের আলোচ্য বিষয়। রাষ্ট্র বড় হবে না ছোট হবে, রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে লোকসংখ্যা কত হবে এবং কোন সরকার জনকল্যাণকর হবে তা রাষ্ট্রদর্শনে আলোচিত হয়।

৮. রাজনৈতিক শব্দের উপযুক্ত ব্যাখ্যা: রাষ্ট্রচিন্তা স্বাধীনতা, সাম্য, গণতন্ত্র ও জাতীয়তা প্রভৃতি রাজনৈতিক শব্দকে উপযুক্ত বা সঠিক ব্যাখ্যা প্রদান করে থাকে। মানুষের জীবনের সাথে যেহেতু এ শব্দগুলো ওতপ্রোতভাবে জড়িত, সেহেতু এ শব্দগুলোর সঠিক অর্থ রাষ্ট্রচিন্তা করে দেয় এবং কিভাবে এগুলোকে বাস্তবভিত্তিক করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করে।

উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, বিভিন্ন যুগে রাষ্ট্রদর্শন বিভিন্ন রূপ ধারণ করেছে এবং সকল যুগের রাষ্ট্র দর্শনেই মানব মনের গঠন ও গতির ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এছাড়া রাষ্ট্রদর্শনে ইতিহাসের মধ্য দিয়ে আমরা পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ চিন্তানায়কের মনোরাজ্যের সাথে পরিচয় লাভ করতে পারি। সর্বোপরি রাষ্ট্রদর্শন ক্রমবিকাশমান সামাজিক ও রাজনৈতিক বিবর্তনের সুস্পষ্ট আভাস দেয় এবং মানুষের ভবিষ্যতের অন্ধকার পথকে আলোকিত করে জীবনযাত্রাকে সহজ করে তোলে।

সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ