- হোম
- একাডেমি
- সাধারণ
- একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি
- মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসী বাঙালি ও বহির্বিশ্ব
পাঠ্যবিষয় ও অধ্যায়ভিত্তিক একাডেমিক প্রস্তুতির জন্য আমাদের উন্মুক্ত শিক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।
মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসী বাঙালি ও বহির্বিশ্ব
মুক্তিযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভূমিকা
১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে বৃহৎ শক্তিবর্গের মধ্যে ভারতের পরেই সোভিয়েত ইউনিয়নের অবদান চিরস্মরণীয়। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২ এপ্রিল সোভিয়েত ইউনিয়নের (বর্তমান রাশিয়া) তৎকালীন রাষ্ট্রপতি নিকোলাই পদগোর্নি ইয়াহিয়া খানকে এক পত্রের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের প্রতি অমানুষিক নির্যাতন ও রক্তপাত বন্ধের আহ্বান জানান। পাশাপাশি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানান। মুক্তিযুদ্ধের এক পর্যায়ে যখন পাকবাহিনী পর্যুদস্ত তখন পাকিস্তানের অনুরোধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অস্ট্রিয়ার কাছে অবস্থানরত তাদের সপ্তম নৌবহর (বহরে ১৭টি যুদ্ধ জাহাজ) পাকিস্তানের সাহায্যের জন্য ভারত মহাসাগরে পাঠান। এ সংবাদে সোভিয়েত ইউনিয়ন তাদের ভূমধ্যসাগরে অবস্থানরত অষ্টম নৌবহরকে (বহরে ২৬টি যুদ্ধ জাহাজ) বঙ্গোপসাগরে গিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে যুদ্ধ করার নির্দেশ প্রদান করে।
এমতাবস্থায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে সাত দিন অপেক্ষা করে তাদের নৌবহর ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হয়। পরাশক্তিদের মধ্যে ২৪ ফেব্রুয়ারির ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে সোভিয়েত ইউনিয়নই প্রথম বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের নিকট পাকিস্তানের পক্ষে যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাবে সোভিয়েত ইউনিয়ন তিনবার ভেটো দেয়। মুক্তিযুদ্ধের ব্যবহৃত অনেক অস্ত্রই সোভিয়েত ইউনিয়ন সরবরাহ করে। সোভিয়েতের পত্র-পত্রিকা এবং প্রচার মাধ্যমগুলোও সোভিয়েত সরকারের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশে পাকবাহিনীর নির্লজ্জ বর্বরোচিত কাহিনী প্রচার করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশ্ব জনমত সৃষ্টিতে সহায়তা করে। ফলে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃত্বে কিউবা, পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি, বুলগেরিয়া, যুগোশ্লোভাকিয়া, চেকোশ্লোভাকিয়া, পূর্ব জার্মান প্রভৃতি সমাজতান্ত্রিক দেশগুলো আন্তরিকভাবে বাংলাদেশকে সমর্থন জানায়।
বাংলাদেশের পক্ষে সোভিয়েত ইউনিয়নের সমর্থনের কারণ হিসেবে বলা যায়-প্রথমত, পাকিস্তানি সামরিক শাসকবর্গ ছিলেন অতি মাত্রায় ভারত বিরোধী এবং চীন ঘেঁষা। সেখানে ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনে ভারত ও মস্কো ঘেঁষা আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করলে সোভি। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসাতে তৎপর হন। তাতে পাকিস্তান এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে সম্পর্ক পাবে। দ্বিতীয়ত, সমাজতান্ত্রিক দেশ হওয়া সত্ত্বেও সোভিয়েত এবং চীনের মধ্যে চরম বৈরিতা বিরাজমান ছিল। অবঃ এমন ছিল যে, কোনো দেশ সোভিয়েত ইউনিয়নের মিত্র হলে সে দেশটি চীনের শত্রুতে পরিণত হবে। আর এ কার পাকিস্তান চীনের ঘনিষ্ঠ মিত্র হওয়া সোভিয়েত ইউনিয়ন বাংলাদেশের মিত্র হয়েছে। তবে একথা সত্য যে, ঐ স সোভিয়েত ইউনিয়নের সহযোগিতা না পেলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন হয়তো আরও পিছিয়ে যেত।
সম্পর্কিত প্রশ্ন সমূহ

