• হোম
  • একাডেমি
  • সাধারণ
  • অনার্স
  • আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার আর্থসামাজিক পটভূমি
আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার আর্থসামাজিক পটভূমি

পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।

Back

আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার আর্থসামাজিক পটভূমি

রাষ্ট্রচিন্তার সংজ্ঞা দাও।

ভূমিকা: রাষ্ট্র হলো সমাজজীবনের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ সর্বজনীন প্রতিষ্ঠান। যেসব সামাজিক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে মানুষ যুগ যুগ ধরে চিন্তাভাবনা করে আসছে তন্মধ্যে রাষ্ট্র অন্যতম। এর মাধ্যমেই মানুষের সামাজিক জীবনের সূচনা এবং এর গতি প্রবাহমান। প্রাচীন রাষ্ট্রচিন্তার ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, প্রাচীন গ্রিসে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন চিন্তাবিদ বা রাষ্ট্রদার্শনিক জন্মগ্রহণ করেছিলেন। প্রাচীন গ্রিস ছিল সভ্যতার লীলাভূমি। তখনকার গ্রিস থেকে রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে অন্যান্য রাষ্ট্র সমৃদ্ধ হয়েছে। বিশেষ করে রাজনীতিতে ন্যায়বোধ, স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, যুক্তি ইত্যাদি বিষয় ছিল গ্রিসের রাষ্ট্রচিন্তার মৌলিক দিক।

রাষ্ট্রচিন্তার সংজ্ঞা: সাধারণ ভাষায়, রাষ্ট্রচিন্তা হলো রাষ্ট্র সম্পর্কে বিভিন্ন মনীষীর বিভিন্ন মতবাদ। অর্থাৎ রাষ্ট্রের আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে যুগে যুগে বিভিন্ন মনীষী যে চিন্তাধারা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের স্থান পেয়েছে তাই রাষ্ট্রচিন্তা নামে অভিহিত। অন্য কথায়, বিভিন্ন অবস্থা ও পরিবেশের প্রভাবে রাষ্ট্রদার্শনিকগণ রাষ্ট্র সম্পর্কে যে চিন্তাভাবনা করেন তাকে রাষ্ট্রচিন্তা বলা হয়।

প্রামাণ্য সংজ্ঞা: রাষ্ট্রবিজ্ঞানী আর্নেস্ট বার্কার (Ernest Barker)-এর মতে, "Political theory is the speculation of particular thinkers, which may be remote from actual fact of the time, political thought is the immanent philosophy of the whole age." অর্থাৎ, রাষ্ট্রীয় মতবাদ বিভিন্ন চিন্তাবিদের চিন্তাচেতনা ও গবেষণার ফলস্বরূপ, অনেকাংশেই এটি তাদের সমসাময়িককালের বাস্তব ঘটনাবলি থেকে দূরে থাকে, কিন্তু রাষ্ট্রচিন্তা একটি যুগের বাস্তব ঘটনাবলির স্থায়ী দর্শন।

অধ্যাপক ওয়েপার (Wayper) বলেন, "রাষ্ট্রচিন্তা বলতে সেই মতবাদকে বুঝায় যা রাষ্ট্রের গঠন, প্রকৃতি ও উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা করে।"

অধ্যাপক ফিলিপ ডোয়েল (Philip Doyle)-এর মতে, "মানব প্রকৃতি ও তার কার্যকলাপ, জীবনের সমগ্র অনুভূতির জন্য পৃথিবীর অপরাপর বিষয়ের সাথে মানুষের সম্পর্ক ও সমাজের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে যে দর্শন কাজ করে তাকে রাষ্ট্রদর্শন বা রাষ্ট্রচিন্তা বলে।"

হেনরি বি. মেরো (Henry B. Maro) বলেন, "যে রাজনৈতিক চিন্তাধারা কোনো বিশেষ সময়ে কোনো বিশেষ জনসমাজের ভাবধারা ও বিশ্বাসসমূহের প্রতি ইঙ্গিত করে তাই রাষ্ট্রচিন্তা। অর্থাৎ রাষ্ট্রচিন্তা হলো কোনো কালের বা যুগের রাজনৈতিক ধারণার সমষ্টি।"

অধ্যাপক এইচ, হেলার (H. Heller)-এর মতে, "রাষ্ট্রচিন্তা রাষ্ট্রের স্থিতিশীল পর্যায়গুলো আলোচনা করে।"

উপসংহার: উপরিউক্ত সংজ্ঞাগুলোর আলোকে বলা যায় যে, রাষ্ট্রচিন্তা মূলত রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা, তত্ত্ব প্রদান ও বিশ্লেষণ করে। যেসব দার্শনিক রাষ্ট্র, অভ্যন্তরীণ বিষয়াবলির সাথে মানুষের সম্পর্ক প্রভৃতি নিয়ে আলোচনা করে তারা রাষ্ট্রচিন্তাবিদ বা রাষ্ট্রদার্শনিক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।

সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ